(বীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যেরপরিপার্শ্ব পার্ষদ পীর গোরাচাঁদ পুস্তক থেকে )
...লোকদেবতা দক্ষিণ রায় এবং তাঁর বারামূর্তিকে স্বীকার না করলেও কালক্রমে দক্ষিণবঙ্গের ব্রাহ্মণেরা কিন্তু দক্ষিণেশ্বর নামে তাঁকে মেনে নিয়েছেন. কোনো প্রামাণ্য শাস্ত্রে যদিও এ দেবতার পুজার বিধান নেই, তবু নিজেদেরই উদ্ভাবিত মন্ত্রে তাঁরা এই দেবতার পুজো করেন. সে মন্ত্র তাণরা সাধারণ্যে প্রকাশ করেন না. কেউবলেন তিনি সাক্ষাত ক্ষেত্রপাল শিব, কেউবা বলেন তিনি গণেশ. কাহিনীও সেভাবেই তৈরি হয়ে যায়. গণেশের জন্মের পর শণির কোপদৃষ্টিতে মুণ্ড উড়ে যায়- গণেশের সেই কাটা মুণ্ডই দক্ষিণ রায়ের রাবা মূর্তি.
ব্রহ্মণ্য সংস্কৃতি্র প্রচণ্ড বাধা সত্বেও লৌকিক দেবদেবী যখন আপন মাহাত্ম্যে সাধারণ মানুষের কাছে পুজো পান, তখন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিজেদের গরজেই সেইসব দেবদেবীকে শাস্ত্রে অনুমোদন দিয়ে থাকেন. কখনও বা স্বনামে কখনও বা বেনামে এই সব লৌকিক দেবদেবী বৃহত্তর হিন্দু সমাজে স্বীকৃত হন. মধ্যযুগের শীতলা, মনসা ইত্যাদি লৌকিক দেবদেবীরা এভাবেই স্বীকৃতি আদায়র করে নেন, ধর্মঠাকুর শিব ঠাকুর রূপে পুজিত হন. এইসব দেবদেবীর গুণকার্তনে মঙ্গল কাব্য রচিত হয়. কাটা মুন্ড বারা ঠাকুরের দক্ষিণ রায়ের পূর্ণ মূর্তিতে পূজা পাওয়া আসলে শাস্ত্রের দ্বারা অনুমোদন - গণেশের নামে, শিবের ক্ষেত্রপাল নামে কিম্বা অন্য কোন নামে. রায়মঙ্গল কাব্যখানি রচিত হয় দক্ষিণ রায়ের গুণকীর্তনে.
উগ্রদর্শণ বারামূর্তির প্রকরণে আদিমতা সহজেই ধরা পড়ে. কান্ডহীন মুণ্ডটি কাটা নৃমুণ্ডের প্রতীক- আদিম সমাজে নরমুন্ড শিকারের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে. আদিম জাদুবিশ্বাসে নরমুন্ডের এক বিশেষ ভূমিকা ছিল. কালক্রমে নরমুন্ডের বদলে তার প্রতীক ব্যবহার করা হয়. সারা বিশ্বের আদিমসমাজেরই এই রীতি. আমাদের দেশেও নাগা ও খোন্দ উপজাতিদের মধ্যে যে কাঠের নরমুণ্ড বা মুখোশের ব্যবহার তার মূলে ঐ জাদুবিশ্বাসই কাজ করে.
দক্ষিণ রায়ের বারামূর্তিও বস্তুত আদিম সমাজের সেইঈ নরমুণ্ডের প্রতীক. রায়মঙ্গল কাব্য বিপরীত উপাখ্যান শেনালেও বারামূর্তি দক্ষিণ রায়ের আদিরূপ. জঙ্গল হাসিলের সময়, বাঘের উত্পাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভক্তের চোখে বারামূর্তি ব্যাঘ্ররূপ, তার থেকে পূর্ণাকৃতি দক্ষিণরায়ের আসীন হওয়া ইসলামী প্রভাবে বড় খাঁ গাজীর প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে.
বারামূর্তির প্রাচীণত্বের পাথুরে প্রমাণ আছে. ডায়মন্ডহারবার মহকুমার হরিনারায়ণপুরে উত্খননের ফলে নব্যপ্রস্তর যুগের অস্ত্র শস্ত্র প্রাপ্তির সঙ্গে মুণ্ডমুর্তি প্রাপ্তির কথা এই প্রসঙ্গে স্মরণীয়. শিল্প বিচারে এ মুন্ডমুর্তি লোকসমাজে প্রচলিত বারামূর্তিরই আদিরূপ বলে মনে হয়.
