(ছবিতে বাঁদিকে বালক শাহ শুজা এবং ডান দিকে আওরঙ্গজে)
দ্বিতীয় অধ্যায়
প্রথম জীবন
প্রথম জীবন
এক ভারতীয় শাহজাদার শিশুকাল
আমরা বিশ্বাস করি তার আবির্ভাব এই শাশ্বত রাজপরিবারের ক্ষেত্রে ভাগ্য বয়ে আনবে এবং মঙ্গলজনক হবে – নাতির জন্মোপলক্ষ্যে জাহাঙ্গির
আমরা বিশ্বাস করি তার আবির্ভাব এই শাশ্বত রাজপরিবারের ক্ষেত্রে ভাগ্য বয়ে আনবে এবং মঙ্গলজনক হবে – নাতির জন্মোপলক্ষ্যে জাহাঙ্গির
আওরঙ্গজেব জন্মান ৩ নভেম্বর ১৬১৮ সালে ঠাকুর্দার রাজত্বকালে গুজরাট সুবায়। কয়েক সপ্তাহ পরে আওরঙ্গজেবের পিতা শাহজাদা খুররম(পরে শাহজাহান রূপে খ্যাত) জন্মউতসব পালন করে তার শিশুকে প্রকাশ্যে আনেন এবং বিপুল পরিমান রত্নরাজি রাষ্ট্রীয় তোষাখানায় উপহার দ্যান। তাঁর জীবন এই শুভলক্ষ্মণ উৎসব দিয়ে শুরু হলেও, আওরঙ্গজেব বহুকাল তার পিতার সুদৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হন।
আওরঙ্গজেব শাহজাহানের তৃতীয় সন্তান। তাঁর দুই দাদা দারা শুকো এবং শাজ সুজা এবং এক বছর পরে তার ভাই মুরাদ বক্সের জন্ম হয়। তিনজনই তাঁর সহোদর – শাহজাহানের প্রিয়তমা পত্নী মুমতাজ মহলের মাতৃগর্ভ জন্ম। ভাইদের মত ছোটবেলাতেই আওরঙ্গজেব প্রাতিষ্ঠানিক রাজকীয় শিক্ষা অর্জন করেন, যে শিক্ষায় বহু বৌদ্ধিক এবং সাহিত্যিক পরম্পরা অন্তর্ভূক্ত ছিল।
এই পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত ছিল ইসলামি ধার্মিক পাঠ্যবই, কুরান, হাদিথ(নবির বাণী), এবং ধর্মীয় নেতাদের জীবনী। মুঘল রাজকীয় জ্ঞানচর্চায় অন্তর্ভূক্ত ছিল ফারসি ধ্রুপদী পাঠ্যগুলি – বিশেষ করে আজও যে সব প্রখ্যাত কবি স্মৃত হন যেমন সাদি, নারিরুদ্দিন তুসি এবং হাফিজএর লেখা কবিতা। শোনা যায় আওরঙ্গজেব প্রিয় পাঠ্যছিল রুমির মসনভি। ফার্সি ধ্রুপদী পাঠ্যগুলি শাহজাদা আওরঙ্গজেবের নৈতিক এবং মূল্যবোধের ভিত্তি, বিশেষ করে তাদের ভাবধারা এবং নৈতিক বিচারের ভূমিকা, আদাব, আখলক এবং রাজকীয়তা তৈরি করে দ্যায়।
একই সঙ্গে আওরঙ্গজেব হয়ত বিভিন্ন সংস্কৃত পুথির ফারসি অনুবাদ যেমন রামায়ন মহাভারত অবশ্যই পড়ে থাকবেন। এই দুটি মহাকাব্যের অনুবাদ করান আওরঙ্গজেবের প্রতিতামহ আকবর। আমরা জানি আকবর মনে করতেন রাজকীয় শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না যদি শাহজাদারা মহাভারত না পড়েন। ছোটবেলা থেকেই আওরঙ্গজেব ঝরঝররে হিন্দি বলতে পারতেন, এবং তিনি চতুর্থ প্রজন্মের শাহজাদা হিসেবেই হিন্দি বলা শিখেছিলেন। আওরঙ্গজেব হিন্দির নানান সাহিত্য ভালভাবেই জানতেন, হিন্দির পূর্ব ভাষা ব্রজভাষায় যে সব পাঠ্যছিল সেগুলোও তিনি পড়েন। মুঘল রাজকীয় জ্ঞানচর্চায় এই পাঠগুলি ছাড়াও ছিল তরোয়াল, খুকরি, বন্দুক, সামরিক কৌশল, এবং প্রশাসনিক দক্ষতা শিক্ষা।
No comments:
Post a Comment