এডামের সময় কলকাতা
তখন কলকাতা
বাঙলার গ্রামেগ্রামে তখন স্বাধীনতা সংগ্রামের ঢেউ, বিপর্যন্ত ব্রিটিশ কোম্পানি সরকার। বিশ্বের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর কলকাতায় তখন চলছিল মহাশিক্ষা বিতর্ক। ছাত্রদের পড়ানো হবে কোন পদ্ধতিতে। ব্রিটিশ পদ্ধতির পক্ষে এংলিসস্টরা দলে ভারি। মেট্রোপলিটনের শিক্ষা হনুকরণের জন্য উচ্চমধ্যবিত্তদের হুড়োহুড়ি। ঈশ্বরচন্দ্রমশাইএর পিতাঠাকুর ১৮২০তে কলকাতায় মাসে ২ টাকায় স্বচ্ছলতা অর্জন করার তিন বছর আগে মাসে পাঁচ টাকায় হিন্দু কালেজে ইংরেজির পাঠ নিচ্ছেন নবজাগণের অগ্রগূতেরা(বিনয় ঘোষ, বিদ্যাসাগর এবং ততকালীন বাঙালি সমাজ)। ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থায় সার্বজনীন শিক্ষার ধারণাটাই অধরা। শিক্ষা ছিল মুষ্টিমেয়র ক্রয়যোগ্যবস্তু। ব্রিটেনে পঞ্চদশশতক থেকে বাইবেল পড়ার অধিকার ছিলনা জনগণেশের (ধরমপাল, দ্য বিউটিফুল ট্রি)।
এংলিসিস্টদের ইংরেজবাদী আন্দোলন আর বেন্টিঙ্ক, ট্রেভলিয়ান, মেকলে, রামমোহন, বিদ্যাসাগরের উদ্যমে দেশের গ্রামীণ চিরাচরিত বিকেন্দ্রিভূত, স্থানীট অর্থনীতিকে সাহায্য করতে ত্রৈরি শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ল, শুরু হয়ে গিয়েছে কর্পোরেট বিশ্বে শস্তা লুঠেরা ইংরেজি শিক্ষিত শ্রমিক তৈরির কারখানা, প্রথাগত পশ্চিমের জ্ঞান নির্ভর বিদ্যালয়গুলি। ইংরেজি মাধ্যমের, পশ্চিমি দর্শনের পড়াশোনার পদ্ধতি(১৭৯৭তে পাদ্রি এন্ড্রু বেল চেঙ্গলপট্টু, আজকের চেন্নাইএর শিশুদের নিজস্ব পড়াশোনার পদ্ধতির নথি প্রকাশ হয় এন এনালাইসিস অব এক্সপেরিমেন্ট ইন এডুকেশনস মেড অ্যাট এগমোর নিয়ার ম্যাড্রাস বইতে। বিশ্বশিক্ষাব্যবস্থা বিকাশে এর প্রভাব প্রভূত) প্রথমে ভারতের শহরে, ভারত স্বাধীণ হওয়ার পর আরও গভীরে চরিয়ে গ্রামে প্রবেশ করবে।
এংলিসিস্টদের আন্দেলনের বিরোধিতা করতে গিয়ে ওরিয়েন্টালিস্টরা দেশজ সংস্কৃত বা আরবি-ফারসী মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখার আবেদন করেছেন। আদতে দুপক্ষই সরকারি ব্যয়ে শহুরে মধ্যউচ্চশ্রেণীর মধ্যে সীমিত শিক্ষাব্যবস্থার পক্ষে। রামমোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরমশাই ভারতীয় টোল ব্যবস্থার প্রতিভূ। ১৮৩৫এ রামমোহন নেই, কিন্তু প্রয়াণের বহু আগে তাঁর মনোভাব জানিয়েছেন ইংরেজি মাধ্যম স্কুল শুরু করার উদ্যমে নিজেকে জড়িয়ে রেখে। বিদ্যাসাগরও সনাতন টোল ব্যবস্থার চরমতম বিরোধিতা করেছেন। মেকলের অশ্লীল, উদ্দেশ্যপূর্ণ শিক্ষা প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। সগর্বে বলছেন পশ্চিম প্রমাণ করেছে সাংখ্য আর বেদান্ত মিথ্যা দর্শণ। এগুলিকে পাঠ্যক্রম থেকে বর্জন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এই দুই মহাতেজের সঙ্গে রিফর্মিস্ট আম্দোলনের প্রভাব, শহুরে ইংরেজি শিক্ষা আন্দোলন গ্রামবাঙলার ব্যাপকতম শিক্ষা পরিকাঠামো সমূলে ধংস করল।
অষ্টাদশ শতাব্দ পর্যন্ত নানান সামাজিক-অর্থনৈতিক ঝড়-ঝাপটা সহ্যকরে বাংলার সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা দাঁড়িয়েছিল মাথা উঁচু করে। উইলিয়ম এডামের সমীক্ষার আগেই মাদ্রাজে (১৮২২-২৬) তার আশেপাশের সময় বম্বে আর পাঞ্জাবের সমীক্ষাও প্রকাশ পায়। সে প্রসঙ্গে রেভারেন্ড এফ ই কে, এনসিয়েন্ট ইন্ডিয়ান এডুকেশনএ লিখছেন, “there was.., before the British Government took over the control of education in India, a widespread, popular, indigenous system. It was not confined to one or two provinces, but was found in various parts of India, though some districts were more advanced than others. In the inquiry made for the Madras Presidency in 1822-26, it was calculated that rather less than one-sixth of the boys of school-going age received education... In the similar inquiry made for the Bombay Presidency (1823-28), the number of boys under instruction was put down to about one in eight...” ১৮১৪ সালের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ডিরেক্টরদের পাঠানো প্রথম এডুকেশন ডেসপ্যাচ এপর নির্ভর করে এ পি হাওয়েল ১৮৫৪তে বলবেন, “There is no doubt that from time immemorial indigenous schools have existed... In Bengal alone, in 1835, Mr. Adam estimated their number to be 100,000; in Madras, upon an inquiry instituted by Sir Thomas Munro in 1822, the number of schools was reported to be 12,498, containing 188,650 scholars; and in Bombay, about the same period, schools of a similar order were found to be scattered all over the Presidency।
No comments:
Post a Comment