তো
লুঠেরা ব্রিটিশদের ভূসমীক্ষা করার প্রয়োজন হয়ে পড়ল কেননা তাদের আরও আরও রাজস্ব চাই
দেশে লুঠেরা শিল্পবিপ্লবীয় প্রযুক্তি আর কেন্দ্রিভূত উতপাদন ব্যবস্থা চালু করতে
প্রচুর ভর্তুকি প্রয়োজন। পলাশীর পর লুঠে একলপ্তে বিপুলতম সম্পদ দেশে গিয়েছে আর সেই
অর্থ এত পরিমানে ছিল যে, বাংলার পণ্য কিনতে আর সারা বিশ্ব লুঠ করে দামি ধাতু আনতে
হয় না। বাংলায় ব্যবসা দখল আর জ্ঞানলুঠের পরম্পরা বাড়ল এই সময়ে।
কিন্তু শাসকেরা তো দেশটাই চেনে না, ভূপ্রকৃতি
জানে না। তাই প্রয়োজন পড়ল ভূসমীক্ষার। আর আগে আমরা উল্লেখ করেছি ১৭৬০ সালে কিভাবে
কলকাতা কাউন্সিল একজন নৈসেনানায়ককে সমীক্ষা করে মানচিত্র তৈরি করে দেওয়ার জন্যে
অনুরোধ করেছিল। এই ধরণের একটা সমীক্ষার উল্লেখ পাচ্ছি ফরাসী ভূপর্যটক Abraham-Hyacinth Anquetil-Duperronর লেখায়... I have travelled in the interior of India alone, in a group, and with the
army. The commanding officer spends the better part of the day
sleeping in his palanquin. At dinner he asks his Dubash [interpreter] . .
. what distance they have travelled and which places
they have passed. The latter in turn asks the porters
or else replies himself, for reply one must; and the distances and place names
are inscribed on the itinerary, on the map . . . which, by the way, I found
perfectly well made।
জেমস রেনেল প্রথম ভূগোলবিদ যিনি সে সময়ের
ইওরোপিয় মানচিত্র তৈরির সীমিত জ্ঞানের সঙ্গে সময় পরীক্ষিত ভারতীয় প্রশাসনিক
ভূসমীক্ষা করার জ্ঞানকে মেলালেন। রেনেলের জন্ম ডেভনশায়ারে। শিশুবয়সের অনাথ। এক
ভাইকারের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষাটা কোনক্রমে সম্পন্ন হয়। সাতবর্ষ যুদ্ধে
সাধারণ যোদ্ধা নাবিক হিসেবে ১৪ বছর বয়সে ব্রিটিশ নৌপোতে চাকরি। ব্রিটেনিতে উপকূলীয় ভূসমীক্ষার
মূল সূত্র শিখে নেন। কোয়াড্রেন্ট আর আঁকার সরঞ্জাম নিয়ে তিনি ভেসে পড়েন ভারতের
উদ্দেশ্যে। করমণ্ডলে কিছু কাজ করে চোখে পড়ে যান ভূগোলবিদ আলেকজান্ডার ডালরিম্পলের।
১৭৬২তে চিনের সুলু দ্বীপে সমীক্ষায় অংশ নেন। তার ভ্রমনে তিনি ক্রমশ চিনের সঙ্গে
আফিম ব্যবসার গুরুত্ব বুঝতে পারেন।
এরপরে কোম্পানির চাকরি, কোম্পানির প্রথম
প্রোবেশনার ইঞ্জিনিয়ার এবং শেষে সার্ভেয়র জেনারেল অব বেঙ্গল হন। কোম্পানির বাণিজ্য
সুবিধের জন্যে প্রথমে গঙ্গার বদ্বীপ সমীক্ষা করেন the shortest and safest Channel leading from the
great River to Channel Creek or Rangafulla। লুঠের প্রাথমিক শর্ত এবং আগামী দিনে
বাংলাকে ব্রিটিশ শিল্পের কাঁচামালের আড়ত তৈরি করতে কোন কোন নদী দিয়ে বাণিজ্য হতে
পারে সেটা জানা জরুরি ছিল। বিশেষ করে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের বদ্বীপ অঞ্চল তাদের শাসন
এলাকায় পড়েছিল। এই কাজে তিনি ব্রিটিশ নৌসেনার উপকূল সমীক্ষার সঙ্গে দেশিয় জ্ঞান
যোগ করেন। ১৭৭৭ সালে ব্রিটেনে ফিরে গিয়ে তিনি বাংলা-বিহার-ওডিসার পরে সারা
উপমহাদেশের স্থল মানচিত্র প্রকাশ করেন, রেনেল তার প্রথম জীবনে করা নদী সমীক্ষার
কিছু তথ্য ব্যবহার করেন। যদিও তিনি মূলত ব্রিটিশ আর ভারতীয় সেনার আর সার্ভেয়ারদের রুটমার্চের
তথ্যই ব্যবহার করেন।
শুরু করেন বাংলার মানচিত্র তৈরি করতে পরে
সারা ভারতেরই করেন। তিনি ১৭৮৩র প্রথম সংস্করণে সব সূত্রকেই উল্লেখ করেছেন। এদের
মধ্যে the roads and country between Bengal
and the Deccanএ
ছিলেন Sepoy officer গুলাম মহম্মদ, উত্তরপশ্চিম ভারতের জন্যে
মির্জা মুঘল বেগ, এবং গুজরাটের জন্যে সদানন্দ নামক এক a Brahmin of uncommon genius and knowledge। দেশিয় সহায়ক ছাড়া তার কাজে ছিলেন জেসুইট Monserrate এবং
Tieffenthaler, ফরাসী Marquis de Bussy,
Jean Law de Lauriston, Antoine Polier, Claude Martin। আর তিনি গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহার করেছেন আইনিআকবরি,
যে বইটিকে অন্যান্য ইওরোপিয়দের মত গালিতে ভরিয়ে দেবেন আচার্য যদুনাথ সরকার।
No comments:
Post a Comment