Showing posts with label Sutanuti. Show all posts
Showing posts with label Sutanuti. Show all posts

Sunday, September 1, 2013

সুতালুটির জন্ম এবং কলকাতায় ‘বসুক বা বসাকদের ইতিকথা৫, Basaks of Bengal are the Founder of Sutaluti or Sutanuti, the Old Calcutta5

ধরিতে গেলে এই শেঠ ও বসাকগণ কলিকাতার ‘জঙ্গল-কাটা’ বাসিন্দা। তাঁহারা যদি ষোড়শ শতাব্দীতে সপ্তগ্রাম হইতে – সুতালুটীতে আসিয়া বাস না করিতেন, তাহা হইলে এই কলিকাতাকে আজ আমরা প্রাসাদময়ী নগরী রূপে দেখতে পাইতাম না।
প্রাচীন কলিকাতায় যে হাট পত্তন হইয়াছিল, তাহা চণ্ডীকাব্যের বর্ণনা হইতে জানা যায় –

ধালিপাড়া, মহাস্থান,              কলিকাতা, কুচিনান,
                   দুই কূলে বসাইয়া বাট
পাষাণে রচিত ঘাট,               দুকূলে জাত্রির নাট
                   কিঙ্করে বসায় নানা হাট।।

প্রাচীন কলিকাতায় বসুকেরাই প্রথমে একটী হাট স্থাপনা করেন। চণ্ডীকাব্যের বর্ণনা হইতে দেখা যায়, কলিকাতার তখনকার হাটসমূহ হইতে হয়ত ভবিষ্যতে ‘সুতালূটী হাটখোলা’ বা ‘সুতালূটী হাটতলা’ দাঁড়াইয়াছে। তখনকার হাট সমূহ পাকা-পোক্তা ধরণের ছিল না। হয়ত উন্মুক্ত স্থানেই অনেক হাট বসিত। এই জন্য হয়ত ‘খলা-হাট’ এই আখ্যা হইতে ক্রমশঃ তাহা ‘হাটখোলায়’ দাঁড়াইয়াছে।
বেতাকীর খালের দূর্দ্দশার সহিত, বেতোড়ের হাট ক্রমশঃ শ্রীহীন হইতে থাকে। পর্টুগীজ বণিকেরাও তথায় যাতায়াত বন্ধ করিয়া দেন। বেতড়ার হাটের ধ্বংস হইলে কলিকাতার হাটের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন – সে সময়ে সুতালূটীর হাট বেশ জোরে চলিতেছিল। কারণ জব চারণক নিজেই লিখিয়াছেন – ‘চারিদল শেঠ ও বসাকেরা সপ্তগ্রামের অধঃপতনের সুচনা দেখিয়া গোবিন্দপুরে বসবাস করেন। তাঁহারা প্রথমে বেতড়ের বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন। বেতোড়ের অধঃপতনের পর সুতালূটীর হাট প্রতিষ্ঠিত হয়(The foreign market attracted native and merchant to the spot and in particular from families of Bysacks and one of Sets leaving the then rapidly declining city od Satgong came and founded the Settlement of Gobindpur and established Suttnutai market on the north side og Calcutta (Wilson, 128))।’
জব চার্ণক কর্ত্তৃক কলিকাতা প্রতিষ্ঠার প্রায় সাতাশ বৎসর পরে, এই প্রাচীন কলিকাতার যে সামান্য উন্নতি হইয়াছিল, তাহা সমসাময়িক হ্যামিল্টন সাহেবের বর্ণনা হইতে জানিতে পারা যায়।
বসুক নামক গ্রন্থ রচয়িতা বলেন, ‘সম্ভবতঃ খৃষ্টের ষোড়শ শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধে বসাকেরা কলিকাতায় আসিয়া প্রথম বসবাস করেন। সসাকেরা পর্টুগীজ ও অংরাজ উভয় জাতীয় বণিকদের সহিত ব্যবসায়সূত্রে লিপ্ত ছিলেন। বেতোড়ের হাটের অধঃপতনের সঙ্গে সঙ্গে, এপারে সুতালূটীর হাট জাঁকিয়া উঠে। বসুকেরা ধরিতে গেলে কলিকাতার ‘জঙ্গল কাটানো’ অধিবাসী। ১৭১৭ খৃঃঅব্দের মধ্যবর্ত্তী সময়ে – বংশবৃদ্ধির সহিত তাঁহারা প্রাচীন কলিকাতার বিস্তারিত হইয়া পড়েন।’ এ সম্বন্ধে সমসাময়িক হ্যামিল্টন সাহেব যাহা বলিয়াছেন, তাঁহার মর্ম্মারথ এই, - ‘১৭১৭ খৃঃঅব্দে কলিকাতার অবস্থা অন্যরূপ ছিল। বর্ত্তমান নগরী সেই সময়ে নদীয়া জেলার অন্তঃর্ভুক্ত কয়েকখানি ক্ষুদ্র গ্রাম ছিল। দশ বারখানি ঘর লইয়া, এক একটী ক্ষুদ্র গ্রাম। গ্রামের অধিবাসীরা অনেকেই কৃষকশ্রেণীভুক্ত। চাম্পাল ঘাটের(চাঁদপাল) দক্ষিণে এক বনভুমি। ক্ক্রমে এই বন পরিস্কৃত হয়। খিদিরপুর ও এই বনভুমির মধ্যে দুইখানি গ্রাম ছিল। এই সময়ে শেঠ ও বসাকেরা এখানকার প্রধান ব্যবসায়ী। তাঁহাদের যত্নেই এসব গ্রামে লোকের বসবাস হয় ও ইহা রকটী ক্ষুদ্র নগরীতে পরিণত হয়। বর্ত্তমান ফোর্ট উইলিয়াম(গড়ের মাঠের পার্শ্ববর্ত্তী স্থান) ও এসপ্ল্যানেডের(ধর্ম্মতলার নিকটবর্ত্তী স্থান) অধিকৃত ভূভাগেই উল্লিখিত বনভুমি ও দুইখানি ক্ষুদ্র গ্রাম ছিল। ১৭১৮খৃীঃঅব্দে চৌরঙ্গীর জঙ্গলের মধ্যে দুই একখানা গ্রামের অস্তিত্ব দেখা যায়। এই সকল ক্ষুদ্র গ্রামের চারিদিকে নালা নর্দ্দমা ও খাল। ধরিতে গেলে, এই সময় চিৎপুর হইতেই কলিকাতার একদিক ব্যাপিয়া খাল খনন করানো হয়। ইহা ‘মারহাট্টা-ডিচ’ বা ‘বর্গীর-খাত’ বলিয়া বিখ্যাত। সেরাজউদ্দৌলা যে সময়ে কলিকাতা আক্রমণ করেন, সেই সময় এসপ্ল্যানেড, চৌরঙ্গী ও ফোর্ট উইলিয়াম বলিয়া পরিচিত, ১৭৫৬খৃীঃ অব্দেও তাহা জঙ্গলময় ছিল। এই জঙ্গল সমূহের মধ্যে ক্ষুদ্রগ্রাম ও মধ্যে মধ্যে গোচারণ ভূমি।’(২৯৪ পৃ নাই)

