চাইসের দেওয়া সূত্রের সূত্র ধরে আরও কিছু সূত্র খুঁজতে লন্ডনের ফরাসী প্রোটেস্টান্ট ডাক্তার ম্যাথিউস ম্যাটি আফ্রিকা, ইস্ট ইন্ডিজের দেশসমূহে বসবাসকারী তাঁর বন্ধুবান্ধবকে চিঠি লিখলেন বিশদ জানতে চেয়ে। ম্যাটি তাঁর প্রবন্ধ ১৭৬৮র এপ্রিলে রয়্যাল সোসাইটিতে পড়েন এবং সেই বছরেই সেটি প্রকাশিত হয়। তাঁর ছোট্ট প্রবন্ধ আর তথ্যের অপ্রতুলতা বিষয়ে ম্যাটি বলেন আলজিরিয়ায় হাত থেকে হাতে টিকা দেওয়া হয়। বিহারে টিকা দেওয়ার কোন প্রচলন নেই। কিন্তু বাংলায় এটির দারুণ চল রয়েছে যেখানে খুব ভাল ধরণের ভেরিওলাস বস্তু সংগ্রহ করে দুভাবে ব্যবহৃত হয়। যে পদ্ধতিটা খুব চালু এবং নিশ্চিত উপায়টি হল, বাচ্চার চামড়া ফুটো করে সেখানে গুটি বসন্তের কোন কিছু ঘষে দেওয়া হয়। এই ধরণের চিকিৎসা খুব বেদনা দায়ক বলে কিছু উচ্চশ্রেণীর পরিবারের(for people of quality and rank)এর জন্যে নতুন ধরণের উপায় আবিষ্কৃত হয়েছে। সেটি হল, ভেরিওলাস বস্তুটি যে কোন মিষ্টির সঙ্গে বা কোন স্বাদু তরল পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে বাচ্চাকে খাইয়ে দেওয়া হয়। ১৭৬৮ সালে রয়্যাল সোসাইটিতে ম্যাটির বক্তৃতা প্রথম বাংলার টিকা দেওয়ার পদ্ধতি বর্ণিত হল।
অভিজাত এবং রাজপরিবারের সক্রিয় সমর্থন সত্ত্বেও ইংলন্ড এবং সার্বিক ইওরোপের চিকিৎসক মহলে গুটি বসন্তের টিকা দেওয়া নিয়ে ধর্মতাত্ত্বিক বিষয় এবং চিকিতসাবিদ্যা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিপুল বিতর্কের ঝড় ওঠে। ধর্মতত্ত্ব দূরে সরিয়ে রেখেও একটা বিষয় পরিষ্কার যে ব্যক্তির মৃত্যু বা মহামারী না ঘটিয়ে, চিকিতসকেদের কাছে টিকা করণ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গোটা ইওরোপে এই চিকিৎসার কোন বিধিবদ্ধ পদ্ধতি ছিল না। সে সময় হাতুড়ের সঙ্গে প্রশিক্ষিত ডাক্তারদের কোন পার্থক্যও ছিল না। গুটি বসন্তের টিকা দেওয়ার যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত ইস্তাহারের যুদ্ধে পরিণত হল।
আদতে টিকাকারেরা শুধু যে জনগণকে শিক্ষিত করবে তাই নয়, সব থেকে বড় কথা, তাদের নিজেদেরও তৈরি হতে হবে। চিকিতসকেদের মুখে চুনকালি মাখিয়ে বিতর্কিতঅপ্রথাগতভাবে চিকিৎসা করা রবার্ট সাটন এবং পুত্র ড্যানিয়েল নিজেদের উদ্যোগে যৌগটির একটি সহজ হাতুড়ে উপায়ে প্রয়োগের বিদ্যা বার করলে তাদের উদ্ভাবিত টিকার বিপুল বাজার তৈরি হল। তাদের সাফল্যে, গুটি বসন্ত চিকিৎসার প্রমিতিকরণ পদ্ধতি তৈরির দাবি উঠল।
তাদের চিকিৎসা পদ্ধতির উল্টোদিকে আবেরদিন থেকে প্রথাগতভাবে ডাক্তারি পড়া টমাস ডিমসডেল ১৭৬৬তে গুটি বসন্তের একটি সরলীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি বিভিন্ন ইওরোপিয় ভাষায় প্রকাশ করলে এটির বহু সংস্করণ ছাপা হতে থাকে। ১৭৬৮তে তিনি রুশ রাণী ক্যাথেরিন আর তাঁর পুত্রকে টিকা দিয়ে ব্যারোনেট উপাধি পেলে ইওরোপে তাঁর সম্মান সর্বোচ শিখরে ওঠে।
১৭৬৬তে ব্রিটিশ রাণীর বাড়ির ডাক্তার(physician to Her Majesty’s household) জর্জ বেকার ১৭৬৬তে টিকাদান বিষয়ে একটি গবেষণামূলক প্রকাশনা করেন। সেই প্রবন্ধে, ব্ল্যান্ডফোল্ডে সম্প্রতি করা টিকাদান এং অন্যান্য কয়েকটি ব্যবস্থাপনায় করা কয়েকটি টিকা দানের উদাহরণ দিয়ে, কোন পদ্ধতিটি বেশি কার্যকর সে বিষয়ে তিনি জনগনকে তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তে উপনীত হতে অনুরোধ করেন। বেকার তাঁর গবেষণাপত্র শুরু করেন এইভাবে, How much so ever such a reflection may mortify the pride of Men of Science, it cannot but be acknowledged that the Art of Medicine has, in several instances, been greatly indebted to Accident; and that some of its most valuable improvements have been received from the hands of Ignorance and Barbarism, This truth is remarkably exemplified – in the practice of Inoculation of the Small-pox; a practice which Chance seems to have first suggested; and of which some poor, unknown, illiterate Woman was probably the original discoverer।
RAJESH KOCHHAR এর Smallpox in the modern scientific and colonial contexts 1721–1840
এবং
আশিস নন্দী সম্পাদিত SCIENCE, HEGEMONY & VIOLENCE A REQUIEM FOR MODERNITY
থেকে
No comments:
Post a Comment