দেবাঞ্জন বেরা আমাদের পরমএর ভাল বন্ধু - কয়েকদিন আগের আমার একটা ফেবু প্রকাশনীতে মন্তব্য করেছিলেন - এই বাংলার ধ্বংসক্রিয়া, তার বিরুদ্ধে গ্রামীণদের লড়াই - যা বলতে চেয়েছি, সেই তথ্যগুলো কি করে পাওয়া যাবে - কোন বইতে? তার উত্তর দিয়েছি। সেটাকে আরো একটু বাড়ানো যাক।
সেই তথ্য নানান ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে - খুঁটে নেওয়া দরকার - যেমন সুপ্রকাশ রায়ের বইতে রয়েছে তথাকথিত বিদ্রোহের ইতিহাস - আমাদের ভাষায় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। পলাশির পাঁচ বছর পর থেকে ফকির সন্ন্যাসীরা লড়াই করেছিলেন, সেখান থেকে শুরু করেছেন - ভারতের কৃষক বিদ্রোহ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বইটার নাম - তার নিজস্ব ধারণা যা রয়েছে তা এড়িয়ে তথ্যগুলো দেখতে হবে। আর রয়েছে অসংখ্য গ্রামীন ছড়া, গান, নাটক। কিছুটা সুখবিলাসদা(বর্মা) আলোচনা করেছেন তাঁর ভাওয়াইয়া গবেষণা পুস্তকে।
আর মধ্যবিত্তের এই আন্দোলনের বিশ্বাসঘাতকতা? সেতো নবজাগরণের ইতিহাস মন দিয়ে পড়লেই পাওয়া যাবে - কিভাবে উচ্চবর্ণ ইংরেজি শিক্ষিত বাঙ্গালী নিজের হাজার হাজার বছর ধরে বিকশিত শিক্ষা ব্যবস্থা, নিজের শিল্প, নিজের সমাজ - যা অবলম্বন করে সে বিশ্ব জয় করেছিল - সেই কাঠামো ধ্বংস করে তথাকথিত প্রগতিশীলতার দোহাই দিয়ে - ইওরোপের শিল্প বিপ্লবের ধাত্রী পরিকাঠামো, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রয়ুক্তি বাংলায় রোপন করছে - তার ইতিহাস ভুরি ভুরি - এ নিয়ে ইওরোপের/আজকেরামেরিকার প্রশ্রয়ে বহু গবেষণা হয়েছে, হচ্ছে এবং আগামীদিনে আরও বেশি হবে - শুধু অনুসন্ধিৎসুকে ভাষার ঘোমটা ওলটাতে হবে - নবজাগরণের পথিকৃতরা এমন কি সাবল্টার্ণ ঐতিহাসিকেরাও ইওরোপিয় গণতন্ত্রকে - পড়ুন রঞ্জিত গুহর বাংলায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়ে একটা চটি বই - তাতে তিনি স্পষ্ট বলছেন ফিলিপ ফ্রান্সিস ভারতে এসেছিলেন ভারতের জমি ব্যবস্থাকে উদ্ধার করতে - সেটা প্রগতিশীল কাজ ছিল - ভাবা যায় - শুধু তাঁরা নয় যারাই ইওরোপ মানেই প্রগতিশীলতা বলে ইওরোপের দাদালি করছেন সেই ভাবনাগুলোকে গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে - তবেই ধ্বংসের ইতিহাস স্পষ্ট হবে।
বঙ্কিমচন্দ্রের মত পুজ্য ডেপুটি, বা রমেশ দত্ত বা অনদাশঙ্করের বা শৈবার গুপ্তের মত আইসিএস যারা আদালতে বা প্রশাসনে বা পুলিশে চাকরি করছেন, তাঁরা কি এই স্বাধীনতা সংগ্রামী বা বিপ্লবী বা বিদ্রোহীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন? না তাঁদের স্বাধীনতা আন্দোলনে সাহায্য করেছিলেন? আপনার কি মনে হয়? বিদ্যাসাগর যে নীলমাধব মুখোপাধ্যায়ের থেকে ৬০০ টাকা ধার করে ছাপাখানা করে প্রথম বই ছাপলেন তার প্রথম অর্ডার ছিল ফোর্টুইলিয়ম কলেজের মূল্যছিল ৬০০টাকা ইয়াতে তিনি তাঁর ধার শোধ করে দিতে পারেন - তাই হয়ত তাঁকে সাংখ্য বা বেদান্তকে মিথ্যে ঘোষণা করে তাঁর বদলে ইওরোপিয় দর্শন পড়ানোর নিদান দিতে হয় আর সংস্কৃত কালেজে সংস্কৃত বদলে ইংরেজি শিক্ষক নিয়গের আবেদন করতে হয়। এক বিদেশি অর্থে পুষ্ট নবজাগরণের প্রোডাক্টদের নিয়ে যে ইতিহাস তৈরি হয়েছে, বা তাঁরা যা লিখেছেন সেগুলির মর্মোদ্ধার বা ঘোমটা ওল্টালেই এই তিহাসের ছোঁয়া পাওয়া যাবে।
আর পরমে ধারাবাহিকভাবে প্রকল্প নবজাগরণ প্রকাশ পাচ্ছে। সেখানে স্বাগত।
No comments:
Post a Comment