আওরঙ্গজেব মনে করতেন না যে তিনি তার নালায়ক পুত্রদের অযোগ্যতার সাম্রাজ্যিক ভার তার কাঁধে বহন করে চলেছেন। Munis Faruqui(প্রিন্সেস অব দ্য মুঘল এম্পায়ার ১৫০৪-১৭১৯) খুব সুন্দরভাবে বলছেন কিভাবে আওরঙ্গজেব শাহজাহাদের রাজকীয় জীবনযাত্রায় অসমিচীন হস্তক্ষেপ করতেন এবং রাজকীয় আটোনমিতেও কাটছাঁট করেছিলেন। ১৭০০ নাগাদ তিনি তার পুত্রদের ছেড়ে নাতিদের পছন্দ করতে শুরু করেন, ফলে ক্ষমতা দখলের লড়াইতে পুত্রদের অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়। শাহজাদাদের তুলনায় তিনি বহু ক্ষেত্রে অভিজাতদের বেশি গুরুত্ব দিতেন। প্রধান উজির এবং সেনাপতি জুলফিকার খানকে দিয়ে ১৬৯৩ সালে জিঞ্জিতে মারাঠা রাজারামের সঙ্গে জোট করার অভিযোগে কামবক্সকে গ্রেফতার করান। আওরঙ্গজেবের শেষ ইচ্ছেই তিনি তিন পুত্রকে রাজ্যভাগ করে দিয়ে আসদ খানকে নির্দিষ্ট কাজের অসীম দায়িত্ব দিয়ে যান।
মুঘল শাহজাদারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম রাজপরিবারে নিজেদের অবস্থা এবং তাদের সিংহাসনের দাবি জোরদার করতে বহু পরম্পরার সমাজকে অবিভক্ত মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত করিয়েছেন। সিংহাসনের লড়াই আদতে মুঘল সাম্রাজ্যের টিকে থাকার বড় কারণ শাহজাদাদের অতিসক্রিয়তা। বিপরীতে আওরঙ্গজেব মুঘল সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ সম্রাট, তার পুত্রদের নখ দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছিলেন ফলে যখন অবস্থা দাবি জানাল তখন তারা অবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারল না।
---
নিজের পুত্রদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলছেন না, অন্যভাবে বলতে গেলে তাঁর উত্তরাধিকারী তিনির প্রশ্নকে গুরুত্বই দেন নি, এটা মুঘল সাম্রাজ্যের বিপুল ক্ষতি করেছে। এছাড়াও আরও অনেক গুরুত্বপুর্ন বিষয় পুত্র, নাতিদের উদ্দেশে যে সব ভাবনা প্রকাশ করে লেখা চিঠি থেকে উদ্ধার করি, সেখানেও দেখতে পাই কিভাবে তিনি মুঘল সার্বভৌমত্বকে দেখেছেন।
---
নিজের পুত্রদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলছেন না, অন্যভাবে বলতে গেলে তাঁর উত্তরাধিকারী তিনির প্রশ্নকে গুরুত্বই দেন নি, এটা মুঘল সাম্রাজ্যের বিপুল ক্ষতি করেছে। এছাড়াও আরও অনেক গুরুত্বপুর্ন বিষয় পুত্র, নাতিদের উদ্দেশে যে সব ভাবনা প্রকাশ করে লেখা চিঠি থেকে উদ্ধার করি, সেখানেও দেখতে পাই কিভাবে তিনি মুঘল সার্বভৌমত্বকে দেখেছেন।
১৬৯১ দশকের শেষের দিকে একটা চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে বড় ছেলে আজম শাহর পুত্র বিদর বখতকে লেখা, সেখানে তিনি স্পষ্ট বলছেন কিভাবে রাজপুরুষদের জীবনযাত্রাকে ঢেলে সাজাতে হয় এবং কিভাবে শাসন করতে হয়। তিনি বলছেন সক্কালে উঠে জল খাওয়ার আগে নামাজ এবং কোরাণ পাঠ করতে। তিনি আরও বলছেন, রোগ সারাতে এবং সুস্থ থাকতে এই আচারটি সম্পন্ন করে যেন জল পান করেন নিয়মিত। এছাড়াও আকবরের সময়ের মুঘল নানান প্রথা প্লান করার নির্দশ দিচ্ছেন - যেমন বিশেষ করে সোনারূপায় নিজেকে ওজন করে সেই অর্থ গরীবদের বিলিয়ে দেওয়ার প্রথা। এটা যে প্রাচীন হিন্দু প্রথা তিনি সেটাও মেনে নিচ্ছেন, Although weighing one’s entire body against gold, silver, copper, grain, oil, and other commodities is not a practice of our ancestral lands or of the Muslims here [in India], nonetheless the practice greatly benefits many needy and poor people। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শাহজাহান বছরে দুবার নিজেকে ওজন করাতেন কিন্তু তিনি বিদরকে বলছেন এই কাজটা বছর ১৪ বার করতে। এর আগে আমরা উল্লেখ করেছি, প্রথম দশকে তিনি নিজেকে ওজন করালেও পরের দিকে এই প্রথা থেকে বেরিয়ে আসেন – কিন্তু চ্যাপলেইন ওভিঙ্কটন জানাচ্ছেন আওরঙ্গজেব কিন্তু এই কাজটা করেই গিয়েছেন। তিনি মনে করতেন এই হিন্দু প্রথাটি মুঘল পরম্পরা হয়ে উঠেছে, যদিও তিনি নিজে এটি ব্যক্তিগতভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment