হ্যারিংটন বর্ণিত রামমোহন আর অন্যান্য অভিজাতর লড়াই ঔপনিবেশিক বাংগালির ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্ব, এটা নিয়ে বিশদ চর্চাও হয়েছে। আমি(কপিল রাজ) এখানে একটা বিষয় ধরিয়ে দিতে চাই, এই দুই পক্ষের শিক্ষা বিতর্কের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ, লুঠেরা খুনি অত্যাচারী ঔপনিবেশিক পরিবেশের মধ্যে জন্মানো নবতম অভিজাত ভদ্রলোকেরা ইমেজ অব নজেল বলতে কি বোঝেন সেই দ্বন্দ্বটি। আমি পুরোনো মিথিক্যাল ইতিহাস চর্চার মধ্যে না ঢুকে, কলকাতা হিন্দু কলেজের কিছু আগের কিছু সময়ে পরিভ্রমণ করে, ইমেজ অব নলেজ বিষয়টি থিসিসিটি এখানে উপস্থাপন করতে চাইব।
ওই পথে যাওয়ার আগে একটু বিষয়ান্তরে গিয়ে সে সময়ে ব্রিটেনের তুলনায় উপনিবেশের বিজ্ঞানের অবস্থা এবং সে বিষয়ে পড়াবার কি ব্যবস্থা ছিল দেখব, যে সূত্র ধরে কলকাতার (ঔপনিবেশিক) শিক্ষা কেন্দ্রগুলি গড়ে উঠছে। আমরা কোম্পানি আমলের প্রথম দিকের বাংলার ব্রিটিশদের বৌদ্ধিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করব, যারা সে সময়ের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যিক অবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল।
উনবিংশ শতাব্দের প্রথম দিকে ব্রিটিশদের থেকে শিক্ষা
মনে রাখা দরকার কোম্পানির চাকরিতে যে সব কেরানী বা ক্যাডেট কলকাতায় আসত তাদের যোগভাগ করার অঙ্ক এবং সওদাগরি খাতা রাখার শিক্ষা ছাড়া অন্য কিছু শিক্ষা ছিল না, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষা দূরস্থান। পনিবেশের চাকরিতে আসা উচ্চশিক্ষিত যে সব শিক্ষিত ব্রিটিশ কোম্পানির উচ্চলাভের ব্যবসায়িক কাজকর্মর পরে হাতে যতটুকু সময় থাকত সে সময়ে তারা ধ্রুপদী গ্রিক আর ল্যাটিন কৃষ্টি চর্চায় সময় কাটাতেন। ভারতে পা দিয়ে হাতে গোনা কয়েকজন সংস্কৃত, পার্সি এবং আরবি শাস্ত্রে আইনি নানান বিষয়, চুক্তি, এবং শাস্ত্রীয় সময় সারণি নিয়ে সময় কাটাতেন। তবে জ্ঞানচর্চায় বিপুল সুযোগ এল পলাশীর ৪৩ বছর পরে, কলকাতায় কোম্পানির হাতে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ স্থাপিত হওয়ায়। দ্বর্থহীনভাবে এই প্রথম সংস্থা যেটি দেশিয় বাঙালি এবং শাসক ব্রিটিশদের মধ্যে জ্ঞানচর্চার আদান প্রদানের নিয়মিত সুযোগ করে দিল। এই সঙ্গঠনটি দুই শ্রেণীর মধ্যে বিপুল প্রভাব ফেলল শুধু natural and experimental scienceএর শিক্ষা ছাড়া। শাসকদের নজরে বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় নি, বিশেষ করে কলেজের পাঠ্যসূচীতে তার খুব বেশি প্রভাবও ছিল না। natural and experimental philosophy বিষয়ে একমাত্র অধ্যাপক ছিলেন স্কচ নাগরিক জেমস ডিনউইডি(James Dinwiddie)। তাঁর নাম ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাৎসরিক সমীক্ষায় একবারের জন্যেও উল্লিখিত হয় নি এবং এই বাস্তব সত্য আমাদের আলোচনার বিন্দুকে সংহত করে।
