সমাজ বিজ্ঞান পাঠ্যের বিবর্তন
হোয়াইট স্টাডিজ আর অনুমানগুলির সমস্যার সমালোচনা
সাদা সাম্রাজ্যবাদী পাঠ্যক্রমের সঙ্গে মিলিতভাবে কোন মধ্যপন্থা তৈরি সম্ভব কি না
এর আগে বিভিন্ন সমাজ বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে ইওরোপমুখ্য ভাবনা-তত্ত্বের কলুষিতকরণের বিশদ বর্ণনা আমরা পাই ওয়ার্ড চার্চিলের বই হোয়াইট স্টাডি থেকে। যখন কোন পরম্পরার সমাজের ছাত্রছাত্রী আমেরিকিয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমগুলি গভীর নজর দিয়ে দেখে, তখন তার সত্যকারের বিবিমিষা হয়। তার মনে হয়, পূর্বজরা তাকে যে পরম্পরার জ্ঞান দিয়ে গিয়েছিল, সেগুলির কোন অস্তিত্বই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রমে নেই, তাই তার মনে হয় যে সে সব কটা পাঠ্যক্রমেই বাতিল হিসেবে গণ্য হচ্ছে, সেই জ্ঞান থেকে, যা জীবনধারণের রূপরেখা তৈরি করে, পরিবেশের সঙ্গে এবং অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে আলাপের ভিত্তি তৈরি করে। যদিও এই জ্ঞানের খুব কম অংশই আজ অবশিষ্ট আছে, কিন্তু সেই পরম্পরার জ্ঞান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিপুল বিশাল ইওরোপকেন্দ্রিক জ্ঞানউতপাদনের থেকে অনেকি বেশি শ্রেয় এবং গ্রহনীয়।
ওয়ার্ড চার্চিলের কাজ থেকে আমরা পাচ্ছি, উচ্চশিক্ষার বিপুল বিশাল অংশ, বলা দরকার গোটা অংশটার উদ্ভব, মাথাব্যথা, উদ্দেশ্য, পদ্ধতি এবং অনুসৃত নীতি সাদাদের দ্বারা এবং সাদাদের জন্যেই তৈরি হয়েছে। সেই পরম্পরার ছাত্রছাত্রীর মনে হয় এই পশ্চিমি জ্ঞানের যেহেতু কোন বিশ্বজনীনতা নেই, তাহলে সে কেন এই পাঠ্যক্রম পড়বে। অথচ এই পাঠ্যক্রমগুলি অসাদা পড়ুয়াকে আত্মস্ম্যাত করতে হয় তার কারণ, এটি বিমূর্ত ধারণা, বিমূর্ত পদ্ধতিহিসেবে তার কাছে আসে, ঠিক যেভাবে সে ইংরেজি অক্ষরগুলি শেখে।
সিঙ্গাপুরের ফরিদ আলাতাস বা আফ্রিকার ইমানুয়েল নগারা বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানে সাদা চামড়ার মানুষদের হাতে তৈরি নানান তত্ত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলেছেন কেন এগুলি তাদের সমাজে কোন গুরুত্ব নেই। পশ্চমি সমাজ বিজ্ঞানের সফলতা হল অন্যান্য সমাজের কৃষ্টিগত অর্জনগুলি বা তাদের বৌদ্ধিক পরম্পরার বা অভিজ্ঞতা না জেনে বুঝেই সামাজিক সমীক্ষা করার ক্ষমতা। অন্য সমাজের সঙ্গে সাদা চামড়ার মানুষদের তৈরি পাঠ্যক্রমের যদিও কোন আদানপ্রদান হয়ে থাকে সেটির উদ্দেশ্য হল, সেই সমাজকে তারা আয়না হিসেবে ধরে নিয়ে, তাদের নিজেদের স্বশ্রেষ্ঠত্বের দাবিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা।
এখানে মাঝে মাঝেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে আমরা কেন নিজেদের পাঠ্যক্রম চর্চার দায় নিজেদের ওপর নিতে পারি না, বিশেষ করে যখন আমরা আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিজেরাই করছি? যদি ইওরোপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চার পাঠ্যক্রমের সংস্করণ, অন্যান্য সমাজের রাষ্ট্র পরিচালনা তত্ত্ব, ধারণা, অভিজ্ঞতা, সূত্র ব্যতিরেকেই পড়ানো যেতে পারে, তাহলে তাদের দেখাদেখি অন্যান্য সমাজ কেন এই কাজটা নিজেরা করে উঠতে পারবে না, বোঝা দায়। তথাকথিত মূলস্রোত বা ইওরোপিয়বাদ যে সব সমাজের সমাজবিজ্ঞানের মূলসূত্র, ধারণা, শ্রেণীবিন্যাসকে নস্যাৎ করে নিজেকেই শ্রেষ্ঠ ঘোষণা করতে পারে, কেন তার বিপরীতে সেই সমাজগুলি তাদের মত করে সমাজ বিজ্ঞানকে তৈরি করতে পারবে না? এই চিন্তাকে, সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দেওয়ার অর্থ হল, একটা কৃপাপূর্ণ বাস্তবতা তৈরি করা, যেখানে বলা হবে, ইওরোপই শেষ কথা বলে এবং এটি সর্বজনমান্য, যা মিথ্যা এবং গ্রহণযোগ্য নয়। যদি কোন সমাজ বিজ্ঞানের পড়ুয়া বলে সে পশ্চিমের সমাজ তাত্ত্বিকদের ভাবনা তত্ত্ব এবং পদ্ধতি ছাড়া কাজ করার কথা ভাবতেই পারে না, তাহলে সেটা তার নিজের ভাবনা, কিন্তু এই ভাবনাকে সার্বজনীন হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার, বা অন্যান্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই।
বিষয়টা হল ইওরো-আমেরিকিয় চিন্তাবিদদের তৈরি করে দেওয়া কাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে, অ-সাদা সমাজের চিন্তকদের ভাবনাচিন্তা জ্ঞানচর্চার ধারাকে বাদ দিয়ে তৈরি করা সমাজ বিজ্ঞানের পাঠয়ক্রমকে প্রশ্নহীনভাবে অনুসরণ করে যাওয়ার মধ্যে কিন্তু সাদা চামড়ার পাঠ্যক্রমকে কিন্তু সবল করা যাবে না, যদি অন্যচিন্তার প্রবেশ না ঘটে সেই পাঠ্যক্রমে। প্রত্যেক মিনিট, প্রত্যেক ঘন্টা, প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক বছর এই কাঠামোটি তৈরি করে পশ্চিম আমাদের ভাবনাকে রুদ্ধ করে চাপিয়ে দিচ্ছে, সেখানে আমাদের অসাদাদের, আমাদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞানচর্চা, শ্রেণীবিভাগ করা কাঠামোর কোন অস্তিত্ব নেই, যার মাধ্যমে আমদানি করা শ্রেণী বিভাগে অভ্যস্ত হয়ে পড়া আমরা, আমাদের পরিবেশ ইত্যাদির সঙ্গে অর্থপূর্ণভাবে সংযোগসাধন করতে পারি।
হোয়াইট স্টাডিজ আর অনুমানগুলির সমস্যার সমালোচনা
সাদা সাম্রাজ্যবাদী পাঠ্যক্রমের সঙ্গে মিলিতভাবে কোন মধ্যপন্থা তৈরি সম্ভব কি না
এর আগে বিভিন্ন সমাজ বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে ইওরোপমুখ্য ভাবনা-তত্ত্বের কলুষিতকরণের বিশদ বর্ণনা আমরা পাই ওয়ার্ড চার্চিলের বই হোয়াইট স্টাডি থেকে। যখন কোন পরম্পরার সমাজের ছাত্রছাত্রী আমেরিকিয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমগুলি গভীর নজর দিয়ে দেখে, তখন তার সত্যকারের বিবিমিষা হয়। তার মনে হয়, পূর্বজরা তাকে যে পরম্পরার জ্ঞান দিয়ে গিয়েছিল, সেগুলির কোন অস্তিত্বই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রমে নেই, তাই তার মনে হয় যে সে সব কটা পাঠ্যক্রমেই বাতিল হিসেবে গণ্য হচ্ছে, সেই জ্ঞান থেকে, যা জীবনধারণের রূপরেখা তৈরি করে, পরিবেশের সঙ্গে এবং অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে আলাপের ভিত্তি তৈরি করে। যদিও এই জ্ঞানের খুব কম অংশই আজ অবশিষ্ট আছে, কিন্তু সেই পরম্পরার জ্ঞান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিপুল বিশাল ইওরোপকেন্দ্রিক জ্ঞানউতপাদনের থেকে অনেকি বেশি শ্রেয় এবং গ্রহনীয়।
ওয়ার্ড চার্চিলের কাজ থেকে আমরা পাচ্ছি, উচ্চশিক্ষার বিপুল বিশাল অংশ, বলা দরকার গোটা অংশটার উদ্ভব, মাথাব্যথা, উদ্দেশ্য, পদ্ধতি এবং অনুসৃত নীতি সাদাদের দ্বারা এবং সাদাদের জন্যেই তৈরি হয়েছে। সেই পরম্পরার ছাত্রছাত্রীর মনে হয় এই পশ্চিমি জ্ঞানের যেহেতু কোন বিশ্বজনীনতা নেই, তাহলে সে কেন এই পাঠ্যক্রম পড়বে। অথচ এই পাঠ্যক্রমগুলি অসাদা পড়ুয়াকে আত্মস্ম্যাত করতে হয় তার কারণ, এটি বিমূর্ত ধারণা, বিমূর্ত পদ্ধতিহিসেবে তার কাছে আসে, ঠিক যেভাবে সে ইংরেজি অক্ষরগুলি শেখে।