...লোকদেবতা দক্ষিণ রায় এবং তাঁর বারামূর্তিকে স্বীকার না করলেও কালক্রমে দক্ষিণবঙ্গের ব্রাহ্মণেরা কিন্তু দক্ষিণেশ্বর নামে তাঁকে মেনে নিয়েছেন. কোনো প্রামাণ্য শাস্ত্রে যদিও এ দেবতার পুজার বিধান নেই, তবু নিজেদেরই উদ্ভাবিত মন্ত্রে তাঁরা এই দেবতার পুজো করেন. সে মন্ত্র তাণরা সাধারণ্যে প্রকাশ করেন না. কেউবলেন তিনি সাক্ষাত ক্ষেত্রপাল শিব, কেউবা বলেন তিনি গণেশ. কাহিনীও সেভাবেই তৈরি হয়ে যায়. গণেশের জন্মের পর শণির কোপদৃষ্টিতে মুণ্ড উড়ে যায়- গণেশের সেই কাটা মুণ্ডই দক্ষিণ রায়ের রাবা মূর্তি.
ব্রহ্মণ্য সংস্কৃতি্র প্রচণ্ড বাধা সত্বেও লৌকিক দেবদেবী যখন আপন মাহাত্ম্যে সাধারণ মানুষের কাছে পুজো পান, তখন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিজেদের গরজেই সেইসব দেবদেবীকে শাস্ত্রে অনুমোদন দিয়ে থাকেন. কখনও বা স্বনামে কখনও বা বেনামে এই সব লৌকিক দেবদেবী বৃহত্তর হিন্দু সমাজে স্বীকৃত হন. মধ্যযুগের শীতলা, মনসা ইত্যাদি লৌকিক দেবদেবীরা এভাবেই স্বীকৃতি আদায়র করে নেন, ধর্মঠাকুর শিব ঠাকুর রূপে পুজিত হন. এইসব দেবদেবীর গুণকার্তনে মঙ্গল কাব্য রচিত হয়. কাটা মুন্ড বারা ঠাকুরের দক্ষিণ রায়ের পূর্ণ মূর্তিতে পূজা পাওয়া আসলে শাস্ত্রের দ্বারা অনুমোদন - গণেশের নামে, শিবের ক্ষেত্রপাল নামে কিম্বা অন্য কোন নামে. রায়মঙ্গল কাব্যখানি রচিত হয় দক্ষিণ রায়ের গুণকীর্তনে.
উগ্রদর্শণ বারামূর্তির প্রকরণে আদিমতা সহজেই ধরা পড়ে. কান্ডহীন মুণ্ডটি কাটা নৃমুণ্ডের প্রতীক- আদিম সমাজে নরমুন্ড শিকারের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে. আদিম জাদুবিশ্বাসে নরমুন্ডের এক বিশেষ ভূমিকা ছিল. কালক্রমে নরমুন্ডের বদলে তার প্রতীক ব্যবহার করা হয়. সারা বিশ্বের আদিমসমাজেরই এই রীতি. আমাদের দেশেও নাগা ও খোন্দ উপজাতিদের মধ্যে যে কাঠের নরমুণ্ড বা মুখোশের ব্যবহার তার মূলে ঐ জাদুবিশ্বাসই কাজ করে.
দক্ষিণ রায়ের বারামূর্তিও বস্তুত আদিম সমাজের সেইঈ নরমুণ্ডের প্রতীক. রায়মঙ্গল কাব্য বিপরীত উপাখ্যান শেনালেও বারামূর্তি দক্ষিণ রায়ের আদিরূপ. জঙ্গল হাসিলের সময়, বাঘের উত্পাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভক্তের চোখে বারামূর্তি ব্যাঘ্ররূপ, তার থেকে পূর্ণাকৃতি দক্ষিণরায়ের আসীন হওয়া ইসলামী প্রভাবে বড় খাঁ গাজীর প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে.
বারামূর্তির প্রাচীণত্বের পাথুরে প্রমাণ আছে. ডায়মন্ডহারবার মহকুমার হরিনারায়ণপুরে উত্খননের ফলে নব্যপ্রস্তর যুগের অস্ত্র শস্ত্র প্রাপ্তির সঙ্গে মুণ্ডমুর্তি প্রাপ্তির কথা এই প্রসঙ্গে স্মরণীয়. শিল্প বিচারে এ মুন্ডমুর্তি লোকসমাজে প্রচলিত বারামূর্তিরই আদিরূপ বলে মনে হয়.
No comments:
Post a Comment