...ইংরাজদিগের মত ওলান্দাজ, ফরাসী ও দিনেমারেরা সেথ ও বসাকদিগের সহিত বাণিজ্যকাজে লিপ্ত ছিলেন। ওলান্দাজ ও ডচদিগের আগমনে পর্টুগীজদের বাণিজ্য অনেকটা কম জোর জইয়া পড়ে। ওলান্দাজেরা খিদিরপুর হইতে শাঁকরালের খাল পর্য্যন্ত, ভাগিরথীর অংশকে গভীর করিয়া দেন। ঐ জন্য ঐ অংশকে ‘কাটি-গঙ্গা’ বলে। 

সুতালুটির জন্ম এবং কলকাতায় ‘বসুক বা বসাকদের ইতিকথা৪, Basaks of Bengal are the Founder of Sutaluti or Sutanuti, the Old Calcutta4

ভাগিরথীর একদিকে সুতালূটীর সূতার ব্যবসা ও অপরদিকে বেতোড়ের হাট। এই দুইটী হাটের বাণিজ্যের জন্যই, ভবিষ্যৎ কলিকাতার প্রাণ-প্রতিষ্ঠায় বিশেষ সহায়তা হইয়াছিল। ধরিতে গেলে, শেঠ-বসাকদিগের আগমনে বন জঙ্গলপূর্ণ গোবিন্দপুর – একখানি ক্ষুদ্র গ্রামে পরিণত হয়।
বৈষ্ণবশ্রেষ্ঠ বল্লভাচার্জই রাধাকৃষ্ণের জুগল মুর্ত্তির উপাসনা চারতে প্রচার করেন এরূপ একটী জনপ্রবাদ আছে। বলিতে পারি না, শ্রীরাধাকৃষ্ণের যুগল-মুর্ত্তির বহুল প্রচার ইহার পুর্ব্বে হইয়াছিল কি না? বসাকেরা গোবিন্দউরে আসিবার পর, রাধাকৃষ্ণের যুগল-মুর্ত্তির প্রতিষ্ঠা করেন। সম্ভতঃ ইহা ষোড়শ শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধ কাল। শেঠ-বসাকদিগের গোবিন্দজী ঠাকুর, রাধাকৃষ্ণেরই যুগল মূর্ত্তি(এই মূর্ত্তি স্থাপনার প্রধান উদ্যোগী মুকুন্দরাম বসাক। মুকুন্দরামের উপাধি ‘শেঠ’ ও তিনি মৌদ্গল্য-গোত্রীয়। ১৭৫৭ খৃঃঅব্দে অর্থাৎ পলাশী যুদ্ধের আমলে, কোম্পানীবাহাদুর গোবিন্দপুর হইতে লোকের বসবাস উঠাইয়া দিলে, তদ্বংশজাত বৈষ্ণবচরণ তথা হইতে গোবিন্দজীকে উঠাইয়া আনিয়া, বড়বাজারে নিজ বসতবাটঈর উত্তরে স্থাপিত করেন। তদবধি গোবন্দজী এখনও তথায় বর্ত্তমান আছেন। টাঁকশালের দক্ষিণ পুর্ব্বে, বড়বাজারের জাইবার পুর্ব্বধারে, তাঁহার মন্দির আজও অবস্থিত। ...মুকুন্দরামের বংশধর বৈষ্ণবচরণ শেঠ, পরম বৈষ্ণব ছিলেন। তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য দ্বারা প্রচুর ধন সঞ্চয় করেন। তাঁহার মত ধর্ম্মভীরু লোক সেকালে বড় কম ছিল। তেলিঙ্গানা প্রদেশের – রাম্রাজার পূজার জন্য গঙ্গাজল তিনি কলিকাতা হইতে শিলমোহর করিয়া পাঠাইতেন। বৈষ্ণবচরণের ধর্ম্মভীরুতার সম্বন্ধে একটী গল্প শুনিয়াছি। পাঠক বোধহয় শুনিয়াছেন – এদেশে একটি প্রবাদ বাক্য আছে ‘লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন।’ এই গৌরীসেন ব্যবসার সুত্রে বৈষ্ণবচরণের অংশীদার ছিলেন। বৈষ্ণবচরণ এক সমজয়ে কতকগুলি দস্তা খরিদ করেন। কিন্তু পরিক্ষসয় জানা যায় – এই দস্তারমধ্যে রূপার অংশ কিছু বেশী। বৈশণবচরণ ভাবিলেন গৌরিসেনের নামে  - দস্তা কেনায় তাহা ‘রাঙ্গের বদলে রূপায়’ দাঁড়াইয়াছে। ধররম্মভীরু, কর্ত্তব্যপরায়ণ বৈষ্ণবচরণ, ইহার বিক্রয়লব্ধ সমস্ত টাকাই গৌরীসেনকে প্রদান করেন। এই ব্যাপারে গৌরীসেন মহা ধনী হইয়া উঠেন। গৌরীসেন তাঁহার অর্জ্জিত বিপুল সম্পত্তি দান-খয়রাতে ব্যয় করিতেন। কন্যাদায়, মাতৃদায়, পিতৃদায়, দেনার দায়ে কায়েদী অধমর্ণ কিম্বা যাহারা ন্যায় পথে থাকিয়া সৎকার্য্যের জন্য ফৌজদারীতে জড়িত ও জরিমানার আসামী, তাঁহাদের জন্যই অকাতরে অর্থব্যয় করিতেন। ইহা হইতেই “লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন’ এই প্রবাদ-বাক্যের উতপত্তি। এক্ষণে এই বৈষ্ণবচরণ শেঠ সম্বন্ধে দুই একটী কিম্বদন্তী বলিব। বৈষ্ণবচরণ এক সময়ে বর্দ্ধমানের কোন মহাজনের নিকট দশাজার টাকার চিনি কিনিবার সংকল্প করেন। এই লোকটীর নাম গোবর্ধন রক্ষিত – জাতাংশে তাম্বুলী। সমস্ত মাল যখন বড়বাজারের কদমতলার ঘাটে পৌঁছিল, সেই সময়ে বৈষ্ণবচরণের কর্ম্মচারীরা মাল নামাইতে যান। তাঁহারা গোবর্দ্ধনের নিকট কিছু উপরি পাওনার লাভে হতাশ হইয়া, মনিব বৈষ্ণবচরণকে মিথ্যা করিয়া জানান, যে মাল তত সুবিধার নয় – ইহা কিনিলে লোকসান হইবে। বৈষ্ণবচরণ রক্ষিত মহাশয়কে অন্যলোক দ্বারা সেই কথা জানাইয়া বলেন – ‘আপনার মাল শুনিতেছি তত ভাল নয়, এ জন্য দাম কমাইতে হইবে।’ সেকালের লোক ধর্ম্মকে বড় ভয় করিতেন। কাজেই রক্ষিত মহাশয়, যখন এই মিথ্যাপবাদ শুনিলেন – তখন তিনি ব্যবসায়ে বদনামের ভয়ে তাঁহার চাকরদের আদেশ করিলে, - ‘চিনির নৌকা গঙ্গায় ডুবাইয়া দে। বদনাম কিনিয়া চিনি বেচিতে চাহিনা।’ তাঁহার চাকরেরা এই হুকুম পাইয়া যখন তাহা কতকটা কারয্যে পরিণত করিয়াছে, তখন এসমস্ত কথা ধার্ম্মিক প্রবর বৈষ্ণবচরণের কাঙে পৌঁছিল। তিনি তখনই আসিয়া মহাজন রক্ষিত মহাশয়কে বলিলেন – ‘আমার কর্ম্মচারীদের মুখে মিথ্যা সংবাদ শুনিয়া আমি আপনাকে সন্দেহ করিয়াছি। গঙ্গায় যে মাল ফেলিয়া দিয়াছেন, ??? আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করিব না। এখন যে মাল মজুদ আছে, তাঁহার দাম পুর্ব্ব স্বত্ব মতই দিব। কিন্তু ধর্ম্মজ্ঞানে গোবর্দ্ধণও বৈষ্ণবচরণ অকেক্ষা কোন বিষয়ে ন্যুন ছিলেন না। তিনি – কোনমতেই পূরা দামে মাল বেচিতে চাহিলেন না। যে মাল নষ্ট হইয়াছিল – তাহা বাদে তন বৈষ্ণবচরণের নিকট মালের দাম চুকাইয়া লইলেন। হায় বাঙ্গালা! হায় বঙ্গবাসী!’ তোমরা দেড়শত বৎসর পুর্ব্বে সেরূপ মহত্বে ভূষিত ছিলে, আর কি সে দিন ফিরিয়া আসিবে!)। ক্রমশঃ গোষ্ঠী-বৃদ্ধি ও অবস্থার উন্নতির সহিত, এই শেঠ ও বসাকবংশীয়দের অনেকের গৃহে শ্যামরায়, মদনমোহন ইত্যাদি বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয়।

