সমাজ বিজ্ঞান পাঠ্যের বিবর্তন
হোয়াইট স্টাডিজ আর অনুমানগুলির সমস্যার সমালোচনা
শিক্ষা সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে ইতিহাস পাঠ
এই কর্তৃত্ব প্রমানের দৃষ্টিভঙ্গীটা আমরা বুঝতে পারি কিভাবে আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস লেখা হয়েছে, সেই পাঠ অনুসরণ করে। অন্তত এই তিন দেশের ইতিহাস আদতে সাদাদেরই এবং সাদাদেরই তৈরি করা ইতিহাস, এবং সে উদ্যমে দেশের প্রাচীন অধিবাসীদের কথা নেই বললেই চলে। আর যদি থাকেও তাহলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গীই উপস্থিত থাকে না।
আরেকটি বিষয় আলোচনা চলছে, জ্ঞানচর্চা হিসেবে ইতিহাসের অস্তিত্ব বজায় রাখার যৌক্তিকতা আদৌ আর আছে কি না। বিশেষ করে ভারতের মত সমাজে, যে সমাজ অতীতের সত্য জানতে গেলে যেতে গেলে সে ঐতিহাসিক সময়ের থেকে বেশি গুরুত্ব দেয় অন্য সব জ্ঞানচর্চার মাধ্যমকে বিশেষ করে মিথকে। সেই সব সমাজে ইতিহাসের প্রয়োজন আদৌ আছে কিনা ভাবতে হবে। উদাহরণস্বরূপ ভারতে অধিকাংশ জনগন ইতিহাস বুঝতে বিশদে মিথের আশ্রয় নেয়, যা ঐতিহাসিক সত্যকে উপস্থিত করে। এবং তাদের কাছে ঐতিহাসিক সত্যের মানে হোল ঐতিহাসিক ঘটনার থেকে তার অন্তর্নিহিত অর্থের মানে খোঁজা এবং সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে নানান ধরণের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব যার একটা অংশ পশুও। এই বিষয়টা আরও বর্ণিল হয়েছে সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি ভারতীয় পঞ্জিকা প্রকাশে যা সারাবিশ্বে চালু গ্রেগরিয় পঞ্জিকাকে নস্যাৎ করে দিয়ে রমরম করে চলছে। বিনয় লাল এই বিষয়টা নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন বিভিন্ন লেখায় মাল্টিভার্সিটিতে দেওয়া বক্তৃতায়। এ বিষয়ে আরও জানতে আপনি এই সূত্রে www.multiworldindia.org/ যেতে পারেন।
শিক্ষা সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে সমাজতত্ত্ব পাঠ
আজকের সমাজতত্ত্ব সামগ্রিকভাবে আমেরিকিয়(তার সব দৃশ্যমান বিকার নিয়েই), গোটা সমাজতত্ত্ব ইওরোপিয় পদ্ধতি, চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে গড়া। আমি ভারতীয় সমাজতাত্ত্বিকদের সঙ্গে কথা বলে একটা বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝেছি, তারা বিশ্বাস করেন, অগাস্ট কোঁত, ম্যাক্স ওয়েবার বা এমিলি ডুরখেইম ইত্যাদি তাত্ত্বিক সূত্র ব্যবহার করা ছাড়া তাদের পক্ষে ভারতীয় সমাজের সমাজতত্ত্বের ভিত তৈরি করা সম্ভব নয়, কেননা তাদের তত্ত্ব তারা পড়ে এসেছেও এবং বিদ্যালয়ে-বিশ্ববিদ্যালয়স্তরে আজও পড়ান। যদিও তাঁরা স্বীকার করেন ভারতীয় সমাজের মত এত বৈচিত্র্যপূর্ণ গতিশীল সমাজ খুব বেশি নেই, তার এই চরিত্রগুলোর জন্যই সে হাজার হাজার বছর নিজের মত করে বেঁচে এসেছে। সমাজতাত্ত্বিকেরা যেহেতু তাদের রোজগার সেই জ্ঞানচর্চা নির্ভর করেই করে থাকেন, তাই তাদের সমাজতত্ত্ব আদৌ সমাজ বিজ্ঞান কি না এবং তার কাজ সত্যিই কোন উদ্দেশ্যপূরণ করে কিনা এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করা তাদের কাছে খুব বেশি চাওয়া হয়ে যায়।
