এনকাউন্টারিং ডেভেলাপমেন্টঃ দ্য মেকিং এন্ড আন্মেকিং অব দ্য
থার্ড ওয়ার্লডঃ আর্তুরো এসকোবারএর বই থেকে
তৃতীয় অধ্যায়
কুরির স্মৃতিচারন আমাদের
আধুনিকতা্র একটি বিশুদ্ধ বিষয় স্মরণ করয়ে দেয়, আমরা বিশ্বকে আমাদের চেনা ছবির মত
করে দেখার চেষ্টা করি। তিনি কলম্বিয়ায় এসে তার সমস্ত ব্যবস্থাকে সমস্যা, অন্ধকার,
বিশৃঙ্খলা হিসেবে দেখার চেষ্টা করছেন। তিনি যে ছবিটা বোঝেন সেটা কলম্বিয়া তার বরাত
মত তৈরি করে নি, সে তার মত করে বেড়ে উঠেছে। উন্নয়ন সমগ্র বিশ্বকে ছবির মত করে
সাজিয়ের তুলতে চায়, যেন একবার চোখ বুলিয়েই সমস্ত কিছুই এঁচে নিয়ে একটা ব্যবস্থা বা
কাঠামোর মধ্যে ফেলে দেওয়া যায়। অর্থনীতিবিদের কাছে ছবিটা তৈরি করে দেয় অর্থনীতির
তত্ত্ব। কুরি যে সব বিশেষজ্ঞ নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা কলম্বিয়াকে তাদের স্মৃতির ছবির
মত করে দেখতে চেয়েছেন; প্যারাডক্স হল তারা সক্কলে কলম্বিয়াকে দেখতে চেয়েছেন একটাই
মাত্র ছবিতে তার নাম অনুন্নত অর্থনীতি; আসল কলম্বিয়া পিছনে অদৃশ্য অবস্থায় থেকে
গিয়েছে। আসলে ছবির মত করে বিশ্বকে সাজানোটাই সমস্ত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল তত্ত্ব।১
কুরি যে সময়ে উন্নয়নের
অর্থনীতির তত্ত্বের অভাবের কথা বলছেন, সেটা অনুভব করেই ১৯৫০এর দশকে ঝাঁকে ঝাঁকে
তত্ত্বের সারি চলে এল। ১৯৭৯ সালে জন কেনেথ গলব্রেথ এই চরিত্র পরিবর্তনের বিষয়ে লিখছেন।
১৯৪৯ সালে হার্ভাড ইউনিভার্সিটিতে বলছেন, in the
economics of poverty and economic development as a different field of study, the special economics of the
poor countries was held not to exist. In the next fifteen years in the United
States these altitudes were decisively reversed. . . . Over a somewhat longer period,
the Ford Foundation contributed well over a billion dollars between 1950 and 1975,
and the Rockefeller, Carnegie, and some CIA-supported foundations added
smaller amounts. . . . Intellectual interest in the problem of mass
poverty had also greatly expanded. Seminars and courses on economic development
had proliferated in universities and colleges across the land. . . . No economic subject more quickly
captured the attention o f so many as the rescue o f the poor countries from their poverty.
