(ছবি - সসৈন্যে শিবাজী)
আওরওঙ্গজেব তার শাসন কালের শেষ বছরগুলোতেও মুঘল আমলা নিয়োগে সচেতনভাবে অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গীর অনপনেয় উদাহরণ পেশ করবেন (যদিও প্রখ্যাত ঐতিহাসিকেরা এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য তুলে ধরতে ব্যর্থ – যদুনাথ সরকার আহকমইআলমগিরিতে স্পষ্টভাবে বলছেন আওরঙ্গজেব নাকি এক কলমের খোঁচায় বহু হিন্দু আমলা ছেঁটে দেন - অনুবাদক)। ১৬৮০ সালে বুখারা থেকে কাজের খোঁজে আগত এক মুসলমান আমলা স্বয়ং সম্রাটকে আবেদন করে লেখেন, আমলাতন্ত্রে উচ্চপদে পারসিদের উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করা দরকার এই কারণে যে তারা মূলতঃ শিয়া, সুন্নি গোষ্ঠীভুক্ত নন। আমলাটির এই জাতিবাদী ধারনা প্রত্যাখ্যান করে আওরঙ্গজেব লেখেন, What connection have earthly affairs with religion? And what right have administrative works to meddle with bigotry? ‘For you is your religion and for me is mine.’ If this rule [suggested by you] were established, it would be my duty to extirpate all the (Hindu) Rajahs and their followers. Wise men disapprove of the removal from office of able officers।
মারাঠা এবং রাজপুত প্রতিরোধ
A governorship from Delhi is like an enticing prostitute.
Seeing her beauty, who doesn’t long to possess her?
Her manner is to conquer the world by the power of trickery.
Whomever she approaches she immediately renders penniless.
Bhushan says, spending time in her company brings no reward.
- শিবাজীর দরবারের কবি ভূষণ ত্রিপাঠি, ১৬৭৩
A governorship from Delhi is like an enticing prostitute.
Seeing her beauty, who doesn’t long to possess her?
Her manner is to conquer the world by the power of trickery.
Whomever she approaches she immediately renders penniless.
Bhushan says, spending time in her company brings no reward.
- শিবাজীর দরবারের কবি ভূষণ ত্রিপাঠি, ১৬৭৩
সব হিন্দু অভিজাতর আওরঙ্গজেবের সঙ্গে সখ্যতার সম্বন্ধ ছিল না। রাজপুতেদের সঙ্গে মুঘলদের খুব পুরোনো সম্পর্ক, কিন্তু আকবরের সময় থেকে তারা যখন মুঘল সেবায় ঢুকেছে তখন থেকেই নিয়মিত রাজস্থানে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছে। ওদিকে দক্ষিণে মারাঠারাও মুঘলদের পক্ষেও কাজ করেছে, বিরুদ্ধ পক্ষ হিসেবে বিদ্রোহও করেছে মুঘল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।
শিবাজী ভোঁসলে আওরঙ্গজেবের সাম্রাজ্য বিস্তারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। শিবাজী নিজে মারাঠা যোদ্ধা, এবং স্বনির্বাচিত রাজা। তিনি নিচুজাতে জন্মান এবং তারপরে ব্রাহ্মণদের নানান আচার ক্রিয়াকর্ম পার হয়ে রাজপুত হিসেবে গণ্য হলেন – যাতে তিনি নিজে স্বাধীন রাজ্য তৈরি করতে পারেন(শিবাজীর এই রাজপুত সংযোগ আমরা কেউ বলি না)। শিবাজী ক্রমশঃ আওরঙ্গজেবের সামনে বিপুল সমস্যা তৈরি করে চলেন এবং মুঘল সম্রাট দশকের পর দশক জুড়ে অসফল ভাবে তার তৈরি সাম্রাজ্যের ওপর মারাঠা আঘাত রুখবারে চেষ্টা করে গিয়েছেন।
আওরঙ্গজেব সিংহাসনে বসার আগেই শিবাজীর চরিত্র জানতেন। আজকের পুনের আশেপাশে পশ্চিম দাক্ষিনাত্যে ১৬৫০এর দশকে নিজের রাজ্য স্থাপনের উদ্যমী ভূমিকা নিয়েছিলেন শিবাজী। কিন্তু ১৬৫৭ সালে আওরঙ্গজেব যখন থেকে শাহজাহানের দাক্ষিণাত্য দখলের পরিকল্পনা রূপায়ণ করছেন, তখন থেকে আওরঙ্গজেব শিবাজির মুখোমুখি হন। যখন আওরঙ্গজেব উত্তরভারত ত্যাগ করে দক্ষিণভারত দখল করতে এলেন, তখন সেই সুযোগে শিবাজী দাক্ষিণাত্যে তার সাম্রাজ্য বারাবার কাজ করা শুরু করেন।
১৬৬০ দশক জুড়ে শিবাজীর বাহিনীতে ১০ হাজার ঘোড়সওয়ার আর ৫০ হাজার সেনা মুঘল আধিপত্য রোধে তৎপর হয়ে মুঘল ঘাঁটিগুলি আক্রমন করে চলেছে। উপমহাদেশে গেরিলা যুদ্ধে শিবাজীর সমকক্ষ খুব বেশি সেনাপতি ছিলেন না। ছোট ছোট বাহিনী নিয়ে তিনি বিপুল বিশাল জরদ্গব মুঘল বাহিনীকে উত্যক্ত করে চলতেন। আমি এর আগেই বর্ণনা করেছি কিভাবে তিনি হাতে গোনা অনুগামী নিয়ে ১৬৬৩ সালে সায়েস্তা খানের প্রাসাদে ঢুকে তার বহু স্ত্রী এবং পুত্র হত্যা করেন(সমস্যা হল শিবাজী সাম্রাজ্য বিস্তারে বিরোধীপক্ষকে হত্যা করেছেন আর আওরঙ্গজেবও সাম্রাজ্য বিস্তারে তার বিরোধীদের হত্যা করেছেন। অথচ আপনার কাছে শিবাজী দেশপ্রেমিক আর আওরঙ্গজেব নিছক ধর্মান্ধ হত্যাকারী - অনুবাদক)। ১৬৬৪ সালের জানুয়ারি মাসে শিবাজী পশ্চিম উপকূলের দুলক্ষ মানুষের বসতিওয়ালা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর সুরাট আক্রমন করে গোটা শহর লুঠ করেন এবং ভীত মুঘল শাসক নিজেকে অদূরের দুর্গে বন্দী করে রেখে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
No comments:
Post a Comment