৯.২এর তালিকায়
বিশদে বলা হয়েছে ক্রেতাদের অংশিদারির বর্ননা।
Taillefert এর Memorie বলছে সব থেকে ভাল আফিম উৎপাদন হত আরা, পাটনা, সারণ আর
মুঙ্গেরে। অক্টোবর নভেম্বরে বীজ পোঁতা হত, ভাল চাষ হলে প্রত্যেক বিঘায় ১১ থেকে ১২
পাউন্ড আফিম গাছ উৎপন্ন হত যার থ্যেকে ২-৩টে কেক তৈরি হত। তার মতে ভাগলপুর আর
পুর্নিয়ায় যা উৎপাদন হয় তার গুণমানে উচ্চ নয়, বিহার আফিমের সঙ্গে তার তুলনা চলতে
পারে না। Sichtermann তার পরের ডিরেক্টরকে নির্দেশ দিয়ে বলছে ভাগলপুরের আর
পুর্নিয়ার আফিম না কিনতে। ১৭৬৩র মেমোয়ারে Taillefert আফিমের আরও চরিত্র বিভাগ করছে। তার মতে সব থেকে ভাল বিহার আফিম উৎপাদন হত
বিহার, জেহানাবাদ, ফুতোয়ারি, কাশমার এলাকায় আর মোগরা, বারবিঘা, সারণ এবং মুঙ্গেরে যা
উৎপাদন হত তার গুনমান বিহার আফিমের মত নয়।
ডাচেরা যদিও মূল ক্রেতা ছিল, তাহলেও ডাচেদের
পক্ষে সরবরাহের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল ছিল। পাটনার আফিমের দাম বাড়তে থাকে
স্থানীয় আর ইওরোপিয় ব্যবসায়ীদের প্রবেশে। বাংলার বড় ব্যবসায়ী, বিশেষ করে যাদের
শেকড় বিহারেরর বাজারে ছিল তারা চেষ্টা করত বাজারে একচেটিয়া পকড় বাড়াতে। ১৭৩১ সালে
ব্রিটিশ কোম্পানি সূত্রে জানতে পারছি যে, কলকাতার ব্যবসায়ী উমিচাঁদ, রংপুরের
ফৌজদারকে প্রভাবিত করে এই ব্যবসায় একচেটিয়া পকড় বাড়াবার চেষ্টা করছে। ১৭৪০এর দশকের
পরে হুগলির আরমেনিয় বণিক খ্বজা ওয়াজিদ বিহারের আফিম ব্যবসা দখল করে নেয়। এর আগে
আমরা বলেছি ১৭৫০এর পরে খ্বাজা বিহারের সোরা ব্যবসা দখল করেছিল, তার এক দশক আগে সে
তার বিহারে ব্যবসা করা ভাই খ্বাজা আসরফের মাধ্যমে বিহারের আফিম ব্যবসা দখল করে। ১৭৫০
সালে ডাচ ডায়রেক্টর Huijghens বলছেন, বিহারের প্রশাসনকে ১০০০ টাকা উপঢৌকন দেওয়ার পর ১১৫টাকা মন হিসেবে
কোম্পানি ১৪৭৯ মন কিনতে পেরেছিল। এবং খ্বাজা আগের বছর ডিসেম্বরে চাষীদের দাদন দিয়ে
রাখলেও, প্রশাসন তাকে বিহারের সমস্ত আফিম কিনতে বাধা দিয়েছিল। ওয়াজিদ পাটনা প্রশাসনের
এই সিদ্ধান্তে অখুশি হয় কেননা সে প্রশাসনকে জানায় যে সে ২৫০০০টাকা দাদন দিয়ে
রেখেছে।
ডাচেদের আফিম কেনার সমস্যা হল হাতে যথেষ্ট পরিমান
কাঁচা টাকা না থাকা। Huijghens তার
মেমোরিতে বলছেন পাটনা আফিম বাজারের প্রতিযোগিতা এই বেশি ছিল যে, ধারে বাজার থেকে
আফিম কেনা সম্ভব ছিল না। কখোনো কখোনো কোম্পানির পক্ষে অবস্থা সঙ্গীন হয়ে যেত। ১৭৫০
সালের ১ জানুয়ারিতে ডাচেদের ৯০০ মন পেত, কিন্তু জন্য হাতে গরম নদগ অর্থ দিতে হত। যদিও কোমপানি আমলারা হুগলী থেকে ২ লক্ষ টাকা বিল
এক্সচেঞ্জ করতে পারত, কিন্তু তারা ২০ হাজার টাকাও জোগাড় করতে পারল না। তাই কোমপানি
১ লক্ষ টাকার জমায় জগতশেঠের গদি থেকে ৩.২৫ শতাংশ সুদে ২৫০০০ টাকা নগদ চাইল। ডাচেরা
সাধারণত আফিম কিনতে পাইকারদের দাদন দিত। কিন্তু Sichtermann ১৭৪৪ সালে বলছেন, পাইকারেরা
ব্যাঙ্করাপ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকায় এই প্রথা থেকে কোম্পানি সরে আসে, এবং পাইকারেরাও
আফিম ভেজা অবস্থাতেই সরবরাহ করার প্রবণতা ছিল ডাচেদের। কোম্পানিকে সেটিকে আলাদা
করে শোকাতে হত। এরপর থেকে মনে হয় ডাচেরা নগদ অর্থ দিয়ে খলা বাজার থেকে আফিম কিনত।
No comments:
Post a Comment