সুতালুটির জন্ম এবং কলকাতায় ‘বসুক বা বসাকদের ইতিকথা৩, Basaks of Bengal are the Founder of Sutaluti or Sutanuti, the Old Calcutta3

সেকালে বাঙ্গলার সূক্ষ্ম-সূত্র-শিল্প, এক অপুর্ব্ব জিনিষ ছিল। ‘ঢাকাই মসলিন’ বঙ্গের অতীত গৌরবের সামগ্রী। ইউরোপের অনেক সাম্রাজ্ঞী, ভারতের মোগল বাদসাহদিগের পাটরানীগণ, বেগমগণ, এই ঢাকাই-মসলিন নির্ম্মিত পোষাক পরিবার জন্য উদগ্রীব হইয়া থাকিতেন। ঢাকার দশবার ক্রশ উত্তর পূর্ব্বে, ডুমরাও নামক একটী স্থান, অতীতকালের এইরূপ সূক্ষ্ম-সূত্র-শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখনও সেখানে অনেক তন্তুবায়ের বাস আছে। এখনও একটী প্রবাদ আছে – যে এই স্থানের সুপ্রসিদ্ধ কর্ত্তনীরা এক রতি ওজনের তুলায় একশত পঁচাত্তর হাত সূতা কাটিয়া দেন।
পাঠক! বঙ্গের এই প্রাচীন গৌরবের অস্তমিত অবস্থায়, হয়ত এ কথা বিশ্বাস না করিতে পারেন। কিন্তু তাঁহাদের বিশ্বাসের জন্য, আমরা প্রসিদ্ধ ফরাসীবণিক – টাভারনিয়ারের উক্তি, নিম্নস্থ পাদ-টীকায় উদ্ধৃত করিয়া দিতেছি(The broad BAFTAS are 1¾ cubit wide and the piece is 20 cubits long. They are commonly sold from 5 to 12 MAHAMUDIS, but the merchant on the spot is able to have them made much wider and finer and up to the value of 500 MUHAMUDIS the piece. In my time, I have seen 2 pieces of them sold for each of which 1000 MUHMUDIS were each 28 cubit. Mahamed Ali Beg while returning to Persia from his embassy to India presented CHASUFI(11) with a Cocoanut of a size of an ostrich’s egg. Enriched with precious stones and when it was opened a turban was drawn from it 60 cubits in length and of a MUSLIN so fine, that ypou would, scarcely know what it was that you had in your hand. The Queen Dowager with many of the Ladies of the Court was surprised at seeing a thread so delicate which almost escaped the view – Travels of Tavarnier(1679) vol ii p 7-8) তাঁর সারমর্ম্ম এই – ‘বাপতাগুলি পৌণে দুই হাত চওড়া ছিল। একটী থানে কুড়ি হাত কাপড় থাকিত। এই কাপড়্গুলি, ৫ হইতে ১২ মামুদিতে সাধারণতঃ বিক্রয় হইত। যদি কেহ ফরমাস করিতেন, তাহা হইলে তদ্দারা তাঁহারা আরও চওড়া ও সূক্ষ্ম বস্ত্র প্রস্তুত করিয়া দিত। তাঁহার দাম ৫০০ মামুদী পর্য্যন্ত হইত। আমাদের সময়ে আমি দেখিয়াছি, এক হাজার মামুদীতে দুই খন্ড কাপড় বিক্রয় হইয়াছে। ইংরাজ সউদাগরগণ অপরটী লয়েন। এ কাপড়্গুলি লম্বে ২৮ হাত। মহম্মদ আলিবেগ ভারতবর্ষ হইতে পারস্যে ফিরিয়া জাইবার সময়, অষ্ট্রীচ ডিমাবাকার, এক ক্ষুদ্র রত্নখচিত নারিকেল খোলের মধ্যে এক খণ্ড মসলিন লইয়া যান। পারস্য-সম্রাট’ দ্বিতীয় শাহ্‌ সুফিকে, এই অপুর্ব্ব জিনিস উপহার দেওয়াই তাঁহার উদ্দেশ্য। এই রত্নখচিত নারিকেলের খোলের মুখ খুলিবার তন্মধ্য হইতে ৬০ হাত লম্বা এক মসলিনের পাগড়ী বাহির হইল। এক মসলিন এত সুক্ষ্ম সুত্রে প্রস্তুত, যে আদৌ তাঁহার অস্ত্বিত্ব অনুভব করা যায় না, যত লম্বা মসলিন হউক না কেন – তাহার ভার অতি কম। ভরি ও রতি ইহার মাপ পরিমাণ। আমরা গল্প শুনিয়াছি, যে ঢাকাই মসলিনের একখণ্ড যদি রাত্রিকালে কোন তৃণক্ষেত্রে রাখিয়া দেওয়া যায়, তাহা হইলে সমস্ত রাত্রি শিশিরে ভিজিয়া, তাঁহার এরূপ অবস্থা হয়, যে পরদিন প্রভাতে – সূর্য্য উঠিলেও তাঁহার অস্ত্বিত্ব বোধ হয় না। বোধ হয়, যেন ঘাসের উপর একখানি মাকড়সার সুদীর্ঘ জাল বিছান আছে।’
বঙ্গের সেকালের সূক্ষ্ম-কার্পাসসূত্র – বাঙ্গালীর ভাগ্যলক্ষ্মী ছিল। অনেক টাকার সুক্ষ্মসূত্র, কার্পাসবস্ত্র ও মসলিন এ দেশ হইতে ইউরোপের হাটে উচ্চমুল্যে বিক্রয় হইত। কাটনা-কাটা এদেশে তখনকার একটা সাধারণ প্রথা। মোগলদিগের আমলে – এই কাটনা-কাটা প্রথার প্রচলন ছিল। কবিকঙ্কণের নিম্নলিখিত শ্লোকটী তাঁহার প্রমাণ – প্রভুর দোসর নাই, উপায় কে করে/ কাটনার কড়ি কত যোগাব ওঝারে।/ ‘দাদনি’ দেয় এবে মহাজন সবে/ টুটিল সূতার কড়ি উপায় কি হবে?/ দুপণ কড়ির সূতা একপণ বলে/ এক দুঃখ লিখেছিলা অভাগির কপালে!
তখন স্ত্রীলোকেরা দাদনী লইয়া কাটনা কাটিতেন। শেঠ-বসাকেরা পরবর্ত্তী কালে দাদন দিয়া কাজ করাইতেন, পরে ইংরাজ-বণিকেরাও ‘দাদনী’ প্রথা অবলম্বন করিয়াছিলেন।

