উপনিবেশউত্তর পর্বে
তদন্ত পদ্ধতি
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যুগান্তকারী ঘটনায় আমেরিকা বিশ্বক্ষমতাধর শক্তি হিসেবে
উঠে এল। সেই অবস্থায় বিশ্বরাজনীতি এবং নানান জ্ঞানচর্চায় আমেরিকার অবস্থান বুঝতে
এবং আমেরিকার খোলামেলা সাম্রাজ্যবাদিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমেরিকিয় রাজনীতিকদের
সঙ্গে শিক্ষাসমাজ(একাদেমিয়া)ও সক্রিয় হয়ে উঠল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে
পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত নানান সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা, বিশেষ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে
এই সংক্রান্ত অন্তর্বিষয়িক প্রকল্পটির নাম হল ইন্সটিটিউট অব হিউম্যান রিলেশনস।
ইন্সটিটিউট একই সঙ্গেও সমাজতাত্ত্বিক, নৃতাত্ত্বিক, মনসমীক্ষক এবং
মনস্তত্ত্ববিদদের যোগ করল এবং যে বৌদ্ধিক পরিবেশটি তৈরি হল, তার নাম হল পজিটিভিজম।
ইন্সটিটিউট অব
হিউম্যান রিলেশনস কতগুলি গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করল। নৃতাত্ত্বিক দপ্তরের গবেষণায়
শুরু হল গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিউম্যান রিলেশনস এরিয়া ফাইলস(হিরিফ)। হিরিফ আগামী
দিনের বিশ্ব কৃষ্টির বর্গীকরণ সূত্র নির্ণিত হল এবং যা নির্ভর করে ইয়েল
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বজুড়ে ক্রস-কালচারাল সমীক্ষা শুরু হল এবং তার উপসর্গ হিসেবে
নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্লেইনস ইন্ডিয়ান সার্ভে শুরু হয়। হিরিফএর অন্যতম উদ্দেশ্য
হল, বিপুল ডেস্ক্রিভিটিভ লিটাচেরর নির্দিষ্ট এবং বিশ্লেষণী ঠাট(কাঠামো) নির্ধারণ
করা – দ্য ‘ডেস্ক্রিভিটিভ ডেটা হুইচ নো আদার সোসাল সায়েন্সে ক্যান ইভন রিমোটলি
কম্পেয়ার ইন কোয়ান্টিটি উইথ ইন ওয়েলথ অব এথনোগ্রাফিক ডিটেইল আভেলেবল’। হিরিফ হল ‘কোয়াপারেটিভ
এন্টারপ্রাইজ অব ফিফটিন ইউনিভার্সিটিজ, অপারেটিং উইথ দ্য এইড অব ফাউন্ডেশন এন্ড গভর্নমেন্ট
গ্রান্টস, ফর দ্য এসেম্বলি, ট্রান্সলেশন্স এন্ড ক্লাসিফিকেশন্স অব দ্য
ডেস্ক্রিভিটিভ মেটিরিয়াল অব এন্থ্রোপলজি।’
হিরিফএর প্রথমতম
কম্মটি হল, কৃষ্টিগত একককে বর্ণনা করা(ডেলিনেটিং কালচারাল ইউনিটস)। কোন সামাজিক
গোষ্ঠী কৃষ্টিগত একক হিসেবে স্বীকৃত হবে? বিশ্ব কৃষ্টি আদর্শ নমুনার যুক্তিটি হল,
বৃহত্তর সামাজিক এককের মধ্যে থাকা ক্ষুদ্রতম একককে জৈবিক রূপক দিয়ে চিহ্নিত করা। ফলে
কৃষ্টিগত ছোট দল হয়ে উঠল জীববিদ্যার অধিপ্রজাতি(সাবভ্যারাইটি)। কোন সমাজের
কৃষ্টিগত ব্যবস্থাপনাকে বলা হল লোকাল কালচারাল ভ্যারিয়্যান্ট। ক্রস-কালচারাল
ম্যাপিংএ জৈবিক বিবর্তনের লব্জগুলো জুড়ে দেওয়া হল – ‘ইন দ্য রিয়াম অব কালচার, দ্য
ইকুইভ্যালেন্ট অব ইনব্রিডিং ইন ডিফিউশন এন্ড ব্যারিয়ার্স টু ডিফিউশন মে বি ইউজড টু
সেপারেট কালচারাল স্পেসিস’। হিরিফের অন্তর্গত যুক্তি হল সামান্যিকরণ নির্ধারণ করা
যাতে, ‘ডিস্ক্রিমিনেট বিটুইন সুপারফিসিয়াল এন্ড ফাণ্ডামেন্টাল ডিফারেন্সেস ইন ওয়েজ
অব লাইফ। ইট ওয়াজ দেন নেসেসারি টু ডিফাইন এন্ড ক্লাসিফাই দ্যাট হুইচ ইজ কম্পারেবল
ফ্রম অনে সোসাইটি টু এনাদার’।
হিরিফ আমেরিকা
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উদ্যমের গুরুত্বপুর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠল। কর্তারা মনে করলেন
ক্রস-কালচারাল জ্ঞান বিশ্বজোড়া সামরিক রণনীতি রূপায়নের গুরুত্বপুর্ন সহায়ক হয়ে
উঠতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকিয় নৌসেনা, জাপানি নিয়ন্ত্রণ থেকে মাইক্রোনেসিয়া
এবং মেলানেশিয়াকে মুক্ত করার উদ্যমে নিজেদের এই এলাকাগুলোর সরকারে যুক্ত হয় এবং ‘নেটিভ’
শ্রমিকদের দিয়ে বিমানপোতের কাজগুলি করায়। নৌসেনা আধিকারিক এবং নীতি নির্ধারকদের
সামাজিক প্রথা এবং অভ্যাসগুলি তাড়াতাড়ি জেনে নেওয়ার কাজে হিরিফ সাহায্য করে। সামান্যিকরণিক
নীতি নির্ভর একটি প্রত্যক্ষ্যবাদী সমাজ বিদ্যা(বিজ্ঞান) যা মানব সমাজকে জীববিদ্যার
তত্ত্বের সঙ্গে তুলনা করার ওপরে নির্ভরশীল – এই প্রায়োগিক জ্ঞান তাত্ত্বিক
সংস্কৃতির জন্মদেয় যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চার চত্তর ছাড়িয়ে ব্যবসা এবং
বাস্তববাদী রাজনীতিকে সাহায্য করাঊ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
No comments:
Post a Comment