যদিও গাঁ থেকে মায়ের আঁচলের এক টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে এসে বড় পুঁজির ভাঁড়ারে জমা দেয় ব্যাঙ্ক।
মোদিবাবু যে আমাদের(গ্রামের পরম্পরার উতপাদক, চাষী, সেবা দেওয়ার মানুষ) সরাসরি কালো টাকার আড়তদার ভেবেছেন - কি তিনি খুব ভুল পথে হেঁটেছেন? পশ্চিমা অর্থনীতির পড়াশোনার বইগুলিতেও তো তাই বলা হয়েছে।
৮ তারিখের খুব কাছে কাছের সময়ে প্রভাত পট্টনায়েক যে প্রবন্ধটি লিখেছেন, সেটার ওপর থেকে মার্ক্সবাদী খোলস ঝেড়ে ফেললে দেখা যাবে মোদিবাবু যা করেছেন, তাকে তিনি ঘুরিয়ে সমর্থন করেছেন - তার বড় জোর অভিযোগ মানুষকে হয়রাণ করার - বেশি কিছু নয়। মোটামুটি নোট বাতিলের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। ডাম আর বাম এ বাবদে এক তলে দাঁড়িয়ে।
প্রশাসনের, শহরের ভদ্ররা অনেকেই ভাবেন, আমরা ছোটলোকেরা প্রত্যক্ষ কর দিই না, বাড়ির হাঁড়িতে টাকা জমিয়ে রাখি - ফলে রাষ্ট্র গড়ার পুঁজি ছোটলোকেরা সরবরাহ করে না।
তাই ভদ্ররা অভিযোগের আঙ্গুল তুলে সরকারকে প্রশ্ন করেছেন গ্রামে ব্যাঙ্ক নেই তো গরীবেরা কি ভাবে টাকা জমাবে? তাই প্রত্যেক গ্রামে ব্যাঙ্ক করে দেওয়া হোক। তারা 'নিরাপদে' টাকা রাখবে। লগে লগে তারা প্লাস্টিক কার্ডের ব্যবহার জানবে, করবে - শেষ মেশ ভদ্রদের মত শহুরে হয়ে উঠবে - ডিজিটালযোগ্য হয়ে উঠে পপ্সচিমকে স্ববা করবে।
ছোটলোক গাঁইয়ারা জানেন ব্যাঙ্ক আদতে বড় পুঁজির বড় হাতিয়ার - যেখানে মধ্যবিত্ত সন্তানেরা চাকরি করে। ভদ্রদের পৃষ্ঠপোষক কিন্তু বড় পুঁজি। রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক হলেও - তার কাজ গ্রামের মায়ের আঁচলের শেষ সঞ্চয়টুকু তুলে নিয়ে এসে বড় পুঁজির সিন্দুকে জমা করা।
গ্রামীন উদ্যমীরা তার ঘামে ভেজানো টাকা নিরাপদে তুলে রাখে রান্না ঘরের চালের হাঁড়িতে বা লক্ষ্মীর ঝাঁপিতে। সেই টাকা স্থানীয় অর্থনীতিতে খাটানোর জন্য সে আয় করে - বিদেশে বা শহরের মধ্যবিত্তের কর্পোরেট উতপাদন/শিক্ষা কেনার জন্য ঋণ দেওয়ার বা সরাসরি কর্পোরেটদের ঋণ দেওয়ার জন্য নয়।
ফলে মোদিই হোক বা অন্য রাষ্ট্র নেতা (মমতা কিছুটা আমাদের দয়ায় চক্ষে দেখেন - তিনিও সরাসরি ডিজিটাইজেশনের পক্ষে), সক্কলের কাছে আমরা কালো টাকার ধারক-বাহক।
গাঁইয়া আর শহুরে গাঁঅয়ারা সরাসরি বধ্য, না হলে বিনা প্রশ্নে উচ্ছেদযোগ্য!
No comments:
Post a Comment