এনকাউন্টারিং ডেভেলাপমেন্টঃ দ্য মেকিং এন্ড আন্মেকিং অব দ্য
থার্ড ওয়ার্লডঃ আর্তুরো এসকোবারএর বই থেকে
দ্বিতীয় অধ্যায়
এই শর্তগুলির বাস্তবিকতা কোন জ্ঞানের সংগঠনে
মিলিত হয় না বরং অর্থনীতিক, রাজনীতিক এবং সব ধরণের উন্নয়নের বিশেষজ্ঞদের
যুক্তিসঙ্গত প্রতর্কে যে পরিবাহিত হয়, এটা এতক্ষণে পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা।
প্রতর্ক হিসেবে উন্নয়ন একটি অতিবাস্তব ঐতিহাসিক সৃজন, যা বিবৃত হয় অনুন্নয়ন নামক
একটি শর্তাধীন অবাস্তব নির্মানের ওপর ভিত্তি করে। এটা আমাদের মন দিয়ে বুঝতে হবে
যদি আমরা উন্নয়নের প্রতর্ককে বুঝতে এবং তাকে উচ্ছেদ করতে চাই।
এখানে যে অর্থনৈতিক শোষণ চলছে তাকে বুঝতে এবং
মোকাবিলা করতে হবে। উন্নাসিক ক্ষমতাকে দিয়ে এই কাজ হবে না, যদিও তাকেও মোকাবিলা
করতে হবে। জীবনের নানান কঠোর বাস্তবতা আমাদের আচ্ছন্ন করে এবং সেগুলোয় আমাদের নজরও
দিতে হবে। কিন্তু যারা তৃতীয় বিশ্বকে উন্নয়নের চশমায় দীর্ঘদিন ধরে দেখতে চেয়েছেন তারা
বাস্তবতার আকাশে বিপুল বিশাল প্রাসাদ বানিয়েছেন এবং দেখার ভঙ্গীটাই হারিয়ে
ফেলেছেন। পশ্চিমি জ্ঞানের আঙ্গিকগুলি এবং
ক্ষমতা তৃতীয়বিশ্বে যে বিপুল বিনিয়োগ করেছে তাদের ধারনাগুলি প্রথিত করতে, তাকে
আমাদের বাস্তবিকভাবে অন্য দৃষ্টিতে এবঙ অন্য চরিত্র হিসেবে দেখতে হবে।
উন্নয়নকে নিয়ে বিপুল কর্তৃত্বশালীভাবে আক্রমণ
চালিয়ে বলেছে যে গরীবি আর উনুন্নয়ন বিশ্বজনীন ও পূর্বনির্ধারিত বিষয় যা
প্রতিনিধিত্বের বিশেষাধিকারের ওপর নির্ভরশীল; এই চাপিয়ে দেওয়া কর্তৃত্ববাদের জন্যই
তৃতীয়বিশ্বের ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করা গিয়েছে(যার মধ্যে রয়েছে তৃতীয়বিশ্বের প্রত্যেকটি
সমাজের মানুষকে – মেক্সিকোর বস্তির আধিবাসী, নেপালি চাষী আর তুয়ারেং যাযাবর একইভাবে
গরীব এবং অনুন্নত, একই দাগে দাগিয়ে দেওয়ার স্পর্ধাও); এবং তৃতীয় বিশ্বকে উপনিবেশ
বানিয়ে তার পরিবেশ ও মানুষের ওপর কর্তৃত্ব চাপানোর ক্ষমতা সে অর্জন করেছে।
উন্নয়ন একটা উদ্দেশ্যবাদী(teleology) চিন্তা যা শেষ
পর্যন্ত মনে করে দেশিয়(natives) অইওরোপিয়রা কখোনো না কখোনো রূপান্তরিত হবেই;
এর সঙ্গে সঙ্গে সে অগণিত স্বরে এবং নানান পদ্ধতি অনুসরণ করে কারা সংস্কারক আর কারা
সংস্কৃত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে সে কথা বলে চলে, এবং বলে চলে যে তৃতীয় বিশ্ব আলাদা
এবং হীন, প্রমিত ইরোপিয়দের তুলনায় তৃতীয় বিশ্ব মানবিকতা শূন্য। উন্নয়ন নির্ভর করে
নানান অস্বীকৃতি আর হীনমন্যতার রাজনীতির স্বীকৃতির ওপরে, ভাবা বলেছিলেন এই নানান
বৈষম্য গায়ে নিয়েই তৃতীয় বিশ্ব বেড়ে ওঠে। ‘দারিদ্র’, ‘অশিক্ষা’, ‘ক্ষুধা’ এবং আরও
নানান কিছু শব্দ অনুন্নয়নের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে, যা আজ পৃথক করা অসম্ভবপ্রায়।
জ্ঞানচর্চার মধ্যে একমাত্র অর্থনীতিই অনুন্নয়নের সঙ্গে চিরতরে দারিদ্রকে জুড়ে
দিয়েছে, যেটা অন্য কোন চর্চা করতে পারে নি। তাদের জন্য আমি আমার পরের অধ্যায়গুলি
উতসর্গ করছি।
(দ্বিতীয় অধ্যায় শেষ)
No comments:
Post a Comment