Tuesday, March 6, 2018

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা১ উপনিবেশের জ্ঞান চুরি এবং প্রকৃতির ওপর প্রভুত্ব ভারতউপমহাদেশের গুটি বসন্তর টিকার জ্ঞান হরণ

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা১
উপনিবেশের জ্ঞান চুরি এবং প্রকৃতির ওপর প্রভুত্ব
ভারতউপমহাদেশের গুটি বসন্তর টিকার জ্ঞান হরণ

ভাস্কো ডাগামার ভারতে প্রবেশের মধ্যে দিয়েই ইওরোপ জ্ঞানের সলতে পাকানোর কাজে হাত দিল। হরতাস মালাবারিকাস যার প্রথম নিদর্শন, যার মাধ্যমে ইওরোপ নব্য চিকিতসাব্যবস্থায় প্রবেশ করতে পারল। তারপরেও বহু জ্ঞান চুরি হয়েছে। ইওরোপিয়দের ধর্মই হল সূত্র না রেখে জ্ঞান চুরি করা।
এক্ষুণি হাতে গোনা কয়েকটি উদাহরণ দিতে পারি
ক) কয়েক হাজার বছরের আরাবল্লী পাহাড়িয়াদের দস্তা পরিস্রবন পদ্ধতি চুরি করে ১৭৩৮ সালে উইলিয়াম চ্যাম্পিয়ান নিজের নামে পেটেন্ট করেন, যার নাম হয় ব্রিস্টল প্রসেস।
খ) ভারতজোড়া উজ ইস্পাত তৈরির প্রযুক্তি করে তৈরি হয় ইওরোপের নব্য ইস্পাতের রাজত্ব।
গ) শল্য চিকিৎসায় আয়ুর্বেদের বিপুল অবদান রয়েছে।
ঘ) হায়দার আলি টিপু সুলতানের কাছে হারতে হারতে বেঁচে গিয়ে তাদের হাউই(রকেট) প্রযুক্তি উলরিচে নিয়ে গবেষণা করে কনগ্রেভ প্রযুক্তির রকেট তৈরি ফরাসীদের হারিয়ে দেয় ব্রিটিশ।
সম্পদ লুঠ আমরা অনেকেই জানি হয়ত, কিন্তু ব্রিটিশ/ইওরোপিয় জ্ঞানলুঠকর্ম বলতে বলতে রাত কাবার হয়ে যাবে দাদা-দিদিরা।
তাঁর থেকে আসুন আরেকটা জ্ঞানলুঠের পর্ব – বসন্তের টিকার মূল সূত্র আলোচনা করা যাক। সারা জীবন এমন কি পাঠ্য বইতে ডক্টর জেনারের নাম শুনতে শুনতে বাচ্চারাও ইওরোপিয় নবতম উদ্ভবনার প্রতি, ইওরোপিয় জ্ঞানচর্চার প্রতি, ইওরোপিয় বিশ্বজ্ঞানরাজনীতির প্রভুত্বের প্রতি অসম্ভব আস্থাবান হয়ে পড়ে। আদতে গোটা প্রকল্পটাই একটা ভদ্রবৃত্তিয় প্রকল্প, বড় পুঁজির লুঠ লুঠ খেলার শিল্পবিপ্লবীয় প্রকল্প।

