এনকাউন্টারিং ডেভেলাপমেন্টঃ দ্য মেকিং এন্ড আন্মেকিং অব দ্য
থার্ড ওয়ার্লডঃ আর্তুরো এসকোবারএর বই থেকে
দ্বিতীয় অধ্যায়
এই ব্যাঙ্গার্থক প্রতর্ক প্রত্যেক স্তরে
প্রতিধ্বনিত হয়, এমনকি তৃণমূলস্তরের উন্নয়ন বিদ্যা চর্চা এবং মাঠে ঘাটের
প্রয়োগশালাতেও। আমরা জানি কিভাবে উন্নয়ন সংক্রান্ত নানান ছবি এবং ভাষ্য স্থানীয়
স্তরে প্রচারিত হয়, উদাহরণস্বরূপ, মালেশিয়ার গ্রামের শিক্ষিত গ্রামীন এবং সাধারণ
সরকারি কর্মচারীকেও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির তৈরি করে দেওয়া ভাষা শিখতে
এবং ব্যবহার করতে হয়(Ong 1987)। সবুজ বিপ্লবের মত উন্নয়নের চিত্র এবং
প্রযুক্তির সরাসরি বিরোধিতা হয়েছে তৃণমূলস্তরে আমরা দেখেছি(Taussig 1980; Fals Borda 1984; Scott 1985)। তবুও উন্নয়নের প্রতর্ককে এবং প্রয়োগবাদীতাকে নজরে রেখে স্থানীয় স্তরের
জাতবাদী সমীক্ষা সমাজের ব্যবস্থাপনা, তার কাজকর্ম, কিভাবে তারা বদলায় বা ব্যহৃত
হয়, কিভাবে গোষ্ঠী চরিত্র আর কাঠামো তৈরি করতে প্রভাব ফেলে, সব কিছুই জানার কাজ
শুরু হয়েছে।
বিশ্বে এই ধরণের সমীক্ষার কাজ প্রথম শুরু
করেছেন স্টেসি লে পিগ নেপালে। স্টেসি সেখানে উন্নয়নের প্রতর্কে ব্যবহৃত হওয়া
আরেকটি ব্যাঙ্গার্থক শব্দ ‘গ্রাম’ নিয়ে কাজ করছেন। তার উদ্দেশ্য হল, কিভাবে আধুনিকীকরণ
এবং উন্নয়নের তত্ত্ব স্থানীয়স্তরে কাজ করে, এবং তিনি আমাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে
বলেছেন, এটা ভাবলে ভুল হবে শুধু এই পদ্ধতিতে পশ্চিমী কৃষ্টি স্বীকৃতি পাচ্ছে বা অধিকার
জমিয়ে বসছে। তিনি বলছেন নেপালের কৃষ্টি আর ইতিহাসের প্রেক্ষিতে উন্নয়নের(বিকাশ)
জটিলতম পদ্ধতিতে নেপালীকরণের ধারনাটি ঘটছে। উন্নয়নের নেপালিকরণের ধারণাটি একটি
জটিল সামাজিক ব্যবস্থাপক শক্তি যা বিভিন্ন পদ্ধতিতে যেমন বাসস্থানের
শ্রেণীবিন্যাসের সামাজিক প্রগতি(গ্রাম বনাম শহর), জীবিকার চরিত্রে(পরিযায়ীতা বনাম
দপ্তরে বসে কাজ), ধর্ম(বৌদ্ধ বনাম গোঁড়া হিন্দু) এবং জাতি(মধ্য এশিয় থেকে আর্য)র
ধারনায় শক্তি অর্জন করছে। এই মাপদণ্ডে বিকাশ এক ক্ষমতা থেকে আরেক ক্ষমতায় অঙ্গীভূত
হয় এবং আধুনিকতার তাত্ত্বিক ধারণায় গ্রামীনেরা শুষে নিয়ে নিজেদের সামাজিক চরিত্রকে
বিকাশী বলে দাবি করে।
বিকাশ এইভাবে একজন গ্রামীনের চরিত্রকে পাল্টে
দেয়। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি উন্নয়নের প্রতর্কে কিভাবে একটি গ্রামের নবনর্মান করা
হচ্ছে। ‘কম উন্নত দেশ’ ব্যাঙ্গার্থ সম্বল করে উন্নয়নের প্রতর্কে একটি বর্গীভূত(generic) গ্রাম তৈরি হয়ঃ
It follows that the generic village should
be inhabited by generic villagers. . . . People in development planning “know” that villagers have
certain habits, goals, motivations and beliefs. . . . The "ignorance” of
