সোরা উৎপাদন এবং
ব্যবসাকেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম দুটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল ছাপরা আর
সিঙ্গিয়া। ১৭২০, ১৭৩০ সালের ইওরোপিয় কোম্পানিগুলির সঙ্গে সোরা চুক্তির উৎপাদনে
ছাপরা কিছুটা এগিয়েছিল। ডাচেদের ৩১৪০০ মনের দোবারা-কাবেসার চরিত্রের সোরার মধ্যে
ছাপড়ার অংশিদারি ছিল ১৩৪০০ মন আর সিঙ্গিয়া ১২৭০০ আর মাউ ৫৩০০ মন। ব্রিটিশদের সঙ্গে
১৭৩২ সালে চুক্তি ছিল ১৮৫৮০ মন ছাপড়ার। কিন্তু ১৭৫০এর প্রথম পাদে ছাপরার থেকে বেশি
সোরা সরবরাহ করত সিঙ্গিয়া। ডাচেরা ১৭৫১য় পাটনা থেকে যে ৩০০০০ মন কিনেছে, তারমধ্যে
সিঙ্গিয়ার অংশিদারি ছিল ১৪০০০ মন ছাপরার ১২০০০ মন আর মাউএর ৪০০০ মন।
এখানে উল্লেখ্য
সোরা ব্যবসায় বেশ কিছু মুসলমান ব্যসায়ীর নাম পাওয়া যাচ্ছে যারা সুতি আর রেশমের
ব্যবসায় অন্তত ইওরোপিয়দের খাতায় ছিল না। অসমিয়া ব্যাপারীদের মধ্যে বড় অংশ সিঙ্গিয়া
আর মাউতে ছিল, ছাপরায় কম। ১৭৩০এর ডাচ চুক্তি অনুসারে ৯ জন ব্যাপারীর মধ্যে
সিঙ্গিয়াতে ১ জন মুসলমান, মাউএর ১০ অসমিয়া ব্যাপারীর ক্ষেত্রে ৩ জন মুসলমান। ১৭২০
সালে ব্রিটিশদের ২২ জন ব্যবসায়ীকে বরাত দেওয়া ৩৪৪৩৪ মন সোরার মধ্যে ৬ জন মুসলমান
ছিল। কোম্পানির খাতায় এদের অনেকেই খুব ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী ছিল। পাটনার ব্রিটিশ
কুঠিয়াল হিউ বারকার, বার বার লবণ ব্যবসায়ী, মীর ইশাকুল্লার ব্যবসা আর দরবারে যোগাযোগের
কথা উল্লেখ করেছেন the
most considerable merchant in the
city and of great weight in the durbar'।
কোম্পানিরা
বুঝেছিল শস্তায় সোরা কেনার একটাই রাস্তা, পাটনায় সেটি কিনে কলকাতা বা হুগলিতে পাঠানো।
যদিও সারা বছরের জন্য কিছু না কিছু সোরা হুগলিতে মজুদ রাখা হত, কিন্তু যে বিশাল
জাহাজের বহর সারা বছর ইওরোপে যেত তার জন্য সে পরিমান যথেষ্ট ছিল না। বিপুল পরিমান
সোরা কেনার জন্য অসমিয়া ব্যবসায়ীদের দাদন দিতে হত। ১৭৩০ সালে অস্টেন্ড কোম্পানির
প্রধান আলেকজান্ডার হিউম লিখছেন, সোরা যদি আগে থেকে বরাত দেওয়া না হত, তাহলে ইওরোপিয় জাহাজগুলিকে অন্যান্য
পণ্য ভরে নিয়েও বাংলার উপকূলে সোরা না আসা অবদি দাঁড়িয়ে থাকতে হত। ফলে সোরা কেনার
জন্য দুই প্রধান ইওরোপিয় কোম্পানি, ব্রিটিশ আর ডাচেদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা
চলত। ফলে বহু সময় পণ্যের দাম বেড়েও যেত।
১৭২৫ সালে ছাপরার
ডাচ আর ব্রিটিশ কোম্পানিকে সরা সরবরাহ করা অসমিয়া ব্যবসায়ীরা নিজেরা একটা কোম্পানি
তৈরি করে, যার উদ্দেশ্য দাম ঠিক রাখা আর নিজেদের মধ্যে দামের প্রতিযোগিতায় না নামা।
যদিও হিউ বার্কার বলছে, confederacy was
formed by the assomies among themselves এবং তা অসমিয়া ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে, যে ঘটনায় তার হাত নেই, কিন্তু এটা