সুতালুটির জন্ম এবং কলকাতায় ‘বসুক বা বসাকদের ইতিকথা২, Basaks of Bengal are the Founder of Sutaluti or Sutanuti, the Old Calcutta2

হরিসাধন মুখোপাধ্যায়ের, কলিকাতা সেকালের একালের থেকে

হ্যামিলটন বর্ণিত কোম্পানি কুঠী ও দুর্গ সুতালুটীর অন্তর্গত ছিল। খৃঃ ১৮২০ অব্দে ইহা ভাঙ্গিয়া ফেলা হয়। খৃষ্টীয় ১৭০০ অব্দের ২৭ মার্চ্চ পর্য্যন্ত যে সমস্ত পত্রাদি এদেশ হইতে কোম্পানী বাহাদুরের কর্ম্মচারীরা বিলাতে পাঠাইয়াছিলেন, তাহা সুতালুটী হইতে প্রেরিত বলিয়া ব্যক্ত আছে। ইহার পরের সমস্ত চিঠি পত্র যথাক্রমে কলিকাতা ও ফোর্ট উইলিয়াম হইতে প্রেরিত(Yule’s Glossery(See Chutanutty))।
এই প্রাচীন ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের কিছু দক্ষিনে, একটী নদী বা খাল ছিল। ঐ খাল বর্ত্তমান ওয়েলিংটন স্কোয়ারের নিকট হইতে আরম্ভ হইয়া, চাঁদপাল ঘাটে গঙ্গার সহিত মিলিত হইয়াছিল। ১৭৯৩ খৃঃঅব্দে অপজনের ম্যাপেও ইহার উল্লেখ আছে। কিন্তু এখন ইহার কোন অস্ত্বিত্ব নাই(এই খালের বা Creek(ক্রীকের) কোন চিহ্ন না থাকিলেও, ওয়েলিংটন স্কোয়ারের পার্শ্ববর্ত্তী – ‘ক্রিক রো’ ইহার নাম রক্ষা করিতেছে। ‘ডিঙ্গাভাঙ্গা’ নামের সহিত এই খালের কোন সম্বন্ধ আছে কি না পাঠক তাহা অনুমান করিয়া লইবেন। হলওয়েল সাহেব – গোবিন্দপুরের দক্ষিণ সীমার খালের সম্বন্ধে লিখিয়াছেন – On my joining the Fleet at Fulia, I did hear he was sent to Gobindapur Creek to burn & destroy the great boats there, that they might not be employed by the enemy in the attack or persuit of the sheeps. Holwell’s Indian Tracts, 1764, p 238)। এই খাল গোবিন্দপুর ও কলিকাতা এবং সুতালুটী গ্রামের অন্তর্বর্তী সীমা ছিল। যখন গোবিন্দপুরের দক্ষিণ সীমার খাল – ‘গোবিন্দপুর খাত’ বলিয়া উল্লিখিত হইত, তখন উত্তরের এই খালটীর সম্ভবতঃ এরূপ কোন একটা নাম থাকিতে পারে। কিন্তু সে নাম যে কি ছিল, তাহা ঠিক করিয়া বলিতে পারা যায় না।
সুতালুটী, সম্ভবতঃ শেঠ ও বসাকদের আগমনের পর হইতে, খ্যাতিলাভ করিয়াছে। কিন্তু তাঁহার পুর্ব্বে কলিকাতা গ্রামের একটা নাম ঘোষণা হইয়াছিল। চণ্ডীকাব্য হইতে পাঠক দেখিলেন, অগ্রে ধনন্তগ্রাম পরে কলিকাতা, এই ভাবেই নির্দ্দেশ আছে। কলিকাতার অধস্তনকালের আখ্যা সুতালুটীর চণ্ডীকাব্যে নাই।
চণ্ডীকাব্য রচনার পর হইতে সুতালুটীর ঐরূপ আখ্যা হইয়াছে। গ্লাডউইনের ‘আইন-আকবরীতে’ ‘ওয়াশীল তুমারজামার’ মধ্যস্থ তালিকায় এই কলিকাতাই উল্লিখিত আছে। ১৫৮২ অব্দে রাজা টোডরমল্ল সমস্ত বঙ্গদেশ জরিপ করিয়া এই তালিকা প্রস্তুত করেন। আইন-আকবরীতে ১৫৯৬ অব্দে শেষ হইইয়াছে।
বসুকদিগের সুতালুটী-হাট পত্তনের ন্যুনতম শত বৎসরের পরে, অর্থাৎ খ্রীষ্টীয় ১৬৬০ অব্দে ভ্যান্ডেন ব্রুক (Vanden Broock) নামক জনৈক ওলান্দাজ, ততসাময়িক একখানি মানচিত্র প্রকাশ করিয়াছিলেন। তাহাতে (Soclanotti) বলিয়া একটী গ্রামের নামল্লেখ আছে(অনেকেই অনুমান করেন, বসাকেরাই তন্তুবায়ের কাজ করিতেন, বস্ত্র ও সূতা প্রস্তুত করিতেন। কিন্তু ‘বসুক’ নামক জাতিতে-বিচার গ্রন্থপ্রণেতা মদনমোহন বাবু বলেন – ‘বসুকেরা তন্তুবায়দিগের নিকট বস্ত্রবয়ন করাইয়া লইতেন। এই নিম্নশ্রেণীস্থ বয়নজীবিগণ’ বসুকদের নিকট কার্পাস গ্রহণ করিত এবং চরকায় সূতা কাটার জন্য তুলার পাঁজ প্রস্তুত করিত। এই সমস্ত তুলা বসুক বা বসাকদের নিকট গৃহীত হইত এবং চরকায় সূতা কাটিবার জন্য ব্যবহৃত হইত। পরে আবার সূত্র বা বস্ত্রাকারে তাহাদিগকেই প্রদত্ত হইত। এই আদান ক্রিয়ার অবান্তর সম্বন্ধ বশতঃ ঐ সকল তুলার পাঁজ ‘বসুক বা বোসকে’ নামে আখ্যাত। যে সকল স্ত্রীলোক কাটনা কাটিতেন, তাহাদিগকে ‘কর্ত্তনী’ বলিত। ‘কাটনা’ শব্দ কর্ত্তনীর অপভ্রংশ। এখনও পর্য্যন্ত কাটনা শব্দ বঙ্গদেশ হইতে লোপ পায়নাই – এবং অনেক সুদূর মফঃস্বলে কাটনা-কাটার প্রথা – বৃদ্ধা বিধবাদের মধ্যে এখনও প্রচলিত আছে। বঙ্গদেশে একটী প্রবাদই আছে – ‘কাটনা কাটনা ধন’।’)। এই সময় কলিকাতার মধ্যে সূতার ও সুতার-লুটীর বাণিজ্য ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাইতেছিল।

সুতালুটির জন্ম এবং কলকাতায় ‘বসুক বা বসাকদের ইতিকথা১, Basaks of Bengal are the Founder of Sutaluti or Sutanuti, the Old Calcutta1

