Showing posts with label শাহ জাহান. Show all posts
Showing posts with label শাহ জাহান. Show all posts

Friday, April 3, 2020

লাহোরে নূর জাহানের সমাধি

দুবছর আগে অড্রে ট্রুস্কের টুইটারে লাহোরে নূর জাহানের সমাধি সংস্কারের ছবি।। দূরে দুটো সুপুরি গাছের বর্ণনা তাঁর সমাধি দেওয়ার সময়ের।
জাহাঙ্গিরের মৃত্যুর পর লাডলি ওরফে মেহেরুন্নিসার(মায়ের রাজ্ঞী হওয়ার পূর্বের নাম) স্বামী, জাহাঙ্গির পুত্র শহরিয়ার, ড্যানিয়েল এবং অন্যান্যদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এর পরে দুই বিধবা মা এবং মেয়ে, লাহোরে থাকতে শুরু করেন। মায়ের মৃতুর পর জাহাঙ্গিরের সমাধির পাশে নুরজাহান শায়িত হন। লাডলি বা মেহেরুন্নিসারও সমাধি এখানেই হয়। এলিসন ফিণ্ডলি নুরজাহানের জীবনীতে লিখেছেন With Shahryar and Jahangir passing on at the same time, mother and daughter were, ironically, to live out their long years of widowhood together in Lahore. They were buried side by side in a tomb of Nur Jahan's own design in a garden across the river from the main city.

জাহাঙ্গিরের দরবারে নুরজাহান বাবা ভাইকে নিয়ে ক্ষমতা কেন্দ্র তৈরি করেছিলেন?

ঐতিহাসিক বেণী প্রসাদের এই তত্ত্ব খারিজ করছেন নুরুল হাসান
(ছবিতে নূর জাহান, পিতা দেওয়ান গিয়াস বেগ, ভাই উনির আসফ খান)
বেণী প্রসাদ হিস্ট্রি অব জাহাঙ্গিরে ব্রিটিশ দূত টমাস রো'র তথ্য অবলম্বন করে নূর জাহানের নেতৃত্বে শাহজাহানের রাজদরবারে পারিবারিক ক্ষমতাকেন্দ্র তৈরির তত্ত্ব আনেন। সাম্রাজ্ঞী নুরজাহান, দেওয়ান বাবা ইতিমদৌলা গিয়াস বেগ, ভাই উজির আসফ খান এবং শাহজাদা খুরম মিলে খুবই শক্তিশালী পারিবারিক জোট তৈরি করেন। একেই বেণী প্রসাদ জুন্টা আখ্যা দিচ্ছেন। এরা মহবত খানের মত প্রবীন অভিজাতদের উত্থান রুখে দেন, এদের অঙ্গুলি হেলনে খানইআজম গ্রেফতার হন, খুরমের উত্থান ঘটে, পারভেজের পতন ঘটে, খসরুর ভাগ্য ওঠানামা করতে থাকে।
বেণী প্রসাদের মতে ১৬১৬ থেকে নূর জাহান এবং জাহাঙ্গিরের সম্পর্ক বিষিয়ে যেতে থাকে। মুতামদ খান পাদশাকে এই বিষয়ে অভিযোগ করতে থাকেন। নুরজাহানের দলের অভিজাতরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গির দখল করে নেন। ইকবালনামাইজাহাঙ্গিরি আহবলইশাহজাদাগি শাহজাহান পাদশা নামক দুটি সূত্র নূর জাহানের ক্ষমতা কেন্দ্রিকতার বিরোধিতা করেছে। কামগর হুসেনের মাসিরইজাহাঙ্গিরিতেও একই অভিযোগ করা হয়েছে। বেণী প্রসাদ আরও বহু তথ্য তার সপক্ষে উপস্থিত করে বলেন জুন্টার পতন ঘটে ইতিমদৌলার মৃত্যু আর শাহজাহানের বিদ্রোহে।
--
জুন্টা তত্ত্বের বিরোধিতা করেন নুরুল হাসান মশাই। তিনি THE THEORY OF THE NUR JAHAN 'JUNTA'—A CRITICAL EXAMINATION প্রবন্ধের উপসংহারে লিখছেন The above review suggests the inadequacy of the ' junta ' theory, for it provides an over-simplified picture of an otherwise complex situation. The assumption that between 1611 and 1620, Nur Jahan, I'timad-ud-Daula, Asaf Khan and Shah Jahan formed a single faction, does not conform to facts. During this period, there is little evidence to suggest that Nur Jahan was playing an active political rôle. Her independent political rôle starts with the decline in the health of Jahangir and the death of I'timad-ud-Daula।
---
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি আবু জার মোঃ আককাস মশাইকে। তিনি ইতিহাসবিদ নুরুল হাসানের প্রবন্ধটি জোগাড় করে দিয়েছেন।