সিঙ্গাপুরের ফরিদ আলাতাস বা আফ্রিকার ইমানুয়েল নগারা বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানে সাদা চামড়ার মানুষদের হাতে তৈরি নানান তত্ত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলেছেন কেন এগুলি তাদের সমাজে কোন গুরুত্ব নেই। পশ্চমি সমাজ বিজ্ঞানের সফলতা হল অন্যান্য সমাজের কৃষ্টিগত অর্জনগুলি বা তাদের বৌদ্ধিক পরম্পরার বা অভিজ্ঞতা না জেনে বুঝেই সামাজিক সমীক্ষা করার ক্ষমতা। অন্য সমাজের সঙ্গে সাদা চামড়ার মানুষদের তৈরি পাঠ্যক্রমের যদিও কোন আদানপ্রদান হয়ে থাকে সেটির উদ্দেশ্য হল, সেই সমাজকে তারা আয়না হিসেবে ধরে নিয়ে, তাদের নিজেদের স্বশ্রেষ্ঠত্বের দাবিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা।
এখানে মাঝে মাঝেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে আমরা কেন নিজেদের পাঠ্যক্রম চর্চার দায় নিজেদের ওপর নিতে পারি না, বিশেষ করে যখন আমরা আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিজেরাই করছি? যদি ইওরোপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চার পাঠ্যক্রমের সংস্করণ, অন্যান্য সমাজের রাষ্ট্র পরিচালনা তত্ত্ব, ধারণা, অভিজ্ঞতা, সূত্র ব্যতিরেকেই পড়ানো যেতে পারে, তাহলে তাদের দেখাদেখি অন্যান্য সমাজ কেন এই কাজটা নিজেরা করে উঠতে পারবে না, বোঝা দায়। তথাকথিত মূলস্রোত বা ইওরোপিয়বাদ যে সব সমাজের সমাজবিজ্ঞানের মূলসূত্র, ধারণা, শ্রেণীবিন্যাসকে নস্যাৎ করে নিজেকেই শ্রেষ্ঠ ঘোষণা করতে পারে, কেন তার বিপরীতে সেই সমাজগুলি তাদের মত করে সমাজ বিজ্ঞানকে তৈরি করতে পারবে না? এই চিন্তাকে, সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দেওয়ার অর্থ হল, একটা কৃপাপূর্ণ বাস্তবতা তৈরি করা, যেখানে বলা হবে, ইওরোপই শেষ কথা বলে এবং এটি সর্বজনমান্য, যা মিথ্যা এবং গ্রহণযোগ্য নয়। যদি কোন সমাজ বিজ্ঞানের পড়ুয়া বলে সে পশ্চিমের সমাজ তাত্ত্বিকদের ভাবনা তত্ত্ব এবং পদ্ধতি ছাড়া কাজ করার কথা ভাবতেই পারে না, তাহলে সেটা তার নিজের ভাবনা, কিন্তু এই ভাবনাকে সার্বজনীন হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার, বা অন্যান্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই।
বিষয়টা হল ইওরো-আমেরিকিয় চিন্তাবিদদের তৈরি করে দেওয়া কাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে, অ-সাদা সমাজের চিন্তকদের ভাবনাচিন্তা জ্ঞানচর্চার ধারাকে বাদ দিয়ে তৈরি করা সমাজ বিজ্ঞানের পাঠয়ক্রমকে প্রশ্নহীনভাবে অনুসরণ করে যাওয়ার মধ্যে কিন্তু সাদা চামড়ার পাঠ্যক্রমকে কিন্তু সবল করা যাবে না, যদি অন্যচিন্তার প্রবেশ না ঘটে সেই পাঠ্যক্রমে। প্রত্যেক মিনিট, প্রত্যেক ঘন্টা, প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক বছর এই কাঠামোটি তৈরি করে পশ্চিম আমাদের ভাবনাকে রুদ্ধ করে চাপিয়ে দিচ্ছে, সেখানে আমাদের অসাদাদের, আমাদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞানচর্চা, শ্রেণীবিভাগ করা কাঠামোর কোন অস্তিত্ব নেই, যার মাধ্যমে আমদানি করা শ্রেণী বিভাগে অভ্যস্ত হয়ে পড়া আমরা, আমাদের পরিবেশ ইত্যাদির সঙ্গে অর্থপূর্ণভাবে সংযোগসাধন করতে পারি।
No comments:
Post a Comment