পশ্চিমঘাট পর্বতমালার তিন রাজ্য কেরল, কর্ণাটক এবং গোয়ার গাছগাছড়ার বিবরণ। প্রথম উদ্যমটি নেন মালাবারের ডাচ প্রধান কুঠিয়াল হেন্ড্রিক ভন রিডি(Hendrik van Rheede)। হর্তাস মালাবারিকাস আদতে গড়ে ২০০ পাতাওয়ালা ২০টি নথিকরণের বইএর সমাহার। এতে ৭৯৪টি তামার প্লেটে(ডাচেরা ভারতে জাপান থেকে তামা আনত পাইকারিভাবে) এনগ্রেভিং করা ছবি রয়েছে। প্রথমটি বেরোয় ১৬৭৮ সালে, শেষটি ১৬৯৩। যতসূর সম্ভব এশিয় ছাপা সর্বপ্রথম গাছগাছালির নথিকরণ।
গোয়া থেকে কণ্যাকুমারী পর্যন্ত বিপুল পরিমান গাছের বর্ণনা নথিকরণ করা হয়েছে এতে। ৭৪২টা দেশি প্রজাতির বিশদ বিবরণ রয়েছে এই খণ্ডগুলোয়। প্রজাতিগুলি এই অঞ্চলের পরম্পরার জ্ঞানীদের শ্রেণিবিন্যাস নির্ভর করে রচিত। ল্যাটিন ছাড়া উদ্ভিদের নামগুলি কোঙ্কণি, মালায়ালম, আরবি আর ইংরেজিতে লিখিত হয়েছে। বইটি প্রথম আলোচনা করেন হিস্টোরিক্যাল নোটিসেস অব কোচিনে, টি হোয়াটহাউস ১৮৫৯ সালে।
পুরো ক্ষেত্র সমীক্ষার কাজ করানো হয়েছিল স্থানীয়দের দিয়ে। তারা সেই নথিগুলি এনে দিতেন কোচিনে, কার্মেলাইট ম্যাথায়াস সেগুলি আঁকতেন। প্রথমে মালায়লম এবং পরে কোঙ্কনি(সে সময় ব্রাহ্মণাচি ভাষ নামে পরিচিত ছিল) এবং তারপরে পর্তুগিজ ভাষায় অনুদিত হত। পর্তুগিজে অনুবাদের কাজটা করতেন কোচিনের এমানুয়েল কারনেইরো। সরকারি সচিব হারম্যান ভন ডুয়েপ এটা ল্যাটিনে অনুবাদ করতেন যাতে সারা ইওরোপে বিনাবাধায় পঠিত হতে পারে। গোটা কাজটা শেষ হলে সমগ্র কাজটি যেত আরেক ডাচ চ্যাপলেইন এবং জ্ঞানী ক্যাসিয়ারিয়াসের কাছে, যিনি যতদূর সম্ভব ভ্যান রিডির বন্ধু।
এই কাজটি যে মানুষেরা করেছিলেন - বৈদ্য ইত্তি আচুডেন এবং তিনজন ব্রাহ্মণ রঙ্গা ভাট, বিনায়ক পণ্ডিত এবং অপু ভাট। এছাড়া উদ্ভিদিবিদ্যা নিয়ে কাজ করা অপেশাদার, অধ্যাপকেরাও এর সঙ্গে জড়িয়েছিলেন - যেমন আর্নল্ড সেইন, থিওডোর জানসন, পল; হারম্যান, যোহানস মুন্নিকাস, জোয়ানস কমেলিনাস।
এই কাজে ভ্যানরিডিকে সাহায্য করেন কোচিনের রাজা এবং কালিকটের জামোরন। ভারতীয়দের মধ্যে ছিলেন মালাবারের এজাভা বৈদ্য ইত্তি অচুডেন, থিয়া বৈদ্যন। গোটা কাজটার শংসাপত্র দিয়েছিলেন ব্রাহ্মণ রঙ্গা ভাট, বিনায়ক পণ্ডিত এবং অপু ভাট দুই গোটা বছর সকাল থেকেও রাত পর্যন্ত খেটে।
অধ্যাপক কে এস মণিলাল ৪০ বছরের বেশি হর্টাস মালাবারিকাসের অনুবাদ, গবেষণা এবং ব্যাখ্যা নিয়ে কাজ করছেন। গবেষনা করছেন যাতে ইংরেজিভাষী মানুষ এই বইটার স্বাদ পেতে পারেন।
No comments:
Post a Comment