প্রমিত ভাষা,কৃত্রিম, ব্যকরণ নির্ভর, গবেষণাগারে তৈরি এবং সরাসরি শেকড় থেকে বিচ্যুত করে আকাশকুসুমাস্তীর্ণ ঔপনিবেশিক ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে কোন এক কল্পিত ভদ্রলোকবিশ্ব প্রণোদিত সাজানোগোজানো কেন্দ্রিভূতভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য, কাদা মাটি খোলা হাওয়া মাখা বহুল বৈচিত্র্যকে ঘেন্না করা, সব্বাইকে এক ছাঁচে ঢেলে সাজাবার এক জাতি, এক ধর্ম, এক ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার সাম্রাজ্যবাদী জাতিরাষ্ট্রীয় প্রকল্পের একটি ক্ষুদ্র অংশ।
এর সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠা ভিন্ন ভিন্ন লব্জের ভাষা বৈচিত্রের সম্পদের তুলনাই চলতে পারে না। আমরা ভদ্রলোকেরা চিরকালই নিজেদের উপনিবেশের শর্তেই, উপনিবেশের কৃষ্টিতে, ভাষায়, অর্থনীতিতে গড়ে পিটে নিতে ভালবাসি। অস্বাভাবিক দাসত্বকে স্বাভাবিকতার মোড়ক দিই।
আমরা আজ যারা ভদ্রবৃত্তেই ঘোরাফেরা করি, অধিকাংশ প্রত্যেকেই কোন না কোন জেলা থেকে উতপাটিত হয়ে এসে ক্ষমতার কেন্দ্রে কেউ আলগা কেউবা গভীরভাবে জুড়ে বসেছি - তাদের ছোটবেলা থেকেই নানান সাম্রাজ্যবাদী সূত্র আত্মীকরণ করিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার একাংশ, জিভে বসে থাকা দৈনন্দিনের জেলার লব্জকে প্রমিত এবং সাম্রাজ্যবাদী ভাষায় দেওয়ার চোখে দ্যাখা যায় না, এমন একটা অহিংস পদ্ধতিতে খোল নলচে বদল আনার প্রক্রিয়ার মত্ত হাতি চালিয়ে দেওয়া হয়, যাতে স্বাভাবিকভাবে জিভে বসে থাকা মাটির গন্ধ চেঁছে তুলে, বিকেন্দ্রিভূত সমাজের সূত্র, পরবীয় রূপ-রস, মায়ের দুধের স্বাদ, পুষ্টি ধ্বংস করে দিয়ে উপনিবেশের নানান শর্তের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে, একাভিমুখী রাস্তায় বেঁধে ফেলা যায় - তার ফেরার পথ খোলা থাকে না।
ভদ্রবৃত্ত চিরকালই দাসত্বকে মুক্তি ভেবে এসেছি।
No comments:
Post a Comment