(ছবিতে চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ)
দক্ষ প্রখ্যাত হিন্দু অভিজাতরা
O King, may the world bow to your command;
May lips drip with expressions of thanks and salutations;
Since it is your spirit that watches over the people,
Wherever you are, may God watch over you!
- চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ, আওরঙ্গজেবের প্রশাসনের মুন্সি। ফারসিতে লেখা কবিতা।
May lips drip with expressions of thanks and salutations;
Since it is your spirit that watches over the people,
Wherever you are, may God watch over you!
- চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ, আওরঙ্গজেবের প্রশাসনের মুন্সি। ফারসিতে লেখা কবিতা।
আওরঙ্গজেবের সময়ের বিপুল আমলাতন্ত্রে বেশ ভাল পরিমান পদ হিন্দুদের দখলে ছিল। প্রশাসনে তাদের উন্নতিরও বেশ সুযোগ ছিল। আকবরের সময় থেকেই রাজপুতেরা এবং অন্যান্য হিন্দু পুরো সময়ের জন্যে প্রশাসনিক সেবায় প্রবেশ করে। মুসলমান সহকর্মীদের মতই তারা সক্কলে মনসব পদে বৃত হত। বৃদ্ধি পেতে থাকা সাম্রাজ্যের জন্যে প্রয়োজন ছিল বিপুল বিশাল সেনা বাহিনী। তাই গোটা সাম্রাজ্যের পদই সেনা বাহিনীর পদের নামে তৈরি হয়। মুসলমানেরা মুঘল অভিজাতদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। তবে ক্রমশ হিন্দুরাও নানান উচ্চপদে রাষ্ট্র ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহন করার জন্যেও বিবেচিত হতে লাগল। প্রায়োগিক কৌশল হিসেবে আওরঙ্গজেব মুঘল আমলাতন্ত্রে হিন্দুদের অন্তর্ভূক্ত করেন দাক্ষিণাত্যের হৃদয়, মন এবং বিপুল বিশাল এলাকা দখল করার জন্যে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে আওরঙ্গজেব তার উচ্চপদের আমলাদের ধার্মিক চরিত্র বিষয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতেন না। তিনি তাদের বাছতেন প্রাথমিকভাবে প্রশাসনিক কাঠামো চালাবার দক্ষ কর্মচারী হিসেবে।
যখন শাহজাহানের পুত্ররা সিংহাসনের লড়াইতে পরস্পরের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রত(১৬৫৭-৫৯), মুঘল প্রশাসনের হিন্দু আমলারা আওরঙ্গজেব এবং দাদার শিবিরে বিভক্ত হয়ে যান। অধিকাংশ রাজপুত দারার পাশে দাঁড়ায় আর মধ্য সপ্তদশ শতকে মুঘল প্রশাসনে যথেষ্ট বড় শক্তি হয়ে ওঠা অধিকাংশ মারাঠা আওরঙ্গজেবের শিবিরে জড়ো হয়। ন্যুনতম পদের ওপরে অর্থাৎ এক হাজারি মনসদবদারের ওপরে ২১জন আওরঙ্গজেবের সঙ্গে যুদ্ধ করে এবং চব্বিশ জন দারার সঙ্গে। অন্য ভাষায় আওরঙ্গজেব এবং দারা মোড়ামুটি সম সংখ্যক হিন্দু অভিজাতর আনুগত্য অর্জন করে।
হিন্দু মসলমান নির্বিশেষে, মুঘল আমলাতন্ত্রের সামগ্রিক দৃষ্টিতে সিংহাসনের লড়াইতে আওরঙ্গজেব ছিলেন প্রথম পছন্দের। মুঘল দরবারের অন্যান্য আমলা(যারা যুদ্ধে অংশ নেয় নি যেমন চন্দ্রদ্রভান ব্রাহ্মণ) তাদের কাছে আওরঙ্গজেবের জেতা একটি গ্রহণযোগ্য স্বাভাবিক সমাধান হিসেবে গণ্য হত,, যা মুঘল রাষ্ট্রের ভিত্তিভূমির স্থায়িত্বকে বিঘ্নিত করে না।
প্রাথমিকভাবে আওরঙ্গজেবের সিংহাসনে আরোহন, আমলাতন্ত্রে হিন্দুদের অবস্থান কিছুটা হলেও পরিবর্তন আনে। উদাহরণস্বরূপ আকবরের সময় আমলাতন্ত্রে মুঘল আমলাদের সংখ্যা ছিল ২১.৫ শতাংশ। এই পরিমান শাহজাহান এবং আওরঙ্গজেবের প্রথম ২১ বছরের(১৬৫৮-৭৯) রাজত্বে ভাল বা খারাপ কোন অভিমুখেই যায় নি। পরিমানিটা ছিল প্রায় এক ২১.৬ শতাংশ। কিন্তু ১৬৭৯ থেকে ১৭০৭ পর্যন্ত মুঘল আমলাতন্ত্রে হিন্দু অভিজাতরা প্রায় অর্ধেকে গিয়ে পৌঁছয়। মুঘল আভিজাত্যে হিন্দুদের পরিমান দাঁরায় ৩১.৬ শতাংশ। এই বিপুল বিস্তারের কারণ হল মারাঠা আমলাদের অংশগ্রহণ। সচেতনভাবে এই কাজটা আওরঙ্গজেব করেছেন দাক্ষিণাত্যের বিপুল অংশে প্রভাব বাড়াবার কাজ করার লক্ষ্যে।
মুঘল সাম্রাজ্যে হিন্দু আমলাদের বর্ণনা শুধু সংখ্যা আলোচনায় শেষ করা যাবে না বরং তাদের অনেকের মধ্যে যেমন রঘুনাথএর ব্যক্তি জীবনের গল্পগুলি জানা বোঝা খুব গুরুত্বপুর্ণ।
No comments:
Post a Comment