মনে রাখা দরকার কোম্পানির চাকরিতে যে সব কেরানী বা ক্যাডেট কলকাতায় আসত তাদের যোগভাগ করার অঙ্ক এবং সওদাগরি খাতা রাখার শিক্ষা ছাড়া অন্য কিছু শিক্ষা ছিল না, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষা দূরস্থান। পনিবেশের চাকরিতে আসা উচ্চশিক্ষিত যে সব শিক্ষিত ব্রিটিশ কোম্পানির উচ্চলাভের ব্যবসায়িক কাজকর্মর পরে হাতে যতটুকু সময় থাকত সে সময়ে তারা ধ্রুপদী গ্রিক আর ল্যাটিন কৃষ্টি চর্চায় সময় কাটাতেন। ভারতে পা দিয়ে হাতে গোনা কয়েকজন সংস্কৃত, পার্সি এবং আরবি শাস্ত্রে আইনি নানান বিষয়, চুক্তি, এবং শাস্ত্রীয় সময় সারণি নিয়ে সময় কাটাতেন। তবে জ্ঞানচর্চায় বিপুল সুযোগ এল পলাশীর ৪৩ বছর পরে, কলকাতায় কোম্পানির হাতে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ স্থাপিত হওয়ায়। দ্বর্থহীনভাবে এই প্রথম সংস্থা যেটি দেশিয় বাঙালি এবং শাসক ব্রিটিশদের মধ্যে জ্ঞানচর্চার আদান প্রদানের নিয়মিত সুযোগ করে দিল। এই সঙ্গঠনটি দুই শ্রেণীর মধ্যে বিপুল প্রভাব ফেলল শুধু natural and experimental scienceএর শিক্ষা ছাড়া। শাসকদের নজরে বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় নি, বিশেষ করে কলেজের পাঠ্যসূচীতে তার খুব বেশি প্রভাবও ছিল না। natural and experimental philosophy বিষয়ে একমাত্র অধ্যাপক ছিলেন স্কচ নাগরিক জেমস ডিনউইডি(James Dinwiddie)। তাঁর নাম ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাৎসরিক সমীক্ষায় একবারের জন্যেও উল্লিখিত হয় নি এবং এই বাস্তব সত্য আমাদের আলোচনার বিন্দুকে সংহত করে।
আমরা যদি ব্রিটিশ আবহাওয়ার কোম্পানির অবস্থা দেখি, তাহলে বুঝব তাদের কাজকর্মে বাড়তে থাকা ধর্মযাজকদের, বিশেষ করে ক্লাফাম গোষ্ঠীর প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছিল। চার্লস গ্রান্টের নেতৃত্বে এই দলটি কোর্ট অব ডিরেক্টরদের মধ্যে বিপুল প্রভাব সৃষ্টি করে। তারা কলকাতার প্রাচ্যবাদীদের তৈরি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বিপরীতে কোম্পানিকে দিয়ে ১৮০৭ সালে লন্ডনের হ্যালিবেরিতে কলেজ তৈরি করাতে সমর্থ হয়। ধর্মযাজকের দৃষ্টিতে ভারত ছিল খ্রিষ্টধার্মিক নানান উপাদান ছড়াবার ক্ষেত্র এবং তারা চাইলেন, the simple elements of our arts, our philosophy and religion ব্যবহার করে হিন্দুদের অনৈতিক অধঃপতিত জীবনযাত্রা থেকে মুক্তি দিতে।
আশ্চর্যের নয় যে the Hindu subjects of Great Britainএর এই ধারণাটি খুব ভাল ভাবে নেয় নি। তারা মনে করলেন হিন্দু উচ্চশ্রেণির স্বচ্ছলদের যত বদগুণই থাকুক, তারা নৈতিক ভাবে অধঃপতিত এটা ভাবা এবং ভাবানোও ঠিক নয়। ফলে ভারতে তারা ধর্মকে বাদ দিয়ে উদার ও নৈতিক শিক্ষাদানের পরিকল্পনা করলেন। অক্সফর্ডের সংস্কৃতের বডিন অধ্যাপক এবং কোম্পানির গ্রন্থাগারিক, আদ্দিসকোম্ব এবং হ্যালিবেরির ওরিয়েন্টাল শিক্ষক এবং ভারতে ইওরোপিয় শিক্ষাদানের অন্যতম পথিকৃত, প্রখ্যাত প্রাচ্যবিদ হোরেস হেম্যান উইলসন