গুটি বসন্ত
শিল্পবিপ্লব, আদতে একটি সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্পর ৫০০ বছর, এবং তাঁর আগের দেড় হাজার বছর আদতে ইওরোপিয় অকর্পোরেটিয় জ্ঞান ধ্বংস করার ২০০০ বছরের বড় পুঁজি আর তাঁর ক্রীড়ানক ভদ্রবিত্তিয় উদ্যম। জ্ঞানধ্বংসের পরেই শিল্পবিপ্লবের শুরুতেই গোটা ইওরোপের চাষী, কারিগরদের মত শূদ্রদের নিয়ে উপনিবেশ তৈরি করে নানান কর্পোরেট কারখানায় প্রায় বিনামূল্যে জুতে দেয় ইওরোপিয় কর্পোরেটরা। গ্রামীনেরা, প্রকৃতির নানান উপাদানের, নীতি আর তাত্ত্বিকতার সঙ্গে যে সহাবস্থান করত, যা প্রায় মহিলাদের সবার সঙ্গে থাকার দর্শনে, সেই সহাবস্থানের মৌলনীতিতে কুঠারাঘাত করেন লুঠেরা বিজ্ঞানের প্রথম তাত্ত্বিক বেকন। বেকনের তাত্ত্বিকতায় চলে এল প্রকৃতির প্রতি হিংসা, পুরুষত্ব, এবং প্রকৃতিকে দাস বানিয়ে রাখার উদ্যম, যা দগদগের ঘাএর মত করে ফুটে রয়েছে গত পাঁচশ বছরের আধুনিক বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির গায়ে। তিনি একইসঙ্গে ঠিক করে দিলেন অমানুষ যা কিছু তাঁর অস্তিত্ব নির্ভর করবে মানুষের (পড়ুন বড় পুঁজির) ইচ্ছে অনিচ্ছের চাহিদার ওপর নির্ভর করে।
গুটি বসন্তের লুঠকর্ম বাখানে ঢোকার আগে বুঝে নিতে হবে আধুনিক বিজ্ঞানের মূল তত্ত্বগুলি, যে তত্ত্বে সে বড়পুঁজির কাছাকাছি থাকা মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা নিজের মাথায় তুলে নেয়। আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়ে অসাধারণ একটি বই সম্পাদনা করেছেন আশিস নন্দী - জাতিরাষ্ট্রর প্রকাশনা - SCIENCE, HEGEMONY & VIOLENCE A REQUIEM FOR MODERNITY। এই বইতে লিখেছেন ক্লদ আলভারেজ, জিতেন্দ্র বাজাজ, শিব বিশ্বনাথন, মুনাল কোঠারি আর লোপা মেহতা, বীনা দাস, বন্দনা শিব এবং সম্পাদক নিজে। ভূমিকায় আধুনিক ভারতের "বৈজ্ঞানিক মানসিকতা"কে ধুয়ে দিয়েছেন আশিস। তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করতে বেকনের তত্ত্ব বিষয়ে জিতেন্দ্র বাজারেরর লেখার উদ্ধৃতি টেনে এনেছেন। আজ আমাদের সক্কলের বোঝা দরকার কেন আধুনিক বিজ্ঞানের সর্বগ্রাসী রুপটা আন্দাজ করতে মৌলিকভাবে বেকনের তত্ত্ব বোঝা জরুরি। সেই জন্য দীর্ঘ উদ্ধৃতি তুলে দিতে হল।
আশিস নন্দী তাঁর সম্পাদকীয় ভূমিকায় উপনিবেশ বিরোধী তাত্ত্বিক জিতেন্দ্র বাজাজের বেকন বিষয়ক মত উদ্ধৃত বলছেন, His ironic essay is not only a biographical enquiry into the 'genetic equipment' of modern science, it is also a philosophical audit of the scientific vision and values of Francis Bacon, popularly viewed as the father of modern science and its first and most important philosopher. Bajaj argues that violence is written into Bacon's concept of true and useful knowledge, in his homocentric vision of the natural world, and in his masculine perception of nature, including human nature. To Bacon nature was an enemy which needed to be defeated and tortured - the expression was his - so that its secrets or powers could be extracted for the benefit of the human race. Thus not only was he the first to provide philosophical legitimacy to the human quest for omnipotence and omniscience through science, he was also the first to reconceptualize the non-human cosmos as an experimental subject fit only for manipulative intervention. It is implicit in Bajaj's argument that what at one time may have looked like innocent metaphors about the natural world are now major clues to the character of science in our times.
...জিতেন্দ্রর উদ্ধৃতি তুলে ধরে আশিস নন্দী আরও বলছেন, Bajaj, while not dealing directly with the issue of culture or with the cultural context which produced the inner contradictions and ambivalences of Bacon, nevertheless includes in the analysis a significant cultural critique. The critique, ventured with the help of three examples, proposes that at some plane the Baconian worldview fits the concept of true and useful knowledge in the European worldview. The fit explains, according to Bajaj, why even those who want to break out of the Baconian grid end up by accepting the two basic Baconian premises that (1) the positive sciences yield absolute truths and (2) the western hegemony in science and/or life is inevitable, for the hegemony is ultimately based on Baconian truths about the natural world and on Baconian methods of reaching these truths. That Bajaj uses as his examples three of the best-known postpositivist thinkers - Thomas Kuhn, Joseph Needham and Edmund Husserl - gives his analysis especial relevance and, one might add, poignancy.

এই তত্ত্ব পেরিয়ে পরের লেখায় আমরা ঢুকব গুটি বসন্ত চুরির উদ্যমে।
----
সূত্র
আশিস নন্দী সম্পাদিত SCIENCE, HEGEMONY & VIOLENCE A REQUIEM FOR MODERNITY
এবং
রাজেশ কোছারের Smallpox in the modern scientific and colonial contexts 1721–1840 থেকে

No comments: