এক্ষণে বঙ্গদেশের মধ্যে কিছু শিল্পদ্রব্য উত্পন্ন হয় তাহা বঙ্গদেশ ছাড়িয়া বাহিরের মুখ দেখিতে পায় না। পূর্বে যে শিল্পের সদ্ভাব ছিল, পাশ্চাত্য বাণিজ্য সংস্রবে তাহার যে মহত্তর অনিষ্ট ঘটিয়াছে, চিন্তাশীল লোকমাত্রই তাহা অনুভাব করিয়াছেন। ১৮৮২-৮৩র বঙ্গদেশীয় শাসন সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনীতে স্পষ্ট লিখিত হইয়াছে যে, ইংলন্ড হইতে বাহুল্যরূপে বস্ত্রের আমদানী হওয়াতে দেশীয় উত্কৃষ্ট শিল্প যন্ত্রসকল বিনষ্ট হইতেছে। পূর্বের ন্যায় আর ঢাকায় মসলিন প্রস্তুত হয় না, এখনকার ঢাকাই তন্তুবায়গণ আর সে প্রকার সুতা প্রস্তুত করিতে পারে না। তাহারাও সম্পূর্ণরূপে ম্যঞ্চেষ্টারের অধীন হইয়া পড়িয়াছে। দেশীয় তন্তুবায়েরা সুতার কাজ প্রায় পরিত্যাগ করিয়াছে। বিলাত হইতে যে সকল সুতার আমদানি হয়, এখানকার তাঁতিরা তাহাই ব্যবহার করে। বস্ত্রবয়ণ কার্য প্রায় উঠিয়া গেল। এক্ষণে চটের খলের ব্যবসায় সেই স্থান অধিকার করিয়াছে। কলিকাতা ও অন্যান্য স্থানাদিতে চটের কলে খাটিয়া অধিকাংশ লোক জাহিকা উত্পাদন করে। এক্ষণে যে যে স্থানে যে যে সামান্যপ্রকার দ্রব্য উত্পন্ন হয়, তদ্বৃত্তান্ত লিখিত হইতেছে। বর্ধমান বিভাগে কালনায় লালবাগানে যে সকল ধুতি ও শাড়ী প্রস্তুত হইয়া থাকে, তাহা এখনও উত্কৃষ্ট বলিয়া প্রসিদ্ধ। বিলাতের বস্ত্রের আমদানীতে ইহারও ক্রমশঃ অবনতি হইতেছে। বর্ধমান জেলায় ৯টা পাটের কল ও ৩টা কাপড়র কল আছে। এই সকল কলে চট ও বস্ত্র উত্পাদন হইয়া থাকে। রামপুর উপবিভাগে পাটের দড়ি অধিক হইয়া থাকে। গত বত্সর পাটের কলে ৭১৪৭৫৭ মন দ্রব্য প্রস্তুত হইয়া ছিল। হাবড়ার তুলার কলের কার্যের ক্রমশঃই হ্রাস হইয়া আসিতেছে। পশ্চিম অঞ্চলে তুলার কলে যে রূপ লাভ হইতেছে, হাবড়ার কলে সেরূপ হইতেছেনা, কিন্তু চটের কলে উত্তমরূপ লাভ হইতেছে। পাটের গাঁইট কষার জন্য তিনটি কোম্পানী হইয়াছে। বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলায় কতগুলি লাক্ষার কারখানা আছে। এক বাঁকুড়ায় ৩৪টা লাক্ষার কল হইয়াছে। উক্ত জেলার লাক্ষার ব্যবসাই প্রধান। বীরভূমে ইসলামবাজার নামক স্থানে এদেশীয়দিগের ৮টি লাক্ষার কারখানা আছে। এস্থলে বলা বাহুল্য যে, বহির্বাণিজ্য সম্বন্ধে ঐ একটি পদার্থ এদেশের প্রধান দ্রব্য। বর্ধমান হুগলী ও মেদিনীপুর অঞ্চলে ধাতু পাত অধিকাংশ প্রস্তুত হয়, তাহাও বিদেশে রপ্তানি হইয়া থাকে। ১৮৮৩-৮৩ অব্দে বর্ধমান জেলা হইতে আট লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার টাকার কাঁসা বিলাতে প্রেরিত হইয়াছিল। ঐ অব্দে হুগলি হইতে ছয় লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার ও মেদিনীপুর হইতে আটাশ লক্ষ ঊনষাইট হাজার টাকার পিত্তল বিলাতে রপ্তানি হয়। বর্ধমান জেলার মধ্যে কাঞ্চননগর শিল্পের একটি প্রসিদ্ধ স্থান। তথায় ছুরি কাঁচি প্রভৃতি অস্ত্রসকল অতি উত্তমরূপে প্রস্তুত হইয়া থাকে। রাণীগঞ্জ ও বর্ধমানের কাটোয়া বিভাগে কুম্ভকারের কার্যের কিছু কিছু উন্নতি আছে। বর্ধমানের মধ্যে রঘুনাথচক নামক স্থানে পোর্ট সিমেন্ট প্রস্তুত করিবার একটি কারখানা হইয়াছে। উহার বাণিজ্য কিছু কিছু লাভ হইতেছে। রাণীগঞ্জে উক্ত কারখানা করিবার একটি বৃহত্ কারখানা প্রস্তুত হইতেছে। ইহার কার্য অদ্যাপি আরম্ভ হয় নাই। বালির কাগজের কারখানা উত্তমরূপে চলিতেছে। ২৪ পরগণার মধ্যে ৩৪টি কল আছে। ঐ সকল কলে সাতাইশ হাজার লোক খাটিয়া থাকে। ঐ সকল কলে থলে, কাপড়, সূতা, ইট, চাউল, তৈল, লাক্ষা প্রস্তুত হইয়া থাকে। কেরোসিন তৈলের আমদানি নিবন্ধন রেড়ির তেলের আমদানি কলের কার্য মন্দ হইয়া দাঁড়াইয়াছে। উক্ত বিভাগে মৃতপাত্র লৌহ ও পিত্তল পাত্র, অস্ত্রাদি আ শূঙ্গের কার্য বহুল পরিমানে হইতেছে। শান্তিপুরের উৎকৃষ্ট বস্ত্র ব্যবসায় বিলাতি বস্ত্রের আমদানি নিবন্ধন ক্রমেই অবনতি হইতেছে। রেশম প্রস্তুত করিবার প্রধান স্থান মুর্শিদাবাদ। এই ব্যবসারও ক্রমে লোপ পাইবার সূচনা হইতেছে। নদীয়াতে একটি রেশম কুঠী আছে। বিলাতি সার্টিন ও অন্যান্য বস্ত্রের আমদানি হেতু এ ব্যবসায়টিও লোপ পাইতে বসিয়াছে। খুলনা জেলায় মৃত্তিকা পাত্র ও পাট অধিক জন্মে। কোন কেন স্থানে লবনও প্রস্তুত হইয়া থাকে। ...রাজসাহী ও রঙ্গপুরের বাসন বিদেশে অধিক রপ্তানি হইযা থাকে। দিনাজপুর বগুড়া, জালপাইগুড়ি জেলাতে নানান প্রকার মাদুরের ব্যবসা আছে। ...ঢাকা বিভাগে শঙ্খের কাজ, মাদুর সাবান, পনির ইত্যাদি অনেক দ্রব্য উত্পন্ন হয়। ইহা ভিন্ন নৌকা নির্মাণ প্রভৃতি সূত্রধরের কার্য ও কুম্ভকারের কার্যও অধিক হয়।
Lokfolk লোকফোক forum of folk লোক tribal আদিবাসী culture সংস্কৃতি of West Bengal পশ্চিমবঙ্গ, বাংলা. LOKFOLK is Bengal বাংলা India's ভারতের traditional পারম্পরিক knowledge system জ্ঞানভাণ্ডার, history ইতিহাস, Indigenous technology প্রযুক্তি. We have two mass bodies গনসংগঠন Bongiyo Paromporik Kaaru O ও Bastro Shilpi Sangho; Bongiyo Paromporik Aavikaar Shilpi Sangho. Journal পত্রিকা, PARAM, পরম. Picture - KaaliKaach কালিকাচ, Dinajpur দিনাজপুর, Madhumangal মধুমঙ্গল Malakar মালাকার
Sunday, May 15, 2011
তত্কালীন সংবাদপত্রে ধংসন্মুখ শিল্পগুলির বর্ণনা
লেবেলসমূহ:
Bengal,
Newspaper report,
Traditional Technology,
traditionalKnowledge,
ধংসন্মুখ শিল্প,
সংবাদপত্র
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment