এনকাউন্টারিং
ডেভেলাপমেন্টঃ দ্য মেকিং এন্ড আন্মেকিং অব দ্য থার্ড ওয়ার্লডঃ আর্তুরো এসকোবারএর
বই থেকে
দ্বিতীয় অধ্যায়
উন্নয়নের প্রতর্ক
উন্নয়নের ক্ষেত্র
উন্নয়নকে একটি
আলোচনাযোগ্য প্রতর্ক হিসেবে তুলে আনার একটা শর্ত হল কয়েকটা নির্দিষ্ট বিষয় এই
প্রতর্কে আলোচিত হবে এবং কল্পনা করা হবে। সামাজিক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করতে যদি
প্রতর্ক জরুরি হয়, যদি এটা দৃশ্য এবং কহতব্যের মধ্যে জ্ঞান এবং ক্ষমতার ভাষ্য হয় –
তাহলে উন্নয়নের বিতর্ক কিভাবে ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয় এবং প্রাযুক্তিক, রাজনৈতিক এবং
অর্থনৈতিক ঘটনাবলীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বোধ করে? তাহলে কিভাবে উন্নয়ন ধারণা, তত্ত্ব
এবং প্রয়োগবিদ্যার প্রদ্ধতিগত সৃষ্টিকে ধারণ করে?
উন্নয়নের চরিত্র
খোঁজের আলোচনা ঢোকার প্রথম স্বতঃসিদ্ধটি হল এই ধারণাটা ১৯৪০ এবং ১৯৫০ সালে বিকশিত
হয়েছে। আর সংগঠিত প্রতিজ্ঞা(organizing premise) হল, যে কোন সামাজিক, কৃষ্টিগত এবং রাজনৈতিক মূল্য চুকিয়ে
আধুনিকীকরণই একমাত্র পারে অতীতের কুসংস্কার এবং সম্পর্কগুলি ধ্বংস করতে।
শিল্পোন্নয়ন এবং শহরীকরণকে দ্যাখা হল আধুনিকতায় পৌঁছনোর প্রগতিশীল পথ হিসেবে।
একমাত্র জাগতিক এবং সম্পদের উন্নয়ন সামাজিক, কৃষ্টিগত এবং রাজনৈতিক বিকাশকে
ত্বরান্বিত করতে পারে। এই তত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশ হল পুঁজি বিনিয়োগই
অর্থনৈতিক বিকাশ আর উন্নয়নের সহায়ক। বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ, পরিকাঠামো বিকাশ এবং
সমাজের সার্বিক আধুনিকীকরণের মাধ্যমেই গরীবদেশের অগ্রগতি সম্ভব। কিন্তু প্রশ্ন হল
পুঁজি আসবে কোথা থেকে? একটা স্বাভাবিক উত্তর হল দেশিয় সঞ্চয় থেকে। কিন্তু এই
দেশগুলিকে দ্যাখা হচ্ছিল এরা গরীবির চক্করে লেপ্টে রয়েছে, ফলে পুঁজির অভাব, তাই
পুঁজি আসবে বিদেশ থেকে(৩ অধ্যায় দেখুন)। একই সঙ্গে বলা হল সরকার এবং আন্তর্জাতিক
সঙ্গঠনগুলি জাগ্রত হয়ে সাধারণ পশ্চাদপতা এবং অর্থনৈতিক অনুন্নতি কাটাতে প্রয়োজনীয়
পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তাহলে এর আগে যে
উন্নয়নের তত্ত্ব আমাদের সরবরাহ করা হয়েছিল, সেটি থেকে নতুন উন্নয়ন তত্ত্বটি আলাদা
কোথায়? আছে। পুঁজির বিকাশের তত্ত্ব এবং এর সঙ্গে জুড়ে থাকা নানান চলকগুলি যেমন
প্রযুক্তি, জনসংখ্যা এবং সম্পদ, আর্থিক এবং রাজস্ব নীতি(monetary and fiscal policies), শিল্পোন্নয়ন এবং কৃষির উন্নতি, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি।
কৃষ্টি বিষয়েও আরও প্রচুর কিছু অতিরিক্ত চলক জুড়ে থাকে যেমন শিক্ষা বা আধুনিক নীতি
শিক্ষা ইত্যাদি। আগামী দিনের জটিল কাজের লক্ষ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট – আন্তর্জাতিক
সংগঠন(যেমন বিশ্ব ব্যাঙ্ক বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার ১৯৪৪ সালে এবং মধ্য
চল্লিশের দশকে তৈরি হল অন্যান্য রাষ্ট্রসঙ্ঘীয় প্রাযুক্তিক সংস্থাগুলি); জাতীয়
পরিকল্পনা সংস্থা(শুরু হল লাতিন আমেরিকায় ষাটের দশকে এলায়েন্স অব প্রোগ্রেসএর
উদ্বোধনের সময় থেকে); এবং বিভিন্ন প্রাযুক্তিক পেশাদারি সংগঠন সংগঠন তৈরি করা
জরুরি হয়ে দাঁড়াল।
উন্নয়ন মানেই ওপরে আলোচিত বিষয় বা বিষয়গুলির যুক্ততা, পাঠ
বা এইগুলি ক্রমান্বয়িক বিস্তার ঘটানোই নয়(কারণ কিছু বিষয় উন্নয়নের ধারনার আগে
থেকেই বর্তমান); বা এটা শুধুই নতুন ধারণার মিলিত চর্চা নয়(কিছু আলোচনায় চলে এসেছে,
কিছু আসার অপেক্ষায়); বা নব্য আন্তর্জাতিক বা আর্থিক সঙ্গঠনগুলির প্রভাব নয়(যেগুলির
অতীত ছিল লিগ অব নেশনসএর মত সংগঠন)। এটি বরং এই চলকগুলির মধ্যের সম্পর্ক, সংগঠন
এবং প্রথা চিহ্নিত করে তন্ত্রগতভাবে(systematization) সবকটির সম্পর্ককে মিলিয়ে একত্রিভূত করা। The development
discourse was constituted not by the array of possible objects under its domain but by the way in which,
thanks to this set of relations, it was able to form systematically the objects of which it spoke,
to group them and
arrange them in certain ways, and to give them a unity of their own।২১
উন্নয়নকে প্রতর্ক হিসেবে বুঝতে গেলে চলকগুলি আলাদা করে না জেনে
বুঝে, প্রত্যেকটির সম্পর্কের ব্যবস্থাকে বুঝতে হবে। এই ব্যবস্থাই নিয়মিত অবজেক্ট,
ধারণা এবং রণনীতি তৈরি করে; এই ব্যবস্থাপনা নির্ধারণ করে কি ভাবা যাবে এবং কি ব্যক্ত
হবে। সংগঠন, আর্থসামাজিক বিকাশ, জ্ঞানের আঙ্গিক, প্রাযুক্তিক চলক ইত্যাদির মধ্যে
যে সম্পর্ক রয়েছে, তা নির্নয় করে কি ধরণের রণনীতি, ধারণা, তত্ত্ব এবং বস্তু
উন্নয়নের আলোচনায় জোড়া হবে। সামগ্রিকভাবে এই সম্পর্কের ব্যবস্থাপনা একটি
প্রতার্কিক অনুশীলনের প্রথা তৈরি করে দেয়, কে কথা বলবে, কোন দৃষ্টিভঙ্গী থেকে, কোন
ক্ষমতায়, এবং কোন পেশাদারিত্বের অবস্থান থেকে বলা হবে; বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের
নীতি, তত্ত্ব, কোন বস্তু আসবে এবং কি নামে, কিভাবে বিশ্লেষিত হবে, এবং শেষ পর্যন্ত
নীতিতে বা পরিকল্পনায় পর্যবসিত হবে, সেই পরিবেশ তৈরি করে দেয়।
১৯৪৫ সালের পর থেকে উন্নয়ন অসংখ্য ধরণের বস্তুকে সরাসরি ডিল
করতে থাকে(দারিদ্র, অনুপযুক্ত প্রযুক্তি আর পুঁজি, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জনসেবার
ঘাটতি, প্রাচীন কৃষি প্রযুক্তি, ইত্যাদি ইত্যাদি), তার কিছু জিনিসকে গুপ্তভাবে আলোচনা
করে(যেমন পিছিয়ে পড়ার সঙ্গে কৃষ্টি এবং নীতিগত চরিত্র, এবং জাতিগত, ভৌগোলিক এবং
সামাজিক চলকের সম্পর্কগুলি)। এগুলি বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ভুত হতে থাকে, যেমন নব্য
আন্তর্জাতিক সংগঠন, দূর দেশের রাজধানীর সরকারি দপ্তর, নতুন বা পুরনো সংগঠন,
উন্নতিশীল দেশের বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষনা সংগঠন, এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতিশীল দেশে
এই ধরণের সংগঠনের তালিকা বাড়তেই থাকে। নতুন বিশেষজ্ঞর কাছে সব কিছুই subjected যেমন গ্রামীনদের গরীব গরীব বাড়িঘর, বিপুল কৃষি ক্ষেত্র,
শহর, বাড়িঘরদোর, কারখানা, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, সরকারি দপ্তর সমূহ, শহরতলী ও
অঞ্চলগুলি, সবভার শেষে সারা বিশ্ব। তৃতীয় বিশ্বের সামগ্রিক কৃষ্টিগত, আর্থনৈতিক,
এবং রাজনৈতিক ভূগোলের মধ্যে পড়ে এমন সব কটি বিষয়ের ওপর আলোচনাটা চলতে থাকে।
No comments:
Post a Comment