হরিসাধন মুখোপাধ্যায়ের, কলিকাতা সেকালের একালের থেকে
বসাক বা বসুকদিগের আদি বাসস্থান আদিসপ্তগ্রাম। সপ্তগ্রামের একটী পুষ্করণী তাহাদের নামানুসারে ‘বসকা-দিঘী’ বলিয়া বিখ্যাত। সপ্তগ্রামের বাসকালে বসাকদিগের ‘বসক’ উপাধি ছিল। কলিকাতায় আসিবার পর তাহা ‘বসাকে’ পরিবর্ত্তিত হয়।(‘বসুক’ গ্রন্থ প্রণেতা মদনমোহন হালদার মহাশয় বলেন – ‘বসুক’ শব্দই বসাকদের প্রকৃত উপাধি এবং বসুকেরা বৈশ্য শ্রেণীভুক্ত। একখানি সারগর্ভ গ্রন্থ লিখিয়া তিনি ইহা প্রতিপন্ন করিয়াছেন। বসুক হইতে বসাক শব্দে দাঁড়াইয়াছে। বসুক শব্দের অর্থ ধনসম্পত্তি – ভাবার্থ – কর ও রাজস্ব। উহা বৈশ্যের বর্নগত উপাধি। আমরা এই গ্রন্থে চিরপ্রচলিত বসাক শব্দই ব্যবহার করিব। ইহা না হইলে পাঠকেরা গোলে পড়িতে পারেন।)
এই বসাকদের আবার শ্রেষ্ঠী বা শেঠ বলিয়া এক সম্প্রদায় আছেন। শেঠেরাও এই সময়ে সপ্তগ্রাম হইতে আসিয়া কলিকাতায় বাস আরম্ভ করেন।
সেকালের কলিকাতা দুইখানি গ্রামে বিভক্ত ছিল বলিয়া অনুমান করা যাইতে পারে।
কবিকঙ্কণ চণ্ডীতে আছে-
ত্বরায় চলিল তরী তিলেক না রয়/ চিৎপুর শালিখা সে এড়াইয়া যায়।/কলিকাতা এড়াইল বেণিয়ার বালা/বেতোড়েতে উত্তরিল অবসান বেলা।/ বেতাই-চন্ডিকা পূজা কৈল সাবধানে/ধনন্তগ্রাম খানা সাধু এড়াইল বামে।/ ডাইনে এড়াইয়া জ্যায় হিজলির পথ/ রাজহংস কিনিয়া লইল পারাবত।/ কালীঘাট এড়াইল বেনিয়ার বালা/ কালীঘাটে গেল ডিঙ্গা অবসান বেলা।/ মহাকালীর চরণ পূজেন সওদাগর/ তাহার মেলান বেয়ে জ্যায় মাই নগর।
শ্রীমন্ত সওদাগর কলিকাতা, উত্তীর্ণ হইয়া ধনন্তগ্রাম প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, কবির বর্ণনানুসারে, এই ধনন্তগ্রাম সেকালের গোবিন্দপুর বলিয়া বোধ হয়। শ্রীমন্ত, পরপারস্থ বেতাই-চণ্ডীকার(বেতড়া বা বেতোড় আধুনিক ব্যাঁটরা। উহা হাবড়া ষ্টেশন হইতে এক মাইল পশ্চিমে। বেতোড়া খালকে বেতাড়ির খাল বলে। উহার মোহানা আদিগঙ্গার মোহানার ঠিক সম্মুখে। পুর্ব্বে পর্টুগীজ বণিকেরা ঐ খাল দিয়া সপ্তগ্রামে যাতায়াত করিতেন। বেতাই-চণ্ডীর পূজা উপলক্ষে, সেই স্থানে অতীতকালে এক মহামেলা অনুষ্ঠিত হইত। ফ্রেডরিক সিজার নামক পুর্ব্বোক্ত সমসাময়িক ভ্রমণকারী ১৫৭০ খৃঃ অব্দে বাঙ্গালায় আসেন। তিনি বেতকীর খালে চড়া পড়িতে দেখিয়া গিয়াছিলেন। তৎপরে মুকুন্দরামের সময়ে ঐ খাল একেবারেই বন্ধ হইয়া যায়। বেতকীর খাল বন্ধ হইলে, ইংরাজ ও পর্টুগীজ বণিকেরা হুগলী যাতায়াতকালে ভাগীরথী দিয়া যাইতেন। তখন সপ্তগ্রাম হইতে আসিবার সময় গরিফা, গোন্দলপাড়া, ইছাপুর, মাহেশ, খড়দা, কোন্নগর, চিৎপুর, শালিখা, প্রভৃতি গ্রামগুলি অতিক্রম করিয়া কলিকাতা ও গোবিন্দপুরের সম্মুখ দিয়া আদিগঙ্গায় প্রবেশ করিতে হইত। ফ্রেডরিক লিখিয়াছেন – Buttor a good tides rowing before you come to Satgaw from thence upwards the ships do not go because the river is very shaloiw. The small ships go to Satgaw and there they trade.) পূজা করিয়া আদ্যগঙ্গায় প্রবেশ কালে, ধনন্তগ্রাম খানি বামদিকে দেখিয়াছিলেন। ‘ধনন্ত’ শব্দ ‘ধনস্থের’ অপভ্রংশ। ধনস্থ শব্দের সঙ্গত অর্থ – যে গ্রামে ধন আছে বা ধনীগণ বাস করেন। বসাকেরা চন্ডীকাব্য রচনার পুর্ব্বে, সপ্তগ্রাম হইতে আসিয়া গোবিন্দপুরে বাস করেন। তাঁহারা যে এই গ্রামের আদিম অধিবাসী তাঁহার আর কোনও সন্দেহ নাই। তাহাদের পরই, কালীঘাটের হালদার মহাশয়গণের পুর্ব্বপুরুষগণ ও কলিকাতা ঠাকুরগোষ্ঠীর পূর্ব্বপুরুষ, বহু পরে গোবন্দপুরে আসিয়া বাস করেন। কাপ্তেন আলেকজান্ডার হ্যামিল্টন ১৭০৬ খৃঃ অব্দে অর্থাৎ জব চার্ণক কর্ত্তৃক কলিকাতা স্থাপনের ষোল বৎসর পরে গোবিন্দপুরে আসেন। তাঁহার লিখিত বিবরণে প্রকাশ, যে গোবিন্দপুর ফোর্ট উইলিয়াম-দুর্গের দক্ষিনে(হ্যামিল্টন, কলিকাতার পুরাতন কেল্লা,(অর্থাৎ বর্ত্তমান জেনেরেল পোষ্টাফিস, কষ্টম হাউস ও ই, আই, রেলওয়ে এজেন্ট আফিসের অধিকৃত স্থানে যে কেল্লা ছিল, যাহার অবস্থান ছিল লর্ড কার্জ্জন বাহাদুর – পিত্তলের লাইন দিয়া চিহ্নিত করিয়া দিয়াছেন, যাহা নবাব সিজাউদ্দৌলা আক্রমণ করেন) তাঁহার কথাই বলিয়াছেন। পুরাতন দুর্গের অস্ত্বিত্বমাত্র এখন নাই। পাঠক যেন এই পুরাতন ফোর্ট উইলিয়ামকে গড়ের মাঠের বর্ত্তমান কেল্লা বলিয়া না ভাবেন) এবং গোবিন্দপুরের দক্ষিন সীমা হইতে ঐ দুর্গ তিন মাইল উত্তরে। ১৬৯৬ খৃঃ এই ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্ম্মান সুচনা হয়।

