আধুনিক লুঠেরা প্রযুক্তির সহায়তায় পশ্চিম প্রায় সারা পৃথিবী দখল করে বসল। তার এবং তার ক্ষমতা সামলানো উপনিবেশের বন্ধুদের যুক্তি, আধুনিক বিজ্ঞান মানেই অগ্রগতি আর আধুনিকতা। শিল্প সাহিত্যে আধুনিকতা আর অগ্রগতির তত্ত্বকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে রোমান্টিসাইজ করে মধ্যবিইত্ত সমাজে পেশ করা হতে থাকল বছরের পর বছর ধরে। ঠিক সেই চক্করে তৈরি হল ওরিয়েন্টালিজম নামক একটি আধসেদ্ধ তত্ত্ব, যে তত্ত্বে আজও ঔপনিবেশইক বামেরা বেতর, যার ঘোমটা খুলে দিয়েছিলেন অবাম-এডওয়ার্ড সঈদ মশাই। আমরা হয়ত নানাভাবে আজকে দাঁড়িয়ে সঈদের তত্ত্বের নানান ফাঁকফোঁকর খুঁজে পাব ঠিকই, কিন্তু এই প্রাচ্যবাদকে হাতিয়ার করে আজও প্রাচ্যের ওপরে পশ্চিমের ঔপনিবেশিক নিগড়ের সমর্থন তৈরি হয়। ওরিয়েন্টালিজম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রূপধরেছে সাম্রাজ্যবাদের প্রয়োজন ভিত্তি করে।
একটা বিশেষ লব্জ এখানে আলোচ্য, সেটি হল বিদেশিদের ফিরঙ্গি ডাক। মুঘল আমলে ফিরঙ্গি বলতে মধ্য এশিয়ায় আসা ইওরোপিয় মানুষ বোঝাত। আর ধর্মযুদ্ধের সময় গোটা মুসলমান বিশ্বে ইওরোপিয়দের ডাকা হত ফ্রাঙ্ক নামে – যা আদতে ফরাসীদের এমধ্যেশিয়ার নাম। সেই শব্দটা আমরা আত্তীকরণ করে নিলাম। এর থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় ইওরোপ আর ইসলাম তার হাজার বছরের লড়ায়ের স্মৃতি ভোলে নি। কিন্তু ব্রিটিশরা ভারতে তাদের সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্পে হাত দিয়েই ভারতের ভদ্রবিত্ত(তখন সকলে বামুন ছিল না, ধনী আজকের ভাষায় ওবিসিও ছিল) জনগনকে ইন্দো-ইওরোপিয় সমাজে টেনে নিল। ইসলামের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে ক্ষমতার দিকে হাত বাড়ানো অমুসলমান নিজেকে ইওরোপের পায়ে সঁপে দিল।
বিজ্ঞানের ব্রাহ্মণীকরণ
রামমোহন রায় সরাসরি সংস্কৃতের বদলে ইংরেজি পড়াতে সাম্রাজ্যকে অনুরোধ করলেন, কেননা তাতে পাশ্চাত্যের জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ে মানুষ জানতে পারবে, এবং the improvement of the native population হবে, যা a more liberal and enlightened system of instruction, embracing mathematics, nature philosophy, chemistry and anatomy, with other useful sciences ... by employing a few gentlemen of talents and learning educated in Europe বাংলা তার দূরতম ভাবনাতেও ছিল না। ১৮৩৫ সালে অন্ধ্রতে কলন বিদ্যা পড়ানো হচ্ছে, যা তখনও ইওরোপে ততটা চালুই হয়নি, তার অনুসন্ধান করা হল না। ততদিনে রথসচাইল্ডদের বিনিয়োগে, ফ্রিম্যাসন আর শিক্ষিত বাঙালিদের উদ্যোগে কলকাতায় ১৮১৭ সালে হিন্দু কালেজ তৈরি হয়ে গিয়েছে। রামমোহনের আবেদনের বারো বছর পরে সাম্রাজ্যেরে তাত্ত্বিক মেকলে ইংরেজকে শিক্ষার আবশ্যিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করলেন। যে প্রথা আজও চলছে এবং দিনে দিনে ভদ্রবৃত্তেরা তার দাসত্ব করছে আরও বেশি করে।
এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি থেকে প্রাথমিকভাবে প্রচুর সংখ্যায় মাথামোড়ানো শিক্ষিতরা বেরোলেন। সক্কলে ইওরোপিয় জ্ঞানবিজ্ঞানের অনুগামী হলেন। এদের মধ্যে অন্যতম মহেন্দ্রলাল সরকার, যিনি প্রথম পশ্চিমি বিজ্ঞান প্রযুক্তি পড়ানোর জন্য ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন অব কাল্টিভেশন অব সায়েন্স তৈরি করলেন ১৮৭৬ সালে, কংগ্রেসের পূর্বসূরী ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনের সক্রিয় সহযোগিতায়। এটি স্থাপনের ৫০ বছর পর আমরা দেখতে পাব রমনের নোবেল পাওয়ার কেন্দ্রর গবেষণাগার হিসেবে চিহ্নিত হবে – যা আদতে এই কেন্দ্রটি স্থাপনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।
