(১৭০০ সালে বিশ্বের নানান সাম্রাজ্য)
যদিও কলি যুগ বা জেহাদের যুক্তি ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গীতে আমাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয় কেন আওরঙ্গজেব কয়েকটি মন্দির ধ্বংস করে অধিকাংশই ছেড়ে রেখে দিয়েছিলেন অবিকৃত অবস্থায়। এই যুক্তিতে অন্যান্য নানান ধার্মিক যুক্তি পেশ করা হয়। বিশেষ করে মাসির... সূত্রে জানতে পারছি, in Thatta, Multan, and especially at Benares, deviant Brahmins were teaching false books at their established schools. Curious seekers—Hindu and Muslim alike—traveled great distances to gain depraved knowledge from them। এই যুক্তিই হয়ত কেশব দেব মন্দিরের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
প্রজন্মের পর প্রজন্মের মুসলমান সম্রাটেরা বিশেষ ধরণের ধার্মিক আচার নিষিদ্ধ করেছিলেন বিশেষ করে অমার্জিত ব্রাহ্মণদের নানান আচার আচরণ। মুঘলদের চোখে রাস্তায় রাস্তায় অমার্জিত অবস্থায় ঘুরে বেড়ানো সন্ন্যাসীরা ঠিক অভিজাত, সংস্কৃত নয়। আকবর মনে করতেন ব্রাহ্মণেরা নিচুর শ্রেণীর মানুষদের কাছে সংস্কৃত শাস্ত্রের ভুল ব্যাখায় নিয়ে তাদের বিপথে যাচ্ছে তাই তিনি সংস্কৃত ভাষার নানান পাঠ্যকে ফারসি ভাষায় অনুবাদ করানো শুরু করেন যাতে দাম্ভিক হিন্দুগুরুরা তাদের মাথা মোড়ানোর কাজটা সহজে করতে না পারেন।
প্রখ্যাত পূর্বজর মত আওরঙ্গজেবও মনে করতেন অভিজাত হিন্দুরা সাধারণ হিন্দুদের তাদের হিন্দু ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এবং তিনি ব্যথিত হয়ে লক্ষ্য করছেন তার সাম্রাজ্যের সাধারণ মুসলমান প্রজারাও এই বাগাড়ম্বর ভণ্ডদের মুগ্ধ শিকার হয়। ব্রাহ্মণেরা এই সব মানুষদের দুয়ে ধনী হয়। ফরাসি মুসাফির Jean de Thevenot মনে করতেন বেনারসে বিপুল সংখ্যায় ব্রাহ্মণেরা আছেন এবং বিপুল বিশাল উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজন করে ধনরত্ন সঞ্চয় করে। এইসব অবস্থায় মুঘল অভিজাতরা চাইত রাষ্ট্র কড়া হাতে এই সব ‘লুঠ’এর কাজ বন্ধ করে তাদের প্রজাদের রক্ষা করতে করা পদক্ষেপ গ্রহন করুক। বেনারসের বহু মন্দির নিয়ে নানান ধরণের অভিযোগ ওঠায় আওরঙ্গজেব তার আমলাদের এই সব সন্দেহজনক কাজকর্ম তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন(ধ্বংস করতে নির্দেশ দেন নি - অনুবাদক)। কিন্তু কিছু মন্দিরের যেমন বিশ্বনাথ বা কেশব দেব মন্দিরের ক্ষেত্রে তিনি ভেঙ্গে ফেলাকে যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেছেন।
---
যে সব মন্দির তিনি টার্গেট করেছিলেন তার অধিকাংশই উত্তর ভারতে। হাতেগোণা কয়েকটি উদাহরণ বাদ দিলে আওরঙ্গজেব দক্ষিণ ভারতের কোন মন্দিরেই হাত দ্যান নি, যেখানে তিনি তার জীবনের শেষ তিন দশক বিপুল বিশাল মুঘল বাহিনী নিয়ে বিপুল এলাকা দখলের কাজে নেমেছিলেন। মধ্য এবং দক্ষিণ ভারতে প্রচুর মন্দির ধ্বংস হবার জন্যে অপেক্ষা করছিল, কিন্তু তিনি দাক্ষিণাত্যে মুঘলেরা বিপুল সৈন্যবাহিনী নিয়ে দুর্গ এবং অন্যান্য সামরিকিভাবে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও তারা নতুন এলাকা দখল করবে বলে হয়ত মন্দিরগুলোকে টার্গেট করেন নি।
---
যে সব মন্দির তিনি টার্গেট করেছিলেন তার অধিকাংশই উত্তর ভারতে। হাতেগোণা কয়েকটি উদাহরণ বাদ দিলে আওরঙ্গজেব দক্ষিণ ভারতের কোন মন্দিরেই হাত দ্যান নি, যেখানে তিনি তার জীবনের শেষ তিন দশক বিপুল বিশাল মুঘল বাহিনী নিয়ে বিপুল এলাকা দখলের কাজে নেমেছিলেন। মধ্য এবং দক্ষিণ ভারতে প্রচুর মন্দির ধ্বংস হবার জন্যে অপেক্ষা করছিল, কিন্তু তিনি দাক্ষিণাত্যে মুঘলেরা বিপুল সৈন্যবাহিনী নিয়ে দুর্গ এবং অন্যান্য সামরিকিভাবে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও তারা নতুন এলাকা দখল করবে বলে হয়ত মন্দিরগুলোকে টার্গেট করেন নি।
দক্ষিণ ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তারে বিপুল বাধার সম্মুখীন হলেও তিনি সেই কাজ সাধিত করতে অন্য উপায় অবলুম্বন করেছেন। তার পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করে আমাদের মনে হয়েছে তিনি এবং তাঁর আমলারা মনে করতেন মন্দির ধ্বংস করা, কোন এলাকা দখল করার সর্বশেষ পদক্ষেপ এবং তিনি এটা নির্বিচারে গ্রহণ করেন নি।
No comments:
Post a Comment