মুর্শিদকুলি খাঁ পতিত ও অনাবাদী জমি চাষেরা আওতায় আনার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ছোট ছোট কৃষকদের উতসাহদানের জন্য তাঁর রাজস্ব বিভাগের কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কৃষকদের হালের গরু আর মহিষ কেনার জন্য তিনি সরকারি ঋণ ব্যবস্থা করেন। দুর্ভিক্ষের সময় আনাবৃষ্টির সময় শস্যের ক্ষতি হলে তিনি কৃষকদের খাজনা মকুব করে দিতেন। আর কৃষি জমিতে যাতে ভালভাবে চাষ হয়, তার জন্য তিনি কৃষকদের কৃষি ঋণ (তাকাবি) দেওয়ারও নীতি অনুসরণ করেছিলেন।
মুর্শিদকুলি খাঁ বাংলার জমিদারদের ওপর কড়া নজর রাখতেন। কৃষক বা রায়তের ওপর অত্যাচার হলে জমিদার সহজে নিস্তার পেত না। এজন্য তাঁর সময়ের জমিদারেরা সব সময়ে সন্ত্রস্ত থাকত। জমিদারের উকিল নবাবের দরবারের আশেপাশেই বিক্ষুব্ধ রায়তের খোঁজ করত। এ রকম কোন বিক্ষুদ্ধ রায়তের সন্ধান পেলে নবাবের অভিযোগ পেশ করার আগেই উকিল তাকে খুশি করে বিরোধ মিটিয়ে নিত। সুজাউদ্দিন ও আলিবর্দি (মুঘলদের কৃষি নীতি অনুসরণ করে) বাংলার কৃষকদেররক্ষা করার নীতি অনুসরণ করেছিলেন। তাঁরা কৃষকদের ওপর নজর রাখতেন। মারাঠা আক্রমনের সময় আলিবর্দি কৃষির পুনর্গঠনে মন দিয়েছিলেন। বাংলার বিদ্ধস্থ গ্রাম ও কৃষি গড়ে তোলা ছিল তাঁর জীবনের শেষ কাজ। সমসাময়িকদের লেখা থেকে এ তথ্য জানা যায়। কৃষি বাংলার জাতোয় সম্পদ। কৃষি ও কৃষককে রক্ষা করাকে বাংলার নবাবেরা তাঁদের কর্তব্য বলে মনে করতেন। এটা ছিল এ যুগের রাষ্ট্রনীতি।
সূত্রঃ প্রাক-পলাশী বাংলা, সুবোধ কুমার মুখোপাধ্যায়, কে পি বাগচি
No comments:
Post a Comment