রামমোহন রায় সরাসরি সংস্কৃতের বদলে ইংরেজি পড়াতে সাম্রাজ্যকে অনুরোধ করলেন, কেননা তাতে পাশ্চাত্যের জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ে মানুষ জানতে পারবে, এবং the improvement of the native population হবে, যা a more liberal and enlightened system of instruction, embracing mathematics, nature philosophy, chemistry and anatomy, with other useful sciences ... by employing a few gentlemen of talents and learning educated in Europe বাংলা তার দূরতম ভাবনাতেও ছিল না। ১৮৩৫ সালে অন্ধ্রতে কলন বিদ্যা পড়ানো হচ্ছে, যা তখনও ইওরোপে ততটা চালুই হয়নি, তার অনুসন্ধান করা হল না। ততদিনে রথসচাইল্ডদের বিনিয়োগে, ফ্রিম্যাসন আর শিক্ষিত বাঙালিদের উদ্যোগে কলকাতায় ১৮১৭ সালে হিন্দু কালেজ তৈরি হয়ে গিয়েছে। রামমোহনের আবেদনের বারো বছর পরে সাম্রাজ্যেরে তাত্ত্বিক মেকলে ইংরেজকে শিক্ষার আবশ্যিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করলেন। যে প্রথা আজও চলছে এবং দিনে দিনে ভদ্রবৃত্তেরা তার দাসত্ব করছে আরও বেশি করে।
এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি থেকে প্রাথমিকভাবে প্রচুর সংখ্যায় মাথামোড়ানো শিক্ষিতরা বেরোলেন। সক্কলে ইওরোপিয় জ্ঞানবিজ্ঞানের অনুগামী হলেন। এদের মধ্যে অন্যতম মহেন্দ্রলাল সরকার, যিনি প্রথম পশ্চিমি বিজ্ঞান প্রযুক্তি পড়ানোর জন্য ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন অব কাল্টিভেশন অব সায়েন্স তৈরি করলেন ১৮৭৬ সালে, কংগ্রেসের পূর্বসূরী ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনের সক্রিয় সহযোগিতায়। এটি স্থাপনের ৫০ বছর পর আমরা দেখতে পাব রমনের নোবেল পাওয়ার কেন্দ্রর গবেষণাগার হিসেবে চিহ্নিত হবে – যা আদতে এই কেন্দ্রটি স্থাপনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।
ম্যাক্সমুলারের আর্যতত্ত্ব(এবং তার বিরোধীদের অনার্য তত্ত্ব) ভদ্রবৃত্তের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হল ব্রিটিশদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের প্রক্রিয়ায়। ১৮৭৭তে কেশবচন্দ্র ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভগবানের উদ্দিষ্ট কর্ম দাগিয়ে দিয়ে সরাসরি রাণীর অনুগামী হলেন। তিনি শিক্ষতদের বার্তা দিয়ে বললেন, হে ভাই শিক্ষিতজনগণ, British government that came to your rescue, as God’s ambassador, when your country was sunk in ignorance and superstition and hopeless jejuneness, and has since lifted you to your present high position.ম্যাক্সমূলারের তত্ত্ব অবলম্বন করে জানালেন, India in her present fallen condition seems destined to sit at the feet of England for many long years to learn Western art and science ... Thus while we learn modern science from England, England learns ancient wisdom from India. Gentlemen, in the advent of the English nation in India we see a re-union of parted cousins, the descendents of two different families of the ancient Aryan race। ম্যাক্সমুলার ব্রাহ্মদের চার্চ অব ইংলন্ডের সদস্য হতে বললেন। ভদ্রবৃত্তের ইওরোপের শ্রীপদপ্রান্তে আশ্রয় নেওয়ার দাসত্ব পথ সম্পূর্ণ হল।
No comments:
Post a Comment