খুব ইন্টারেস্টিং তত্ত্ব দিচ্ছেন নুরুল হাসান

The historians of Shah Jahan's reign were faced with a political dilemma: If they justified Shah Jahan's rebellion, they would be supporting a dangerous political theory (Cf. Aurangazeb's taunt to Shah Jahan in 1658, Adab-i-Alamgiri ) ; if however they were to condemn the rebellion, it would be a slur on imperial dignity. Shah Jahan's rebellion was therefore represented not as a revolt against Jahangir, but as an act of loyalty to him to free him from the undesirable and selfish influence of Nur Jahan.

Sunday, January 28, 2018

মুঘল দরবারের মুন্সি৪ - চন্দ্র ভান ব্রাহ্মণ - উপনিবেশপূর্ব ইতিহাসকে কেন নতুন ভাষ্যে লিখতে হবে

চন্দ্র ভানের মত প্রায় কোন আমলার জীবনই চারজন সম্রাটের সময়ের প্রশাসন, সমাজ পরিবর্তন, যুদ্ধবিগ্রহ বা অর্থনীতির বদল দেখার অভিজ্ঞতা হয় নি। চন্দ্র ভানের জীবন ও কর্ম আলোচনা মুঘল আমলের এক বিশাল সময় জুড়ে বৌদ্ধিক পরিবেশ বোঝার সুযোগ। আকবরের শেষ সময় এবং জাহাঙ্গীরের(১৬০৫-১৬২৭) সিংহাসনে আরোহণের সময় চন্দ্র ভানের পরিবার লাহোরে ছিল। তা সত্ত্বেও আমরা জানতে পারি না তাঁর পিতার পৃষ্ঠপোষক কে ছিলেন, কিন্তু তাঁর ভায়ের(দাদা?) সঙ্গে যুক্ত মানুষদের কথা তিনি বিপুল সম্মান দিয়ে আলোচনা করেছেন।

আকিল খাঁ তাঁর দাদার কর্মদাতা ছিলেন। তিনি কর্মউপলক্ষ্যে আফগানিস্তানে গিয়ে হঠাতই মারা যান ১৬৪৯ খ্রি। চন্দ্র ভান লিখছেন, When that Khan, still in the prime of youth and success, hastened from this impermanent world and transient way station to the eternal province [i.e., died], within days [my brother] Uday Bhan lifted a goblet of love from the tavern of truth and turned to the bliss of eternal intoxication. At present he is a complete stranger to the ways of worldly people।

জাহাঙ্গীরের রাজত্বের একটা বড় সময় মুঘল প্রশাসনে কাজ করা আকিল খাঁয়ের সঙ্গেও চন্দ্র ভানের পত্র বন্ধুত্ব ছিল। বেভারিজের অনুবাদে ১৫০০ থেকে ১৭৮০ পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের আমলাদের জীবনী মাসিরঅলউমারা সূত্রে জানতে পারছি আকিল খাঁ পদ্য আর হিসেব শাস্ত্রে দক্ষ ছিলেন(আজ নজম ওয়া সিয়াক বাহরা-ওয়ার বুদ)। কিছু সময়ের জন্য তিনি আরজমুকরর (editor of royal petitions), পদে থাকলেও চন্দ্র ভানের মত মুন্সি হিসেবেই তাঁর প্রসিদ্ধি।

