১) ইন্ডাসস্ট্রির উদ্বৃত্ত তৈরি করে উপনিবেশে বিক্রি করা প্রয়োজন(১৯৫২ সালে ফোর্ড ফাউন্ডেশন ভারতে এসে বলেছিল আপনারা ইন্ডাস্ট্রি করবেন ভাল কথা, আপনাদের উপনিবেশ কই সেখানে আপনারা উতপাদিত দ্রব্য বিক্রি করবেন?)। পলাশির পর সারা বিশ্বে উপনিবেশ তৈরি হয় ব্রিটিশ/ইওরোপিয় ইন্ডাস্ট্রির অতিরিক্ত উৎপাদন বিক্রি করতে। সেই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমে গড়ে উঠল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজ। ইন্ডস্ট্রিয়াল সমাজ তার নাগরিক (শব্দটা দেখুন নাগরিক - গাঁইয়া নয়) জীবনযাত্রা আর যাপন তৈরির জন্য সমাজের প্রচুর উদ্বৃত্ত মানুষ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দেয় - যাতে শুধু প্রোডাক্টিভ মানুষ যারা কারখানায় কাজ করতে পারে - উদ্বৃত্ত তাদের জন্যই ব্যয়িত হয়। সেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজের একটি পেশা হিসেবে খেলা ব্যবস্থাটা গড়ে উঠেছে ইন্ডস্ট্রিয়াল খেলা হিসেবে - একটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজের খেলাকে পেশা নিয়ে একটা মানুষ যখন বেড়ে ওঠে তখন সেই বেড়ে ওঠার মধ্যে রাষ্ট্রীয় এবং কর্পোরেট লুঠ করার পর উদ্বৃত্ত ব্যবস্থাপনার একটা গল্প থাকে। যে রাষ্ট্রে উদ্বৃত্ত যথেষ্ট নেই সে সমাজ একটা দুটোতে - যেমন দূর দৌড়ে আফ্রিকার কিছু সাব-সাহারান দেশ বা হকিতে ভারত পাকিস্তান হয়ত সোনা ইত্যাদি আনে কিন্তু অন্যান্য আরও খেলাগুলোয় আর পেরে ওঠে না কারণ সেই কাঠামো তৈরি করার জন্যে যে পদ্ধতিতে যতটা উদ্বৃত্ত তৈরি করা প্রয়োজন, সেটা রাষ্ট্র করে উঠতে পারে না।
২) যে খেলাগুলো আজ আমরা আন্তর্জাতিক স্তরে দেখি সেগুলো সব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজের খেলা ধুলো। ফলে আমরা যারা প্রাক্তন উপনিবেশ, যারা বিভিন্ন দেশে লুঠের রাজত্ব তৈরি করতে পারি না, তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্তরের খেলার অনুষ্ঠানে ভিড় বাড়াবার কাজ করি অলসো রান হিসেবে। মাঝে মধ্যে একজন দুজন একবার দুবার পদক পায়, তাই নিয়ে নাচানাচি চলে।
৩) এ ছাড়াও যে খেলাগুলো আমরা যারা প্রক্তন উপনিবেশে থেকে শিখেছিলাম যেমন ফুটবল, বা হকি, সেগুলোর কয়েকটাতে আমরা হয়ত বেশ ভালই করতাম আমাদের মত করে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজ যখন বুঝল যে সেই খেলাতে আমরা বেশ কিছুটা দক্ষতা অর্জন করে ফেলেছি, তারা তাদের মত করে নিয়ম পাল্টে দিল - আস্ট্রোটার্ফ এল বা বুট এল বা অফসাইডের নিয়ম বদল হল, যে নিয়মে খাপ খাইয়ে নিতে যে অতিরিক্ত শারিরীক সক্ষমতার প্রয়োজন হয়, সেটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজের উদ্বৃত্ত তৈরি করে দিতে পারে।
৪) ভারত এই গেমসে অনেকটা পেরছে কারণ তার কর্পোরেটরা এশিয়ার বিভিন্ন দেশে লুঠ করে সেই উদ্বৃত্ত তৈরি করছে - এবং নিজেদের দেশেও আভ্যন্তরীন উপনিবেশ তৈরি করেছে। চিন যেটা দেংএর পরে নিজের দেশে আর এশিয়া জুড়ে পরে অন্যনায় দেশে আস্তে আস্তে করেছে।
No comments:
Post a Comment