George Basalla, ‘The Spread of Western Science’ থেকে
প্রথমত ইওরোপ ব্যবসা, স্বীকৃতি, দখলদারি আর ঔপনিবেশিকতা নিয়ে নতুন বিশ্ব পৌঁছল। নতুন বিশ্বের 'অ-বৈজ্ঞানিক' সমাজকে তারা দেখল 'বৈজ্ঞানিক' তথ্যের সূত্র হিসেবে(source of scientific data)। গোটা দেশটা সমীক্ষা করে মানচিত্র তৈরি করে, ধাতু, জীব বৈচিত্র্য ইত্যাদির তথ্যভাণ্ডার তৈরি ক্রে। তার প্রথম উদ্দেশ্যই হল উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে প্রকৃতি লুঠ 'the systematic exploitation of nature'। প্রথমে শুরু হল botany zoology তার পরে astronomy, geology and geography জ্ঞানচর্চা। প্রকৃতির সঙ্গে চলল তথ্য আর জ্ঞান লুঠ। আধুনিক বৈজ্ঞানিক সংস্কৃতির বাহক ইংলন্ড, হল্যান্ড বা ফ্রান্সের মত দেশ উপনিবেশের জ্ঞানগুলি আদৌ বিজ্ঞান কি না, বিজ্ঞান হলে কোন কোনটা বিজ্ঞান তাও বলে দিল এবং যেগুলি বিজ্ঞান সেগুলি প্রশংসা, মূল্যায়ন, এবং ব্যবহার করে নিজেরাও কিছুটা পাল্টে গেল।
দ্বিতীয় স্তরে শুরু হল ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির যুগের। সে সময় স্থানীয়রা ঔপনিবেশিক বিজ্ঞানকে আত্মীকরণ করে নিচ্ছে। কিছু বৈজ্ঞানিক জন্ম নিচ্ছে আর বৈজ্ঞানিক সংস্থাও তৈরি হচ্ছে, নানান ধরণের বৈজ্ঞানিক কাজকর্ম শুরু হচ্ছে। একে একে প্রত্যেকটা জ্ঞানচর্চা ক্ষেত্র দখল করে নিচ্ছে ইওরোপিয় ধরণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানচর্চা। ইওরোপিয় বিশেষজ্ঞরাও সমস্ত ক্ষেত্রে ছেয়ে গেল। গোটা দেশিয় নব্য বৈজ্ঞানিক কাঠামো পিঠ এলিয়ে দিল সাগরপারের কাঠামো নকল করতে। এই নকল করার একমাত্র শর্ত হল এই সব দেশে যারা বৈজ্ঞানিকরূপে পেশাদার হয়ে উঠতে চায় তাদের শিক্ষা মেট্রোপলিটনেই হবে। এবং ইওররোপই ঠিক করে দেবে কোন বৈজ্ঞানিক চর্চা কোন পথে হবে তার রূপরেখাটি। উপনিবেশ স্বাধীনতার পরেও সেই ঔপনিবেশিক কর্মকাণ্ডের রেশ চলতে থাকবে। কিন্তু উপনিবেশের কালো বৈজ্ঞানিকদের পক্ষে খুব সহজে মেট্রোপিলিটনের সঙ্গঠনগুলিতে প্রবেশের শর্ত খুব সহজ হবে না। কোনও দিন তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না।
তৃতীয় স্তরে মেট্রোপিলিটনে যে সব 'বৈজ্ঞানিক' প্রশিক্ষিত হয়ে দেশে ফিরে এসে ইওরোপিয় বিজ্ঞানের সূত্র ধরে স্বাধীন বৈজ্ঞানিক পরম্পরা যা আদতে জাতীয় বিজ্ঞান আন্দোলনের সূচনা করবেন। উপনিবেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা হয়ত বৈজ্ঞানিক সংগঠনগুলির আপেক্ষিত স্বাধীনতা নিশ্চিত করল কিন্তু বৌদ্ধিক স্বাধীনতা পেল না।
No comments:
Post a Comment