আকিল খাঁ দরবারের বিখ্যাত অভিজাতদের সঙ্গে তুলনীয় হতেন না। তিনি পারস্যের একটি অভিজাত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন এবং গোটা পরিবার মুঘল দরবারে অভিবাসিত হয়। তিনি ১৬৪৭ সালে সাম্রাজ্ঞী জাহান আরার হারেমের মুহরদার (পাঞ্জাধারক) শিক্ষিকা, জাহাঙ্গীরের এক সময়ের কবি তালিব আমুলদির বোন বিদুষী সতী অলনিসা খানুমের কন্যাকে বিবাহ করেন। তাঁর পিতা আবদ অল হক শিরাজী(পরে আমানত খাঁ উপাধিতে ভূষিত হবেন) ভারতে এসে মুঘল রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তাঁর প্রখ্যাতি শিল্পরূপেরলিপিবিদ(calligrapher) হিসেবে। তার প্রথমদিককার কাজ ছিল ১৬১৩ সালে শেষ হওয়া সেকেন্দ্রায়(আগরা) আকবরের সমাধিতে লিপি খোদাই(হয়ত কিছু কবিতা তাঁরই লেখা) এবং আগরার মাদ্রাসা শাহীর (সম্রাটীয় মহাবিদ্যালয়) মসজিদের গায়ের লিপির কাজগুলি করা।তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে তাজমহলের এবং তার আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপত্যে কোরাণ এবং সাহিত্যিক লিপির পরিকল্পনার জন্যে। বলা দরকার আকিল খাঁয়ের পিতা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণতম ঐতিহাসিক স্থাপত্যের দেওয়ালে আক্ষরিকভাবে তার আঁচড় কেটে গিয়েছেন।

তবে পরিবারের প্রখ্যাততম সদস্য কিন্তু আমানত খাঁ নন, ভাই(আকিল খাঁএর কাকা) মির্জা শুকুর আলি শিরাজি, মুঘল সাম্রাজ্যে যিনি আফজল খাঁ (আকবরের আমলে প্রযুক্তিবিদ ফাতাউল্লা শিরাজির শিষ্য - ফাতাউল্লার কৃতি নিয়ে কয়েক দিন আগেই ফেবুতে লিখেছি, শিষ্য হিসেবে আফজল খাঁএর নামোল্লেখ আছে) উপাধিতে বিখ্যাত হন। ১৬০৮ সালে ভারতে এসে আফজল খাঁ, বুরহানপুরের মুঘল ব্যক্তিত্ব আবদ অলরহিম খানই খানানের কাছে কাজ করেন। সে সময়ের দাক্ষিণাত্যে নবাব কাজ করা শাহ জাহানের পার্শ্বচর হিসেবে যোগ দেন।

আফজল খাঁ সম্বন্ধে আল্লামি উপাধিধারী মন্ত্রী আবুল ফজল সুখ্যাতি করেছেন। জ্ঞানে, নিজের সময়ে তিনি প্লেটো বা এরিস্টটলের সঙ্গে তুলনীয় ছিলেন। ক্রমশ তিনি নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসক এবং রাজনৈতিক দৌত্যে যোগ্য করে তোলেনে। ১৬২০ সাল নাগাদ শাহ জাহানের ঘনিষ্ঠতম পরামর্শদাতাদের মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠেন।

যদিও তাঁর খ্যাতি প্রশাসক রূপে কিন্তু আবদ অল বাকি নহাওয়ান্দি, মসিরইরাহিমিতে আফজল খাঁকে উলেমা এবং ফুজালা হিসেবে বর্ণনা করছেন। সেই সময়ের আরেক লেখক মহম্মদ সাদিক হামাদানি, তবাকতই শাহজাহানিতেও আফজল খাঁকে উলামা ওয়া হুকুমা ওয়া ফুজালা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।