ভারতবর্ষের দীর্ঘকাল ধরে যে ভূমি জরিপের পরম্পরা চলেছিল এবং যে পরম্পরা বলে একটা জ্ঞানচর্চার ধারা তৈরি হয়েছিল, সেই পরম্পরা ইওরোপে গড়ে ওঠে নি। ফলে ইওরোপিয়দের বাধ্য হতে হয়েছে দেশিয় জ্ঞান নকল করতে। কিন্তু লুঠেরা কোম্পানি আর সাম্রাজ্য জ্ঞান নকল করার অর্থ বরাদ্দ করত না। দেশিয় জ্ঞানচর্চাকে ব্যবহার করে ইওরোপিয় জ্ঞানচর্চায় ঢেলে সাজানোর যে প্রক্রিয়া শুরু করছিল ইওরোপিয় আমলারা তাতে লুঠেরা সাম্রাজ্য খুব একটা যে কান দেয় নি সেটা বলাই বাহুল্য। দক্ষিণ এশিয়ার নানান ভূসমীক্ষা লব্জ নিয়ে কাজ করা বম্বের সার্ভেয়ার জেনারেল চার্লস রেনল্ডস (১৭৯৬-১৮০৭) দেশিয় সমীক্ষার জ্ঞান নকল কররার ক্ষেত্রে বরাদ্দ সম্পদের সম্পদের ন্যুনতা বিষয়ে ওপরওয়ালাকে লিখলেন - The[ir] surveys cannot be rendered to use if they are taken down and translated by any other than a person conversant with the business।
পরের দশকগুলোয় ভারতীয় জ্ঞান সম্বল করে নতুন নতুন ধরণের যন্ত্রপাতি তৈরি, পুনর্নবীকরণ, কাজের নতুন নিয়মনীতি প্রণয়নের কাজ হচ্ছিল। ভারতীয় পরিবেশে ব্রিটিশ প্যারেয়াম্বুলেটর যেন, flimsy, bad in principle, and incapable of working except on a smooth road or bowling green; across country they go to pieces in a mile or two। ১৭৮০তে মাদ্রাজ ইনফ্যান্ট্রির ক্যাপ্টেন জন প্রিঙ্গল স্থানীয় লস্করদের কাজের জন্যে নতুন ধরণের যন্ত্র বানালেন। মধ্যউনবিংশ শতে ব্রিটিশ যন্ত্রের তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশদের যন্ত্রগুলো পরিবর্তিত হয়ে নতুন চেহারা পেল যাতে সব ধরণের ভূমিরূপে সেগুলি কাজ করতে পারে। এই জ্ঞানচর্চার ফল ফলল ১৮৬০এ গোটা মধ্য এশিয়া ভূজরিপের কাজে।
১৮৫১ সালেই ব্রিটেনের তুলনায় ভারতীয় জরিপ পদ্ধতি এতই প্রভাবশালী, এতই স্বাভাবিক এবং এতই আলাদা যে রুরকিতে ভারতের প্রথম লুঠেরা প্রযুক্তিবিদ তৈরি করার মহাবিদ্যালয় থমসন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জরিপ বিভাগের পাঠ্যসূচী এবং নির্দেশমূলক পুস্তিকাটি নতুন করে লেখা হল, scarcely any of the English works on Geodesy extant, touch on, or afford any practical insight into, the system of Survey, as carried on and as peculiarly applicable to this country। সার্ভের প্রধান গণক রাধানাথ শিকদার এই পুস্তিকার একটি অধ্যায়ের অর্ধেক অংশ লেখেন।
এটাও মনে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে রুরকিতে প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয় শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারতের তিনটি প্রেসিডেন্সিতে দেশিয় জ্ঞানচর্চার বৈচিত্রের মতই, দেশিয় জরিপ ব্যবস্থা, জ্ঞানচর্চা, দক্ষতা, পদ্ধতি, সমাজ এবং হাতিয়ার পরস্পর থেকে আলাদা ছিল। নতুন নির্দেশমূলক পুস্তিকাটি গভীরভাবে পড়লে বোঝা যাবে, কিভাবে ইওরোপিয় কেন্দ্রিভূত জ্ঞানচর্চা এই তিন এলাকার বিভিন্ন জ্ঞানকে একত্রীভূত করে একটি কেন্দ্রিভূত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যাতে কেন্দ্রিভূত প্রশাসন একইভাবে সারা দেশে একই সংগঠন মার্ফত একইভাবে সমীক্ষা করতে পারে।
No comments:
Post a Comment