উপনিবেশউত্তর পর্বে তদন্ত পদ্ধতি
অবশ্যই সমাজবিজ্ঞান শিক্ষণ ও চর্চা তার সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রকেও সাহায্য করেছে। সমাজ বিশ্লেষণের মনসমীক্ষণিক বিদ্যা যুদ্ধের সময় দারুণ চলেছিল। উদাহরণস্বরূপ কারেন হর্নি এবং এরিখ ফ্রম জার্মানদের অবস্থা বিশ্লেষণে মন দিয়েছিলেন সামাজিক রোগবিদ্যা(সোসাল প্যাথলজি) চর্চাবিদ্যা অবলম্বন করে। জাতীয় চরিত্র বিদ্যার স্রষ্টা প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ মার্গারেট মিড এবং রুথ বেনেডিক্ট দ্য ক্রিসেন্থিমাম এন্ড দ্য সোর্ড লিখে আমেরিকার জাপান সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গীকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেন। ঐতিহাসিকেরা তাদের দক্ষতাকে শানিয়ে বিপুল বিশাল সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সরাসরি সামরিক প্রকল্পগুলিতে তাত্বিক কাজ পান। অনেকেই ওএসএস-এ(অফিসার ইন স্ট্রাটেজিক সার্ভিসেসে) জুড়ে ছিলেন। নতুন বিজিত, বা সদ্যস্বাধীন দেশে কাজের জন্যে ভাষাবিদদের কাজে লাগানো হয়। এই কাজে তারা আমলাদের আপাত অখ্যাত অজানা ভাষা শিক্ষা দেন। প্রথম যুগের ফরাসি এবং জার্মান ভাষাবিদেরা অন্যান্য ভাষায় অনুপ্রবেশ করেছেন।
যুদ্ধের পরে নানান বিশ্বজ্ঞানচর্চা কেন্দ্রে যে সব আমেরিকিয় গবেষক শিক্ষক ঢুকে কি করলেন? যুদ্ধের নানান আঙ্গিকের সঙ্গে জুড়ে থাকা বেশ কিছু গবেষক-শিক্ষক তাঁদের নানান ধরণের ক্ষেত্রঅভিজ্ঞতা, অন্যান্য সমাজ এবং তাদের বলা ভাষার প্রত্যক্ষ দক্ষতা সম্বল করে আবির্ভূত হলে বিশ্ব ক্ষেত্রে। এইভাবে আমেরিকিয় শিক্ষা ক্ষেত্রে শুরু হল এরেনা স্টাডি প্রোগ্রামগুলি। এরেনা স্টাডি প্রোগ্রাম হল যুদ্ধের অভিজ্ঞতার প্রাপ্ত অসম্পূর্ণ তথ্যাবলী সম্বল করে যুদ্ধ যেভাবে এগোতে থাকে তার দিকে লক্ষ্যে রেখে এবং সেখান থেকে যে সব ভাঙ্গাচোরা জ্ঞান ঝরে পড়তে থাকে, তাকে অবলম্বন করে ব্যবস্থা(সিস্টেম) তৈরি করা। নানান কারণে ক্ষেত্রে না যেতে পেরে সমাজ বিজ্ঞানী আর নীতি প্রণয়কেরা যখন সেই ক্ষেত্রের সমীক্ষা করতে পারেন না, তখন আন্তর্বিষয়ক জ্ঞানচার্চিক মিলন ঘটিয়ে অথবা তাদের পূর্বজদের করা অন্যান্য তদন্তমূলক পদ্ধতি অবলম্বন করেঅবস্থা বিশ্লেষণ করেন।
যুদ্ধ পরবর্তীকালের সামাজিক বিজ্ঞান চর্চা, বিশেষ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বিবর্তনবাদী দৃষ্টিকোণ অবলম্বন করল। উন্নয়নের রাজনীতিতে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হল, যা আগামী দিনে আমেরিকার বিদেশনীতির অঙ্গ হয়ে উঠবে ওয়াল্ট রস্টো, ড্যানিয়েল লের্নার ইত্যাদির তাত্ত্বিকতায়। নৃতত্ত্বে জুলিয়ান স্টুয়ার্ডের সম্পাদনায় কন্টেমপোরারি চেঞ্জ ইন ট্রাডিশনাল সোসাইটিজ বইটিতে এই তত্ত্ব মূর্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ক্রস-কালচারাল প্রেক্ষিত ‘আধুনিকীকরণের সমস্যা’ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত থাকে - টু ডেভেলাপ আন্ড টেস্ট আ সিস্টেমেটিক আপ্রোচ তু দ্য প্রবলেমস অব মডার্নিটি। বিশ্বমানচিত্রে সদ্যস্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলি আধুনিকতার তাত্ত্বিক প্রেক্ষিতটা বুঝতে চাইল, যারা পশ্চিমি উন্নয়নের ধারনা থেকে আলাদা করে নিয়ে নিজেদের মত করে বিকাশ ঘটাতে উন্মুখ। পদ্ধতিগতভাবে বিশ্বের নানান দেশের বিভিন্ন ক্রস-কালচারাল গবেষণা প্রকল্প তৈরি হল ক্ষেত্রসমীক্ষা নির্ভর বিভিন্ন প্রকল্পে। হিরিফ প্রকল্পের জ্ঞানচর্চার সূত্রগুলি থেকে সরাসরি জাত এই গবেষণা প্রকল্পগুলির লক্ষ্য হল, আ পসিবল ট্যাক্সনমি অব কন্টেমপোরারি সসাইটিজ[থ্রু] দ্য প্রসেস অব সোসাল চেঞ্জ... ইন এন এফোর্ট টু আন্ডারস্টান্ড ক্রসকালচারাল ডিফারেন্সেস এন্ড সিমিলারিটিজ। এই গবেষনাগুলির গুরুত্বপূর্ণতম দিকটি হল, সমাজ যখন পরম্পরা থেকে আধুনিকতার দিকে যায়, তখন তার কাজ হল সেই সামাজিক বক্রপথটিকে খুঁজে বার করা।
স্থিতিশীলতার(স্ট্যাসিস) পরিবেশ ধরে নেওয়া হল, এবং বলা হল ইতিহাস আর ঔপনিবেশিক পদ্ধতিটি থেকে সমাজ চ্ছিন্ন হয়েছে। এটি সরাসরি বির্তনীয় মতবাদ যার একটা অংশ ডুরখামানিয় তত্ত্বে সামাজিক অনোমি ছায়ায় থাকা। এই কৃষ্টিগত বিশ্লেষণের কেন্দ্রবিন্দুটি বিশ্লেষিত হল তাত্ত্বিক লব্জে এবং নানান আমেরিকিয় শক্তিশালী তাত্ত্বিকদের যে ভয়, সমাজতাকি সত্যিই পরম্পরা থেকে আধুনিকতার দিকে যাত্রা করছে সেটাকে মাথায় রেখেই।
No comments:
Post a Comment