ভারতীয় সমাজতত্ত্বের চর্চার ইতিহাসকে গত ৩০০ বছরের ইওরোপের সমাজ নির্ভর সমাজতত্ত্বের বিকাশে কিভাবে খাপ খায় এই প্রশ্ন করাটা খুব অনুপযুক্ত এবং হাস্যকরও বটে কারণ, এই দুয়ের মধ্যে ব্যবধান দুস্তর, আলাপ আলোচনাই তেমন প্রায় নেই আর যদিও কিছু হয়ে থাকে তাহলে সেটি প্রভু-ভৃত্য মার্কা।
প্রথম দিকে ইওরোপিয় এবং পরের দিকে আমেরিকিয় সমাজতত্ত্বের ওপর অপার নির্ভরতা বেশ কিছু সমস্যারও জন্ম দিয়েছে।
সমাজতাত্ত্বিকদের মূলত যুক্তি দেন, আধুনিক(পড়ুন ইওরোপিয়, আমেরিকিয়) সমাজের নানান আধুনিক চরিত্রগুলিকে তাত্ত্বিকভাবে আলোচনা করে অপরিহার্য এবং নিশ্চিতভাবে অ-সাদা সমাজে জোর করে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হবে। অন্যভাষায়, ইরানি, বা ভারতীয় বা ফিলিপনো সমাজকে অপরিহার্যভাবে আজকের ইওরোপ-আমেরিকার নানান সামাজিক রেণুকে আত্মস্থ করে নিতে হবে, তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এই দৃষ্টিভঙ্গী গম্ভীরভাবে আলোচিত হয়েছে এবং প্রচারিতও হয়েছে।
হোয়াইট স্টাডিজ আর অনুমানগুলির সমস্যার সমালোচনা
শিক্ষা সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে ইতিহাস পাঠ
এই কর্তৃত্ব প্রমানের দৃষ্টিভঙ্গীটা আমরা বুঝতে পারি কিভাবে আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস লেখা হয়েছে, সেই পাঠ অনুসরণ করে। অন্তত এই তিন দেশের ইতিহাস আদতে সাদাদেরই এবং সাদাদেরই তৈরি করা ইতিহাস, এবং সে উদ্যমে দেশের প্রাচীন অধিবাসীদের কথা নেই বললেই চলে। আর যদি থাকেও তাহলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গীই উপস্থিত থাকে না।
আরেকটি বিষয় আলোচনা চলছে, জ্ঞানচর্চা হিসেবে ইতিহাসের অস্তিত্ব বজায় রাখার যৌক্তিকতা আদৌ আর আছে কি না। বিশেষ করে ভারতের মত সমাজে, যে সমাজ অতীতের সত্য জানতে গেলে যেতে গেলে সে ঐতিহাসিক সময়ের থেকে বেশি গুরুত্ব দেয় অন্য সব জ্ঞানচর্চার মাধ্যমকে বিশেষ করে মিথকে। সেই সব সমাজে ইতিহাসের প্রয়োজন আদৌ আছে কিনা ভাবতে হবে। উদাহরণস্বরূপ ভারতে অধিকাংশ জনগন ইতিহাস বুঝতে বিশদে মিথের আশ্রয় নেয়, যা ঐতিহাসিক সত্যকে উপস্থিত করে। এবং তাদের কাছে ঐতিহাসিক সত্যের মানে হোল ঐতিহাসিক ঘটনার থেকে তার অন্তর্নিহিত অর্থের মানে খোঁজা এবং সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে নানান ধরণের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব যার একটা অংশ পশুও। এই বিষয়টা আরও বর্ণিল হয়েছে সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি ভারতীয় পঞ্জিকা প্রকাশে যা সারাবিশ্বে চালু গ্রেগরিয় পঞ্জিকাকে নস্যাৎ করে দিয়ে রমরম করে চলছে। বিনয় লাল এই বিষয়টা নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন বিভিন্ন লেখায় মাল্টিভার্সিটিতে দেওয়া বক্তৃতায়। এ বিষয়ে আরও জানতে আপনি এই সূত্রে www.multiworldindia.org/ যেতে পারেন।
শিক্ষা সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে সমাজতত্ত্ব পাঠ
আজকের সমাজতত্ত্ব সামগ্রিকভাবে আমেরিকিয়(তার সব দৃশ্যমান বিকার নিয়েই), গোটা সমাজতত্ত্ব ইওরোপিয় পদ্ধতি, চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে গড়া। আমি ভারতীয় সমাজতাত্ত্বিকদের সঙ্গে কথা বলে একটা বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝেছি, তারা বিশ্বাস করেন, অগাস্ট কোঁত, ম্যাক্স ওয়েবার বা এমিলি ডুরখেইম ইত্যাদি তাত্ত্বিক সূত্র ব্যবহার করা ছাড়া তাদের পক্ষে ভারতীয় সমাজের সমাজতত্ত্বের ভিত তৈরি করা সম্ভব নয়, কেননা তাদের তত্ত্ব তারা পড়ে এসেছেও এবং বিদ্যালয়ে-বিশ্ববিদ্যালয়স্তরে আজও পড়ান। যদিও তাঁরা স্বীকার করেন ভারতীয় সমাজের মত এত বৈচিত্র্যপূর্ণ গতিশীল সমাজ খুব বেশি নেই, তার এই চরিত্রগুলোর জন্যই সে হাজার হাজার বছর নিজের মত করে বেঁচে এসেছে। সমাজতাত্ত্বিকেরা যেহেতু তাদের রোজগার সেই জ্ঞানচর্চা নির্ভর করেই করে থাকেন, তাই তাদের সমাজতত্ত্ব আদৌ সমাজ বিজ্ঞান কি না এবং তার কাজ সত্যিই কোন উদ্দেশ্যপূরণ করে কিনা এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করা তাদের কাছে খুব বেশি চাওয়া হয়ে যায়।
ভারতীয় সমাজতত্ত্বের চর্চার ইতিহাসকে গত ৩০০ বছরের ইওরোপের সমাজ নির্ভর সমাজতত্ত্বের বিকাশে কিভাবে খাপ খায় এই প্রশ্ন করাটা খুব অনুপযুক্ত এবং হাস্যকরও বটে কারণ, এই দুয়ের মধ্যে ব্যবধান দুস্তর, আলাপ আলোচনাই তেমন প্রায় নেই আর যদিও কিছু হয়ে থাকে তাহলে সেটি প্রভু-ভৃত্য মার্কা।
প্রথম দিকে ইওরোপিয় এবং পরের দিকে আমেরিকিয় সমাজতত্ত্বের ওপর অপার নির্ভরতা বেশ কিছু সমস্যারও জন্ম দিয়েছে।
সমাজতাত্ত্বিকদের মূলত যুক্তি দেন, আধুনিক(পড়ুন ইওরোপিয়, আমেরিকিয়) সমাজের নানান আধুনিক চরিত্রগুলিকে তাত্ত্বিকভাবে আলোচনা করে অপরিহার্য এবং নিশ্চিতভাবে অ-সাদা সমাজে জোর করে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হবে। অন্যভাষায়, ইরানি, বা ভারতীয় বা ফিলিপনো সমাজকে অপরিহার্যভাবে আজকের ইওরোপ-আমেরিকার নানান সামাজিক রেণুকে আত্মস্থ করে নিতে হবে, তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এই দৃষ্টিভঙ্গী গম্ভীরভাবে আলোচিত হয়েছে এবং প্রচারিতও হয়েছে।
No comments:
Post a Comment