. . . To be involved with the poor
countries provided the scholar with a foothold in the field of study that would
assuredly expand and endure.(১৭৭৯, নজরটান এসকোবারের।)।
আমরা ১৯৮০তে উন্নয়নের
অর্থনীতির বিষয়ে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের বিশ্লেষণ দেখব, যারা চল্লিশ বছর
পরে সমালোচকের দৃষ্টিতে এই বিষয়টা দেখছেন। তাদের সুরক্ষিত অবস্থানে বসে কিছু
প্রবীন অর্থনীতিবিদ এই অর্থনীতিকে বিদায় দেওয়ার কথা বললেন - Development economics is dead. May it rest in peace. It was quite exciting while it
lasted, and—in spite of the many serious problems that remain to be solved—it
fared reasonably well in the real world. Let us now be more realistic about our
expectations, recognize the limits of our discipline, and leave behind the
naive dreams of solving the world’s problems once and for all. Let us
turn to the theory that we already know well। এই জ্ঞানচর্চার
প্রথমসারির এক তাত্ত্বিকের বই থেকে ওপরের স্তবকটি তুলে দেওয়া গেল।
উন্নয়নের অর্থনীতির
মৃত্যু এবং পুনর্গঠনের সঙ্গে নব্য-কেন্সিয় অর্থনীতির বিদায় আর নব্যউদারবাদ আবির্ভাবের
অঙ্গাঙ্গী যোগ রয়েছে। ১৯৮০র দশকে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের চাপে তৃতীয় বিশ্বের
দেশগুলি কঠোর অর্থনৈতিক সংস্কার মেনে নিতে বাধ্য হল যেমন আর্থিক এবং মুদ্রা বিনিময়
নিয়ন্ত্রণ, সরকারি উদ্যম ও সেবাগুলির বেসরকারিকরণ, আমদানি কমিয়ে দেওয়া আর
বিশ্ববাজারে অন্তর্ভূক্তি। এই একই ভাবনায় বিশ্বব্যাঙ্ক ১৯৯১ সালে ওয়ার্ল্ড
ডেভেলাপমেন্ট রিপোর্ট প্রকাশ করে, এবং নয়ের দশকে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা
হয়ে দাঁড়ায়। উন্নয়নের অর্থনীতিতে নব্যউদারবাদের মত গোঁড়া বিষয়ের প্রবেশ আদতে পূর্ব
ইওরোপের অর্থনীতিতে মুক্ত বাজারের প্রবেশের মুখড়া হিসেবে কাজ করে। তখন বলা হয়নি সংস্কারের
জন্য মানুষের সাময়িক কিছু সমস্যা হবে এবং জীবনধারণের মান পড়েছে অস্বাভাবিক হারে। মন্ত্রের
মত করে বলে যাওয়া হল, কাঠামোগত ব্যবস্থার সংস্কার চালিয়ে যাওয়া জরুরি। হাজার হাজার
মানুষ মারা গেলেও জনগণের কল্যানকর্ম কিছুদিনের জন্য থামিয়ে দেওয়া হল। বাজারই
স্বর্গ।
পাঁচের আর ছয়ের দশকে
অর্থনীতির কল্যানের জন্য উন্নয়নের অর্থনীতি চর্চকেরা নানান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন
তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে, প্রথমে পরিকল্পনার
উন্নয়নের অর্থনীতির মাধ্যমে, আটের দশকের স্থিতিশীলতা আর সমন্বয়ের নীতিতে এবং নয়ের
দশকে হস্তক্ষেপ বিরোধী বাজার-বান্ধব উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে। এই অধ্যায়ে আমরা আলোচনা
করব সামগ্রিক অর্থনীতি ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে এই প্রতর্কটা কিভাবে এগোতে পারত; কিভাবে এটি শিক্ষা ক্ষেত্রের মধ্যে অর্থনৈতিক
পদ্ধতি, সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে গ্রন্থিবদ্ধ হল; কিভাবে দারিদ্রকে ঐতিহাসিক
সমস্যা হিসেবে দেখিয়ে একটি বিশেষ প্রতর্ক উঠে এল যা একটি নিজেই ঐতিহাসিকতায়
রূপান্তরিত হল; এবং কিভাবে উন্নয়নের অর্থনীতি উন্নয়নকে পরিকল্পনার কলকব্জা দিয়ে
প্রভাবিত করল, যেখান থেকে তার উদ্ভব। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য নয় যে প্রথম দিকের
উন্নয়নের অর্থনীতির তত্ত্বটা ভুল না ঠিক সেটা বিচার, কিন্তু সে কিভাবে ঐতিহাসিক,
জ্ঞানচর্চাগত এবং কৃষ্টিগত সচেতনতা তাকে বিভিন্ন পছন্দ নির্বাচনে সুযোগ করে দিয়েছে
সেটা তুলে ধরা। এটা মনে রাখতে হবে, এমন কি যদি অর্থনীতিবিদেরা এমন একটি প্রতর্কে অংশ
নেন যেটি তার ব্যক্তিগত প্রতীতিতে না উদ্ভুত হয়ে বহু ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতে বিকশিত
হয়েছে, তবুও তারা যে পছন্দের এম্বডিড প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেগুলির সামাজিক এবং
কৃষ্টিগত পরিণতি ছিল।
No comments:
Post a Comment