অধ্যায়২
ধ্রুপদী প্রকল্প এবং ভারতীয় অভদ্র ভাষাগুলির সংজ্ঞা
ব্রিটিশ ভাষা পরিকল্পনার কেন্দ্রে হিন্দুস্তানি
অষ্টাদশ শতকের আগে পর্যন্ত ভারতজুড়ে বিভিন্ন ধরণের যে সব ভাষা বলা হত সে
সম্বন্ধে তাদের জ্ঞান খুবই অল্প ছিল। পর্তুজিগ, জার্মান এবং ড্যানিশ ধর্মযাজকেরা
এবং কোম্পানির ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ ডাচ আর ফরাসিরাও কোন না কোন ভাষার ব্যকরণ তৈরি
করছিলেন। ব্রিটিশেরা এই দিকে নজরই দেয় নি। ব্রিটিশেরা যেভাবে ভারতীয় ভাষাগুলি
বিশ্লেষণ করেছে তা হল মোটামুটি ওপরওপর এবং এককে অন্যের ঘাড়ে ফেলা এবং ভৌগোলিক আর
ক্রিয়া ভিত্তিক। মালাবার এমন একটা ভাষা হিসেবে তারা চিহ্নিত করে যা মালাবারের এবং
করমণ্ডল উভয় উপকূলের জেলেরা বলে এবং আজকের তামিলনাড়ুর ভাষা হয়ে ওঠে। জেন্টু বা
তেলিঙ্গা অন্ধ্রের ভাষা কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নানান এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সে, এবং দক্ষিণ
ভারতের সেনাবাহিনীগুলির যুদ্ধ সমাজের ভাষা এটা। বানিয়ান এক সময় গুজরাটি ভাষা
হিসেবে বলা হত, কিন্তু পশ্চিম উপকূলের অধিকাংশ ব্যবসায়ীই গুজরাটি। কলকাতা, বম্বে
এবং মাদ্রাজ বহুভাষিক বহুসামাজিক শহর। সপ্তদশ এবং অষ্টদশ শতাব্দের রাজনৈতিক ইতিহাস
অনুসরণ করে ব্রিটিসরা মনে করত মারাঠি, ফারসি এবং মুর দক্ষিণ ভারতের ভাষা।
প্রাথমিকভাবে মুঘল দরবারে প্রবেশ করে ব্রিটিশেরা বুঝতে পারল সেখানে কোন ধরণের
ভাষা চলে, এবং সেখানে ভারতের অন্যান্য প্রান্তে বলা ভাষার কেন্দ্রিয় গুরুত্বটুকু
কত। টমাস রো’র সঙ্গে যাওয়া রেভারেন্ড টেরির ভাষায় দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অব এম্পায়ার, আই
মিন দ্য ভালগার, বিয়ার্স দ্য নেম অব ইট, এন্ড ইজ কলড ইন্দোস্তান; ইট হ্যাথ মাচ আফিনিটি
উইথ দ্য পার্সিয়ান এন্ড আরাবিয়ান টাং... আ ল্যাঙ্গুয়েজ হুইচ ইজ ভেরি
সিগ্নিফিক্যান্ট, এন্ড স্পিকস মাচ ইন আ ফিউ ওয়ার্ডস। ইট ইজ এক্সপ্রেসড বাই লেটার্স
হুইচ আর ডিফারেন্ট দ্যান দোজ এলফাবেটস বাই হুইচ দ্য পারসিয়ান এন্ড আরাবিক টাং আর
ফর্মড।
পরের দুশ বছর জুড়ে এই ভাষাটি বা তার অন্যান্য উপভাষা(ভ্যারিয়্যান্ট) বহুনামে
পরিচিত হবে – মুর্স, ইন্দোস্তান, হিন্দুস্তানিক, হিন্ডোয়ি, নাগ্রিও এবং কুটা। মোটামুটি
যে নামটা অধিকাংশের ব্যবহারে চালু হল সেটা হল মুর্স।
পলাশীর পরে পরেই, এমনকি ভাষার ব্যকরণ প্রকাশের আগেই, মূলত কোম্পানির
সেনাবাহিনীর আধিকারিকদের মধ্যে ভাষা শিক্ষার জন্যে নানান ধরণের চিরকুট এবং
পাণ্ডুলিপি আদানপ্রদান হত। এডওয়ার্ড হ্যাডলি প্রথম লন্ডনে মুর ভাষার ব্যকরণ প্রকাশ
করেন মূলত কোম্পানির আধিকারিকদের জন্যে। এডওয়ার্ড ছিলেন বাংলা সেনাবাহিনীর
আধিকারিক যিনি বললেন স্থানীয় সেনাদের থেকে শেখা ভাষা জ্ঞান ছাড়া তার পক্ষে
সুষ্ঠুভাবে কাজ করা সম্ভব ছিল না। পূর্বের দেশের মুর ভাষার কোন ব্যকরণ ছিল না এই
তত্ত্ব তিনি উড়িয়ে দেন। তিনি আরও বললেন এই ভাষার ক্রিয়াপদের সঙ্গে ফারসির
ক্রিয়াপদের কোন মিল নেই; তার ধারনা অন্যকোন ভাষা থেকে, হয়ত উত্তর ভারতে আক্রমণকারী
তাতারদের থেকে এই ভাষার ব্যকরণের সূত্রপাত। হ্যাডলির ব্যকরণ বহু মানুষ সম্পাদনা
করেন এবং ১৮০৯ সাল পর্যন্ত সাতটি সংস্করণ প্রকাশিত হয় যতক্ষণনা জন বর্থউইক
গিলিক্রিস্টের আবির্ভাব হবে, যাকে মনে করা হয় ভারতের সরকারি ব্রিটিশ ভাষা হিন্দুস্থানির
স্রষ্টা।
১৭৮২ সালে ২৩ বছর বয়সে এডিনবরা থেকে চিকিতসাবিদ্যা পড়ে গিলক্রিস্ট বম্বের
উপকূলে পা দেন এসিস্ট্যান্ট সার্জেন হিসেবে, পরে তাকে বাংলা আর্মিতে বদলি করা হয়।
১৭৮২তে তিনি লেখেন, আই ইন্সট্যান্টলি ফোরসও দ্যাট মাই রেসিডেন্স, ইন এনি
ক্যাপাসিটি, উড প্রুভ এজ আন প্লেজেন্ট টু মাইসেলফ, এন আনপ্রফিটেবল টু মাই
এমপ্লয়ার, আন্টিল আই একোয়ার্ড এন এডিকোয়েট নলেজ অব দ্য কারেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য
কান্ট্রি, ইন হুইচ আই ওয়াজ নাউ টু সরজঁ। আই দেয়ারফোর স্যাট রেজলিউটলি ডাউন টু
একোয়ার হোয়াট ওয়াজ দেন টার্মড এজ মুর্স... ডিউরিং দ্য মার্চ উইথ দ্য বেঙ্গল ট্রুপস
আন্ডার দ্য কমান্ড অব কর্নেল চার্লস মরগান ফ্রম সুরাট টু ফুটিগড়, আ হ্যাড
ইনিউমারেবল ইন্সট্যানসেস ইন এভ্রি টাউন এন্ড ভিলেজ উই ভিজিটেড অব দ্য ইউনিভার্সাল
কারেন্সি অব দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ আই হ্যাড বিন লার্নিং।
No comments:
Post a Comment