(ছবিতে উদীপুরী মহল)
মৃত্যুপথযাত্রী সম্রাট
Too great is the grief of this world, and I have only one heart bud—
how can I pour all the desert’s sand into an hourglass?
- আওরঙ্গজেব
Too great is the grief of this world, and I have only one heart bud—
how can I pour all the desert’s sand into an hourglass?
- আওরঙ্গজেব
তার শেষ বয়সটার সমগ্র অংশ যুদ্ধ ক্ষেত্রে কাটিয়ে দিয়েও সম্রাট আওরঙ্গজেব তার জীবন দর্শন এবং মুঘল রাষ্ট্রের ভবিষ্যত নিয়ে নিয়মিত লিখে গিয়েছেন। সম্রাট হিসেবে তিনি সমগ্র দাক্ষিনাত্য দৌড়েবেড়ানোর মধ্যেই তার সেনাপতি, সাম্রাজ্যের আমলা এবং বহু পারিবারিক সদস্যকে নিয়মিত চিঠি লিখছেন। অসংখ্য এই চিঠিগুলির মধ্যে মানুষটার অন্তঃস্থল, জীবন সম্বন্ধে তার অনুশোচনা, ভারতের ইতিহাসে তার স্থান এবং মুঘল সাম্রাজ্য নিয়ে তার অগুনতি চলমান পরীক্ষানিরীক্ষাসহ নানান ভাবনার রেশ পাই।
শেষ বয়সে তারে জীবনের দুঃখগুলো ছিল খুব দৈনন্দিন এবং বড্ড মানবিক। তার লেখায় বার বার তার প্রিয় ফল আমের কথা উঠে এসেছে। আম বরাবই মুঘলদের খুব প্রিয় ফল – এবং সেই চিন্তা বাবরের স্মৃতিকথাতেও পাচ্ছি When the mango is good it is really good। আওরঙ্গজেব দাক্ষিনাত্যের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া পুত্র আর আমলাদের তাকে আম পাঠাবার কথা বলতেন, এবং যখন তার কাছে সেগুলি পৌঁছত তিনি অসম্ভব খুশি হয়ে উঠতেন। তিনি বহু অজানা প্রজাতির দেশি শব্দে নাম রেখেছিলেন যেমন সুধারস, রসনাবিলাস ইত্যাদি। তবে আমের ঝুড়ি যদি নষ্ট হয়ে যেত উনি খুব রাগ করতেন।
তাঁর লেখায় বার বার তার যৌবনকালের, পরিবারের সঙ্গে আনন্দে কাটাবার সময় বার বার ফিরে ফিরে এসেছে। ১৭০০ সালে শাহজাদা আজমকে লেখা এক চিঠিতে তিনি তাঁর বাল্যাবস্থার স্মৃতি উল্লেখ করছেন, যেখানে তিনি রাষ্ট্রীয় বাজনার তালে তালে বাবাকে দেশিয় ভাষায় ডেকে বলছেন, বাবাজি, ধুম, ধুম। শেষ বয়সে তিনি স্ত্রী উদীপুরীর সঙ্গ খুব উপভোগ করেছেন। উদীপুরী কামবক্সের মা, এবং উল্লেখযোগ্য তিনি একজন সঙ্গীতকারও বটে। মৃত্যু শয্যায় কামবক্সকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলছেন, উদীপুরী তাঁকে মৃত্যু শয্যায় লালপালন করছেন সঙ্গ দিয়ে, তাই মৃত্যুর পরে তিনি তাঁকে সঙ্গে দেবেন। আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর কিছু মাস পরে গ্রীষ্মে উদীপুরী মারা যান।
তাঁর জীবনের পিছন ফিরে বহুবার তাকিয়েছেন, কিন্তু তিনি যখন তার শেষ বয়সকে দেখছেন, তখন তার সইব কিছুই যেন পছন্দ হচ্ছে না।
---
শেষ বয়সে আওরঙ্গজেব তার সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন, এবং তার যথেষ্ট কারণও ছিল। চলতে থাকা বিপুল আর্থিক এবং প্রশাসনিক সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তিনি একজনকেও দেখছেন না যে তার তৈরি করা সমস্যার সমাধান করতে পারে।
---
শেষ বয়সে আওরঙ্গজেব তার সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন, এবং তার যথেষ্ট কারণও ছিল। চলতে থাকা বিপুল আর্থিক এবং প্রশাসনিক সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তিনি একজনকেও দেখছেন না যে তার তৈরি করা সমস্যার সমাধান করতে পারে।
মৃত্যুর সময় তিনপুত্র বেঁচেছিলেন(দুজন বাবার আগেই মারা গিয়েছিলেন) তাদের কারোর সম্রাট হবার যোগ্যতা ছিল না। অষ্টাদশ শতকে লেখা চিঠিতে তিনি তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মুয়াজ্জমকে তীব্রভাবে বকছেন কান্দাহার দখল না করতে পারার জন্যে – তিনি লিখলেন A daughter is better than an unworthy son। চিঠি শেষে মুয়াজ্জমকে লিখছেন, How will you show your face to your rivals in this world and to the Holy, High, and Exalted God in the next?
No comments:
Post a Comment