পারস্য সূত্র
এবারে আমরা বিপদের দিকে হাঁটছি। যদি শব্দটা খেজর হয় তাহলে
এটি পারসি শব্দ হতে বাধ্য। আরবি ভাষীরা একে খিদর উচ্চারণ করবে। Sulayman Hayyim’s New
Persian-English Dictionary দুটি শব্দ খেজর আর খেজের পাচ্ছি - noun A Khezr, or the prophet Elias (whose soul
is transmigrated into other forms). [Khezr is said to have discovered and drunk of the
Water of Life whence he became immortal]’ কিন্তু খেদর নয়।
আরবি হলে খিদর হলে এটা আরবি হওয়া উচিৎ। কিন্তু এর আগে আমরা বলেছি, বাংলায় ইলিয়াস
নবির পুজা আরবি ব্যবসায়ীরা বাংলায় নিয়ে আসে, কিন্তু খিদর বা খেদর শব্দের কোন
উল্লেখ আমরা ইংরেজি-আরবি অভিধানে পাচ্ছি না। কারণ পারসি ভাষায় চারটে জেড অক্ষর
আছে, যেগুলোর মধ্যে খুব বেশি উচ্চারণ ভেদ নেই। আরবেরা এই চারটে জেডকে নানাভাবে
তাদের ভাষায় ব্যবহার করে। তারা যদি কোন পারসি শব্দ নেয় সেখানে জেডকে কঠোর(harsh) উচ্চারণে ব্যবহার করে। ফলে আরব খিজর/খিদরএ যে জেড ব্যবহার
করেছে, তা ইংরেজি উচ্চারণে ড(d)এর মত হবে, ফলে ইংরেজি বয়ানে সেটা খিদরই দাঁড়ায়। আবার জেড
উচ্চারণ নিয়ে আরবি পারসি অভিধানে কিন্তু খিজর আর খিদর দুটোই এক।
মনে রাখা দরকার নবম শতের শেষে আব্বাসি খালিফার নেতৃত্বে
পারস্য দখল করে বিশেষ করে ক্যাসপিয়ান (Qazvin) অঞ্চলে(El Hibri, Tayeb, Reinterpreting
Islamic Historiography: Harul-al-Rashid and the Narratives of the Abbasid
Caliphate)। ফলে বহু পারসি শব্দ,
বিশ্বাস, প্রথা আজ আরবি কৃষ্টি আর শব্দে ঢুকে পড়েছে।
বাংলায় পার্সি সূত্র থেকে আসা আরবি পারসি শব্দ বহু
পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বাংলার উপকূলে নবম শতে আরবি ব্যবসায়ীরা পা রাখেন,
অন্যদিকে পার্সিরা আসেন সপ্তদশ শতকে। এটাও হতে পারে আরব ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করে
পার্সি আঙ্গিকটা অনুসরণ করে বাংলায় এই প্রথাটা আনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে। এটাও এ
প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার অনেক সময় নবম শতের পরে দীর্ঘ দিন ধরে পারস্য থেকে বিতাড়িত
তাজিকদেরও আরব বলা হত(Ali, M.M., 1985, History of
the Muslims of Bengal)। আমরা যথা সময়ে এই বিষয়টা
আলোচনা করব। বাংলাদেশে খিজর হলেন খোয়াজ খিজির, যার জলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আছে।
No comments:
Post a Comment