Friday, January 18, 2013

What Sold in a Bengal Market in Pre-British Period, ব্রিটিশপূর্ব সময়ে বাঙলার বাজারে কী বিক্রি হত

১৭৫০ নাগাদ সুতালুটী বাজার আর শোভা বাজারে কী কী বিক্রি হচ্ছে এবং সেসময় কোন কোন দোকানের জন্য কর চাওয়া হচ্ছে, অথবা রপ্তানির জন্য কী কী মালের ওপর কর নেওয়া হচ্ছে, কোলকাতা সেকানের একালের থেকে এবং আরও অন্য সূত্র থেকে ১) কড়ি, ২) সরষের তেল, ৩) সুতো, ৪) ওষুধ, ৫) লোহার নানান দ্রব্য, ৫) টায়ার(চাকা!), ৬) দুধ, ৭) জ্বালানী কাঠ, ৮) তালগুড়, ৯) খড়-বিচালি, ১০) মিঠাই, ১১) মাদুর, ১২) কামারের দোকান, ১৩) বাঁশ, ১৪) রূপোর স্যাকরা, ১৫) কাংশ্য দ্রব্য, ১৬)পান, ১৭) সুপারি, ১৮) ফলমূল, ১৯) ফলমূল ও শাকসব্জী, ২০) গাছ, ২১) আখ, ২২) তাঁতি, ২৩) কলা, ২৪) তেঁতুল, ২৫) চাল, ২৬) মাছ বিক্রেতা, ২৭) পশুমাংস, ২৮) সিদ্ধচাল, ২৯) ধনে, ৩০) কুম্ভকার,  ৩১) চুনের দোকান, ৩২) কাপড় বিক্রেতা, ৩৩) তামাকের দোকান, ৩৪) বেনামী দোকান ৩৫) ধান, ৩৬) ছোলা, ৩৭) জপের মালা, ৩৮) চট, ৩৯) কার্পাস, ৪০) সিঁদুর, ৪১) ফটকিরি, ৪২) তুঁতে, ৪৩) সিদ্ধি, ৪৪) আফিম, ৪৫) আতসবাজী ৪৬) নীল, ৪৭) সোরা, ৪৮) মদ, ৪৯) মধু, ৫০) মোম, ৫১) কাঠ, ৫২) দামি ধাতু, ৫৩) নারকেল, ৫৪) সুতো, ৫৫) সুরকী, ৫৬) ধুনো, ৫৭) গালা, ৫৮) নানান খণিজ দ্রব্য ৫৯) হাতির দাঁত ৬০) চামড়া ৬১) শিংএর দ্রব্য, ৬২) আবলুষ কাঠ, ৬৩) সাদা চিনি ৬৪) গৌড়ি(গুড় থেকে প্রস্তুত), ৬৫) তেজপাতা, ৬৬) গন্ধ দ্রব্য নার্দ(Nardostachys grandiflora), ৬৭) শাঁখের নানান দ্রব্য, ৬৮) জুয়েলারি, ৬৯) কাজু, ৭০) নারকেল, ৭১) বিভিন্ন রং, ৭২) ফুল থেকে তৈরি সজ্জাদ্রব্য, ৭৩) সোনা, ৭৪) ঘি, ৭৫) পাটি