বাংলার প্রসেনিয়াম থিয়েটার সময়কে ধরার প্রচেষ্টায় গুণেগুণে দশগোল খাবে দিনাজপুরের খন গান পালার কাছে। মানুষের জীবনে নিত্যনতুন বিষয় অসাধারণ আঙ্গিকে নিয়মিত উপস্থাপন করে থাকেন দুই দিনাজপুর জেলার খন গানের দলগুলি।
সঙ্গের ছবিগুলিতে ছুক্রি হালুয়ানির অভিনয়ে শঙ্কর স্রেফ অনবদ্য! শঙ্করের লাস্য, শঙ্করের অভিনয় প্রতিভা, তার সমাজ, ছুকরিকে গ্রাম বাংলা কিভাবে দেখে আর শহরই বা কিভাবে দেখে, সে সব নিয়ে একটা লেখা পড়তে পারেন আমাদের ব্লগে এই সূত্রে http://lokfolk.blogspot.in/search/label/%E0%A6%B6%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%B0।
দিনাজপুরের খন নিয়ে একটি অসম্পূর্ণ পুরোনো লেখা দিলাম। এখন এটি লিখলে অন্যভাবে লিখতাম।
‘দিনাজপুর জেলায় ‘খনগান’ খুবই প্রচলিত ও জনপ্রিয়।জেলার বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন লোকনাট্যের মধ্যে এই ‘খণগান’ বা খ্যেনের গান নানান কারণেই বিশেষ উল্লেখের দাবী রাখে। সাধারণতঃ পারিবারিক বা সামাজিক কোন রোমান্টিক কাহিনী, সংঘর্ষ বা প্রেমবিষয়ক কোন কেচ্ছা কাহিনীকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়ে থাকে এই ধরনের লোকনাট্য। গোপন প্রণয়, কুলত্যাগ, অসবর্ণবিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, তালাক, কেস, মামলা-মোকদ্দমা প্রভৃতি সামাজিক বিষয়কে কেন্দ্র করেই জমজমাট হয়ে ওঠে এই নাটক। সাধারণতঃ মুক্ত মঞ্চেই উপুস্থিত করা হয় কৃষি কাজের নানান উপমা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, মস্করা, তামাসা, হাসিঠাট্টা। অবহেলিতা-বঞ্চিতা-লাঞ্ছিতা ও নির্যাতিতা রমনীদের আকুলতা-ব্যাকুলতার জ্যান্ত ছবি প্রভৃতি এই জনপ্রিয় লোকনাট্যের প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়।
খন নাটকে যেমন সংলাপ আছে, তেমনই প্রতি বছরই নতুন নতুন বিষয়বস্তু নিয়ে রচিত হয় বলে নাটকের উপর মানুষের প্রচুর আগ্রহ জন্মায়। এইসব পালাগানে নারীচরিত্রে সাধারণতঃ পুরুষরাই (ছাক্রা বা ছুকরি সেজে) অভিনয় করে থাকে।
খন গানের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্চ, হেমতাবাদ, ইটাহার প্রভৃতি অঞ্চলের আশেপাশে এই লোকনাট্যের ব্যাপক প্রচলন। স্বাধীনতা পরবর্তী যুগে যেসব ‘খনগান’ অত্যধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল সেগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো ভাসুর-ভাউসান, বুধাশরী, দইফেলা সেহারী, সাইকেল সেহারী, সতী-হেলা, হ্যাজাক সেহারী, ডিপ্টিকল, লালু-সোহাগী, হালুয়ান-হালুয়ানী, চোর-চূর্ণী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
No comments:
Post a Comment