(সাংগঠনিক ব্যস্ততার জন্যে ধারাবাহিকটি লেখা বন্ধ ছিল, আবার শুরু হল)
মেমোয়ারের প্রথম সংস্করণে রেনেল তাঁর পূর্বসূরীদের লেখার ধরণ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আধুনিকতা বিরোধী, আধুনিক বড় পুঁজির ঔপনিবেশিক জ্ঞান আর জ্ঞানীদের আমিই সব আমিই স্বয়ম্ভু জাতীয় ঘরানা থেকে বেরিয়ে এলেন। তিনি অইওরোপিয় অআধুনিক ভঙ্গীতে বিনাদ্বিধায় লিখছেন, এছাড়া কাজ বোঝার আর তোলার তার সামনে আর কোন উপায় ছিল না। সমীক্ষায় তিনি মূলতঃ আকবরের অনুসৃত নীতি অনুসরণ করেছেন এবং আইনিআকবরিকে বিপুল সম্মান দিয়ে লিখলেন, ‘In the division of Hindoostan into Soubahs, &c. I have followed the mode adopted by the Emperor Acbar, as it appeared to me to be the most permanent one: for the ideas of the boundaries are not only impressed on the minds of the natives by tradition, but are also ascertained in the Ayeneh Acbaree; a register of the highest authority।
আকবর শাহের অনুসৃত পদ্ধতি অনুসরণ করে রেনেল উপনিবেশের শাসনকে স্থায়ী করা যায়, এমন একটা তথ্য সমৃদ্ধ মানচিত্র বানালেন, যা আগামী দিনের মানচিত্র তৈরির কাজের যোগ্য নিদর্শন হয়ে থাকবে। এই কাজে রেনেল রয়্যাল সোসাইটির পদক পান। ভারতে কাজের অভিজ্ঞতা সম্বল করে স্কটল্যান্ডের মানচিত্র তৈরির কাজে খ্যাতি অর্জনকরা উইলিয়াম রয় এবং তিনি নিজে ব্রিটেনে কেন্দ্রিভূত মানচিত্র তৈরির আর্জি জানান।
তিনি জানতেন তার কাজের কোন ইওরোপিয় পূর্বনিদর্শন নেই। রেনেল স্থানীয় জ্ঞান সম্বল করে কাজের পদ্ধতি বানিয়ে নিলেন। সে সময় ফ্রান্স আর ব্রিটেনে ৩ ফুটের আল্টাঝিমুথ থিওডোলাইট নামক যন্ত্রে সমীক্ষা হত। রেনেই সেই পথেই হাঁটলেন না। রেনেল বুঝেছিলেন ভারতীয় পরম্পরার গভীরতা, যা ইওরোপিয় জরিপি মানচিত্রে নেই। তাই যে পরম্পরা তিনি শিখেছেন, ধার করেছেন পরম্পরার শেকড়ে দাঁড়িয়ে দেশিয় জ্ঞানীদের সৌজন্যে, সেই সৌজন্যে তিনি প্রত্যেক সাহায্যকারীর নামোল্লেখ করেছেন। তার ধারণা ছিল প্রাচীন এই দেশে জ্ঞান ভারতজুড়ে আছে তাকে আত্মীভূত করে নিলে স্বাভাবিকভাবে গোটা অবিকশিত ইওরোপিয় জরিপি মানচিত্র তৈরির আঙ্গিকটা পাল্টে যাবে।
ঠিক এই জন্যে রেনেলের পদে বসা উত্তরসূরী টমাস কল, তার এটলাস ইন্ডিয়া বইয়ের জন্যে অন্তত ৪০ জন স্থানীয় জ্ঞানীকে ব্যবহার করেছেন। ১৭৮৩ সালে তিনি লিখলেন, In India, it was the composite method of data collection that was extended and further developed by Rennell’s successors. Thus, Thomas Call (Surveyor General of Bengal, 1777–88) employed atleast forty Indians to collect information for his Atlas of India. He writes in 1783: ‘I have for a year and half past, employed 6 munshies and 30 Hurcarrows at my own expence, to travell through the different parts of India to collect information . . . This I did with the permission of the Hon’ble the Governor Genera। নাবার পরের বছর তিনি লিখবেন, I have by order of the Governor General employed Munshys to survey some Roads between Places well ascertained in the Map, and have procured some very useful information।
এবং তিনি আবার এক বছর পর লিখবেন, I have by order of the Governor General employed Munshys to survey some Roads between Places well ascertained in the Map, and have procured some very useful information।
এটা ব্রিটিশ আমলে খুব বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গোটা ভূসমীক্ষাটা করা হয়েছে, এই বিষয়ে জ্ঞানী স্থানীয় মানুষদের ওপর নির্ভর করে। অঙ্কবিদ এবং জ্যোতির্বিদ এবং এক সময় জ্যোতির্বিদ নেভিল ম্যাসকিলিনের সহায়ক রুবেন ব্যারো স্থানীয় মানুষদের জ্ঞানচর্চা দিয়েই রাস্তার মানচিত্র তৈরি করিয়েছিলেন। আলেকজান্ডার এলান, এক সময়ের কোম্পানির ডিরেক্টর, এমপি, এবং মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে ৫০ জনের একটি গাইড দল তৈরি করেছিলেন। রুবেন গাইডদের সম্বন্ধে লিখছেন, have examined, and made every necessary remark upon, near 5000 miles of roads in the Carnatic and Mysore country, which they have compiled into the form of a book of roads . . . I consider it a duty I owe to the Corps of Guides . . . to request your Lordship [the governor of Madras] will transmit to the Hon’ble the Court of Directors their maps and field books, also their book of roads, which I have had translated into English।
ফলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এমন নয় যে জ্ঞানচর্চাটা ইওরোপ এসে ভারতীয়দের ঋদ্ধ করে দিচ্ছে, বরং দেশিয় জ্ঞানচর্চা ইওরোপিয়রা তাদের জ্ঞানবৃদ্ধির জন্যে সংগ্রহ করছে। এটা পরিষ্কার এই কাজটি করার জন্যে এলেনের যেমন সময় ছিল না, সম্পদ বরাদ্দ ছিল না, এমন কি গাইডদের(প্রাক্তন হরকরা) প্রশিক্ষিত করার যোগ্যতাও ছিল না, কারণ গাইডএরা যে ধরণের জ্ঞানী ছিল সেই জ্ঞান তখন ইওরোপের ছিল না। এবং অধিকাংশ আকাশ পর্যবেক্ষণে তৈরিতে দেশিয় জ্যোতির্বিদের স্মরাণাপন্ন হতেন।
এটাও পরিষ্কার, ভূ সমীক্ষা আর আকাশ পর্যবেক্ষণে দেশিয় জ্ঞানী মানুষদের যেমন সাহায্য নিয়েছেন তেমনি তারা সমীক্ষা করার পদ্ধতি, স্বশাসিত জরিপ(autochthonous surveying) পদ্ধতি, অক্ষাংশ নির্ণয় ইত্যাদি নিয়ে স্থানীয় জ্ঞানচর্চামূলক পুথি ইত্যাদিও নকল আর অনুবাদও করেছেন। এই প্রথাগত জ্ঞানচর্চা নথিকরণের কাজটি চলে উনবিংশ শতক পর্যন্ত।
No comments:
Post a Comment