পরিষ্কার, ডাচ আর ব্রিটিশদের প্ররোচনায় পাটনায় দেশি ব্যবসায়ীদের কোম্পানি গড়ে
উঠেছিল।
১৬৮০তে বাংলায় যে
কাজ করতে কোম্পানি ব্যর্থ হয়েছিল, এবং করমণ্ডলে যে কাজটি যে সফলভাবে করেছিল, সেই
কাজ, অর্থাৎ ব্যাপারীদের(এখানে সোরা) কোম্পানি করে দেওয়ার কাজে সমর্থ হল ব্রিটিশ।
আমরা ১৭২৫ সালে ছাপরার অসমিয়া ব্যবসায়ীদের একটি গোষ্ঠী হিসেবে জড়ো হওয়ার যে
শর্তগুলি তৈরি করে সেগুলি মন দিয়ে পড়ি - We fourteen assomies of the English
Company ... do agree to unite
ourselves for the joint purchasing of saltpetre, to divide
what quantity shall be procured and each person to pay
in such summes of money as shall become due from him in
proportion to his Dividend of saltpetre. If any person of the
confederacy shall have a dispute with the Dutch or their assomies,
the expense of it shall be paid out of the Joint Stock and
all the saltpetre provided shall be on the general account. Whatever
have been bought of saltpetre since November last shall
be brought into the confederacy al1d if any person shall pay
in more money to the stock than his proportion, he shall be
allowed for it 2 percent interest.।
এই ব্যবসায়ীরা
নিজেদের কোম্পানি হিসেবে সংগঠিত করছে, এই ঘটনাটা আমাদের আলোচ্য সময়ের খুব
গুরুত্বপূর্ন একটা, কারণ ১৬৮০ সালেই পাটনা কুঠিয়াল এই ধরণের সংগঠন গড়ে তোলার কজে
উদ্যমী হয়েছিল We
much doubt of bringing our old
or new petremen to it, we knowing by experience,
they are unwilling to trust their own brothers, much less
to be securities for one another whitch makes us fear, the abler sort
will not be brought to ,it।
ব্রিটিশেরা মনে
করছিল অসমিয়া ব্যবসায়ীদের যৌথ অংশিদারি সংগঠন গড়ে তুললে ডাচেদের সোরা কেনার
চাহিদার বিরুদ্ধে পাঁচিল তোলা যাবে। ১৭২৮ সালে কোর্ট উইলিয়াম কাউন্সিল পাটনাকে
বেশি করে সোরা কেনার কাজ থেকে সরে আসতে বলে কেননা ইওরপে সোরার বাজারে মন্দা চলছে। তখন
পাটনার কুঠিয়াল লেখে যে at
present their assomies and those
belonging to the Dutch are formed into a Company, এবং এই মুহূর্তে
যদি অসমিয়াদের কাজে লাগানো না যায়, তাহলে, the Dutch would readily embrace such an
advantage and secure it as
their orders for petre yearly are unlimited'। তারা আরও লেখে
অসমিয়াদের থেকে সোরা না কিনলে বিপুল পরিমান সোরা যেমন পাওয়া যাবে না, তেমনি দামেও
পোষাবে না। আপাতত তারা অসমিয়া ব্যবসায়ীদের থেকে ১০হাজার মন সোরা কিনছে, যাতে
ভবিষ্যতে চাইলেই বেশি সোরা কেনা যায়। ১৭৩১ সালেই ফোর্ট উইলিয়াম কাউন্সিল পাটনা
কাউন্সিলকে ৪০০০০ মণ কিনতে বলে। কিন্তু ততদিনে কোম্পানি ভেঙ্গে গেছে।
No comments:
Post a Comment