villagers is not an absence of knowledge. Quite the contrary. It is the presence of too much
locally-instilled belief. . . . The problem, people working in development will
tell each other and a foreign visitor, is that villagers “don’t understand
things.” To speak of "people who don’t understand” is a way of identifying
people as “villagers.” As long as development aims to transform people’s thinking, the
villager must be someone who doesn’t understand. (Pigg 1992।
নেপালের উন্নয়নের কর্মীরা মোটামুটি বুঝতে পারেন
যে মনোভাব আর স্বভাব তারা গ্রামে প্রবেশ করাতে চাইছেন, তার সঙ্গে গ্রামের পরম্পরার
বিভেদ আকাশসমান; তারা জানেন, গ্রামে যে বৈচিত্র আছে তা উন্নয়নের চাহিদার বর্গীকৃত গ্রামের
থেকে অনেক বেশি এবং চরিত্রে তার বিপরীতও। তারা জানেন একটা সত্যিকারের গ্রামকে
উন্নয়নের শর্তে তৈরি করা যায় না, শেষ পর্যন্ত তারা একটা কথাই বলেন গাঁইয়ারা আমাদের
বিষয়টা বুঝলেন না। পিগ বলছেন উন্নয়নের শ্রেণীবিভাগ সাধারণভাবে গ্রামের ওপর চাপিয়ে
দেওয়া যায় না; অথচ বিকাশকর্মীরা জটিল স্তরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ান, তাদের মত করে
জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সমাজের মত করে সেগুলো বদলাবার চেষ্টা করেন। গ্রামগুলো
চিহ্নিত হয় কোন গ্রামে কতটা বিকাশ ঘটেছে (জলের নল, বিদ্যুৎ, নতুন প্রজাতির ছাগল,
স্বাস্থ্য কেন্দ্র, রাস্তা, ভিডিও, বাস থামার যায়গা); যদিও গ্রামীনেরা জানেন যে
বিকাশ গ্রামের বাইরে থেকেই আসে, তারা মনে করেন বিকাশী চান গ্রামীনেরা যেন বিকাশের
মত করে নিজেদের সাজিয়ে নেন। গ্রামীনেরা দুধরণের গ্রামীন চরিত্রের দোলাচালের মধ্যে নিজেকে
মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেনঃ একটা পারম্পরিক চলতি গ্রামীন চরিত্র, বয়স, জাতি, লিঙ্গ,
পৃষ্ঠপোষক ইত্যাদি; অন্যটা জাতীয় চরত্রের কেন্দ্র, প্রান্ত, উন্নয়নের স্তর
ইত্যাদি।
ক্রমশ বিকাশ যখন চাকরি পাওয়ার বা সামাজিক সম্পদ
পাওয়ার সুযোগ দিতে থাকে, তখন গ্রামীনেরা বিকাশের অংশ হতে চায়। অধিকাংশ গ্রামীনেরা
জানেন বিকাশের থেকে খুব বেশি কিছু দান হিসেবে পাওয়া যাবে না, কিন্তু বিকাশের কাজে চাকরি
পাওয়া যেতে পারে। পিগ মোটামুটি দেখান কিভাবে উন্নয়নের কৃষ্টি স্থানীয় স্তরের
কৃষ্টিতে চারিয়ে যায়। তিনি বলেন উন্নয়নের মোকাবিলাকে দুটি কৃষ্টির সংঘাত হিসেবে না
দেখে দুটি কৃষ্টিগত ব্যবস্থার দুটি গোষ্ঠী পরস্পরের সঙ্গে একটা পদ্ধতিতে উপনীত হয়ে
আলাপ আলোচনা ক’রে, এমনভাবে দ্যাখা দরকার। এই পদ্ধতিতে সামাজিক বিভেদ একটা নতুনভাবে
উপনীত হয়, যদিও চলতি কাঠামো(উদাহরণস্বরূপ জাতি, শ্রেণী, লিঙ্গ) অদৃশ্য হয়ে যায় না,
তাদের নতুন নাম হয়, নতুন স্তরীভবন হয়।
No comments:
Post a Comment