আমরা বড়পুঁজির লুঠেরা, খুনি, অত্যাচারী, কেন্দ্রিভূত উৎপাদন ব্যবস্থার, দখলদারি জ্ঞানচর্চার অপচয়ী জীবনযাত্রার যতটা পারা যায় অংশ হতে চাই না।
কোন দর্শনের মূলানুগ থাকা যে খারাপ কাজ, কে দাগিয়ে দিল? মনে আছে স্যাটানিক ভার্সেসের বিতর্কের সময় মরহুম মুস্তাফা সিরাজ মশাই এই কথাটি দ্বর্থহীনভাবে জানিয়েছিলেন।আমার সমাজের জীবনধারণের উৎপাদন ব্যবস্থার মৌল দর্শনে যদি আমি দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করি, বড়পুঁজির লুঠেরা প্রযুক্তির উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গী না হই, তাকে মৌলবাদ, অনাধুনিক বলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে এবং হচ্ছে ভবিষ্যতে আরও হবে।
গত ২৫০ বছর ধরে যেভাবে আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উপড়ে ফেলে, টেনে হিঁচড়ে, ভদ্রবিত্তের মত বড় পুঁজির দাস করার করার চেষ্টা হয়েছে, সেটাকে আমরা যতটা পারাযায় আটকানোর চেষ্টা করছি। আমাদের কয়েক হাজার বছরের অকেন্দ্রিভূর প্রযুক্তি, উৎপাদন ব্যবস্থা, কৃষ্টি, দর্শনের অর্জনকে আধুনিকতা নানানভাবে প্রাচীনত্ব ইত্যাদি লব্জে দাগিয়ে দিয়ে লুঠেরা অত্যাচারী খুনি বৈচিত্র্যহত্যাকারী কেন্দ্রিভবনপুজ্য বড় পুঁজির অনুগামী করার চেষ্টা করে চলছে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকাকে কেউ যদি 'আবদ্ধ' 'মৌলবাদ' 'পিছোনো' দাগিয়ে দেন, আমরা নাচার।
মুসলমান সমাজ সচেতনভাবে এই প্রচেষ্টাটা করছেন সেই ক্রুসেডের পর থেকে, এবং সেই লড়াই দিনের পর দিন আরও ঘনবদ্ধ হচ্ছে - ফলে তাদের শেকড়ে থাকার লড়াই অনেক বেশি পশ্চিমের রাজ অর্জন করেছে - তাই পশ্চিম তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। তাঁদের প্রণাম। আমরা বাংলার শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের কারিগর, চাষী, হকার আমাদের মত করে কর্পোরেট বিরোধী লড়াই দিচ্ছি।
ভদ্রবিত্তরা যে ধরণের জ্ঞান আর দক্ষতা চর্চায় আছেন গত ২৫০ বছর ধরে, সেটা মূলতঃ বড় পুঁজি প্রযোজিত, তাতেও কিছু মানুষ, সংগঠন তাদের মত করে ব্যতিক্রমীভাবে চেষ্টা করতেন বিকেন্দ্রিভূতভাবে কাজ করতে - আজ সেই জ্ঞানচর্চাকে সরাসরি গিলে খেয়েছে বড়পুঁজির বিনিয়োগ, ব্যতিক্রম আজ উপে গ্যাছে যাদের প্রধান উদ্দেশ্য শ্রম/মনুষ্য স্থাপনকারী যন্ত্র বানানো তাদের দাপটে। এই গোটা দাসত্ব প্রক্রিয়ার বাহন হল খুনি অত্যাচারী, লুঠেরা প্রযুক্তি আর লোভের কৃষ্টি বাহিত আধুনিকতা।
এই ব্যবস্থা আম-গ্রামীনদের জন্যে ছিল না, আজও নয়, ভবিষ্যতেও থাকবে না। একে ভদ্রবিত্ত প্রাচীনত্ব, মৌলবাদ দাগিয়ে দিলেও মেনে নেব। এডিবির ৪৫০তার প্রকল্পের মধ্যে ৪২০টার কাছাকাছি প্রকল্প হয় বন্ধ না হয় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।
কিন্তু বড় পুঁজি, তার দাসত্ব প্রকল্প আমার পরিচয় কেড়ে নেবার সব রকমের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ফকির-সন্ন্যাসীরা যে লড়াই শুরু করেছিলেন, আজ ভারতের নানান অঞ্চলে যে লড়াই চলছে সেটা চলবে। তাকে প্রগতিবিরোধী বলে আটকানো যাবে না।
No comments:
Post a Comment