লিখলেন, The Hindus will not listen to one who comes amongst them strong only in his own faith and ignorant of theirs. ‘Read these translations’, said a very worthy clergyman to a sect of religionists at Benares, who were already seceders from idolatrous worship, and were not indisposed for argument upon the comparative truth of different creeds. ‘We have no objection to read your books’, was the reply, ‘but we will enter into no discussion of their contents with you until you have read ours.’ This was inconvenient or impracticable, and no further intercourse ensued. This is one instance out of many where precious opportunities have been lost, because the only means of communicating fully with the natives—conversancy not merely with their language but with their literature—has been wanting or incomplete; and with an acute and argumentative people like theHindus you must satisfy them that they are in error before you can persuade them to accept the truth। এবং এই উদ্যমটিও খুব বেশিদূর যায় নি।
কিন্তু একটা ব্রিটিশ কর্মক্ষেত্রে ইওরোপিয় বিজ্ঞানচর্চা খুব সফলভাবে এগিয়ে চলল – সেটা হল নতুন বিজিত ভূমিতে ক্ষমতার ওজন বজায় রাখতে সাধারণ কিন্তু বিশদ মানচিত্র তৈরির সঙ্গে উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা, ভূচিত্রবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, মানুষের এবং পশুদোর ওষুধ, এবং সামরিক আর বেসামরিক প্রযুক্তিবিদ্যা। ব্রিটেনের বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমের শংসা বিতরণের প্রথা অনুসরণ করে, এবং উপনিবেশে এই বিজ্ঞানচর্চার নাম দাঁড়াল ডক্টর্স অব মেডিসিন, এবং স্কটিশ এবং উত্তর ইওরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রথা অনুসরণ করে ডিভিনিটি, এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রমে সফলভাবে পড়ে আসা ছাত্ররা ব্রিটেনের ক্রমশঃ বাড়তে থাকা বিশ্বজোড়া ঔপনিবেশিক সেবায় ক্রমশ ঢুকে পড়তে থাকে প্রযুক্তিবিদ, মিলিটারি কমান্ডার, পশুচিকিতসক, ডক্তার এবং উদ্ভিদিবিদ হিসেবে। মধ্য অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত কোম্পানির একচতুর্থাংশ সেনা আমলা ছিলেন স্কটসম্যান, এবং শতাব্দ শেষে এই সংখ্যাটা অর্ধেক হয়। আমাদের হাতে যতটুকু তথ্য আছের তার সুবাদে বলতে পারি, এই পেশাদারেরা দেশিয় মানুষদের বিজ্ঞান পড়াবার কাজে নিযুক্ত হতেন না; বরং তারা যে সব দেশিয় বিশেষজ্ঞ পেশাদারদের সঙ্গে মিশতেন, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় তারা নতুন জ্ঞান আহরণ করার চেষ্টা করতেন।
কপিল রাজএর রিলোকেটিং মডার্ন সায়েন্স – সার্কুলেশন অব কন্সট্রাকশন অব নলেজ ইন সাউথ এশিয়া ১৬৫০-১৯০০এর অনুবাদ ১৭২ পৃ থেকে
No comments:
Post a Comment