---
গত বছর এই সময় দীপঙ্করদার যে কাসুন্দি ঘাঁটার প্রশ্ন তুলেছিলেন তার পরিধি একটু বাড়ানো যাক।
পড়লে পড়ুন, গায়ে ছ্যাঁকা লাগলে এড়িয়ে যান।
----
ব্রিটিশ প্রণোদিত ধংসযজ্ঞের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে, পলাশীর পাঁচ বছর পর থেকে ফকির সন্ন্যাসীদের নেতৃত্বে গ্রামীণ বাঙলা বুক চিতিয়ে লড়াই দিয়েছে আগ্রাসী ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে। শহুরে বাঙলার সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্রিটিশ প্রসাদপুষ্ট জনসাধারণ একবারও স্বাধীণতা সংগ্রামী(মধ্যবিত্তের ইতিহাসে বিদ্রোহী)দের পাশে এসে দাঁড়াবার কথা ভাবেননি - বরং সরকারি চাকুরে, দালাল হয়ে সব লড়াইগুলোকে ধ্বংস করেছে, মুখ ফিরিয়ে থেকেছে। ধংস লুঠ হতে থাকা গ্রামীন বিকেন্দ্রিত, বড় পুঁজি বিহীন, জ্ঞান দক্ষতা নিজের বাজার নির্ভর শিল্প-ব্যবসা-সামাজিক রীতিনীতিগুলি ভিত্তি করে বেঁচে থাকা লাখো লাখো স্বাধীণতা সংগ্রামী শ্রমিক-শিল্পী, তাদের পরিবার এবং এই কাজের ওপর নির্ভর করে পরোক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা হাজারও মানুষ খুন হলেন, জীবিকা থেকে উচ্ছেদ হলেন, শিল্পী থেকে পথের ভিখারি হলেন, আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে জাতিরাষ্ট্র ব্যবস্থায় মুখাবয়বহীন আমনাগরিকে রূপান্তরিত হলেন।
গত বছর এই সময় দীপঙ্করদার যে কাসুন্দি ঘাঁটার প্রশ্ন তুলেছিলেন তার পরিধি একটু বাড়ানো যাক।
পড়লে পড়ুন, গায়ে ছ্যাঁকা লাগলে এড়িয়ে যান।
----
ব্রিটিশ প্রণোদিত ধংসযজ্ঞের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে, পলাশীর পাঁচ বছর পর থেকে ফকির সন্ন্যাসীদের নেতৃত্বে গ্রামীণ বাঙলা বুক চিতিয়ে লড়াই দিয়েছে আগ্রাসী ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে। শহুরে বাঙলার সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্রিটিশ প্রসাদপুষ্ট জনসাধারণ একবারও স্বাধীণতা সংগ্রামী(মধ্যবিত্তের ইতিহাসে বিদ্রোহী)দের পাশে এসে দাঁড়াবার কথা ভাবেননি - বরং সরকারি চাকুরে, দালাল হয়ে সব লড়াইগুলোকে ধ্বংস করেছে, মুখ ফিরিয়ে থেকেছে। ধংস লুঠ হতে থাকা গ্রামীন বিকেন্দ্রিত, বড় পুঁজি বিহীন, জ্ঞান দক্ষতা নিজের বাজার নির্ভর শিল্প-ব্যবসা-সামাজিক রীতিনীতিগুলি ভিত্তি করে বেঁচে থাকা লাখো লাখো স্বাধীণতা সংগ্রামী শ্রমিক-শিল্পী, তাদের পরিবার এবং এই কাজের ওপর নির্ভর করে পরোক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা হাজারও মানুষ খুন হলেন, জীবিকা থেকে উচ্ছেদ হলেন, শিল্পী থেকে পথের ভিখারি হলেন, আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে জাতিরাষ্ট্র ব্যবস্থায় মুখাবয়বহীন আমনাগরিকে রূপান্তরিত হলেন।
বাংলা/ভারতের কয়েক হাজার বছরে বিকশিত শিল্প ব্যবস্থা ধংস, ব্যবসা লুঠ-দখল করে, জ্ঞান চুরি করে ইংলন্ডে শিল্প পরিকাঠামো গড়ে উঠল। এই পরম্পরার উতপাদকেদের জীবনে, নতুন নতুন ধরনের অমিত-পাশবিক অত্যাচার নামিয়ে এনে গ্রামীণ স্বাধীণতা সংগ্রামীদের জীবিকা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে সরাসরি, যে কাজে সর্বান্তকরণে সমর্থন দিয়েছেন বাঙলার শহুরে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত সাম্রাজ্যের বন্ধুরা। ব্রিটিশদের অমানুষিক অত্যাচারে, কখোনো শহুরে বাঙালির ঔদাসিন্যে, কখোনোবা তাদের প্রত্যক্ষ মদতে, কোটি কোটি সাধারণ মরে হেজে যাওয়া গ্রামীণ বাঙালি, যারা জানল না কি দোষে তাদের খুন হতে হল অথবা ছেলেমেয়েবউনিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হল, অথবা খেতমজুরি করে খেতে হল।
আজ তারা জবাব চায় - উত্তমর্ণ অর্থনীতির উদ্বৃত্ত শিল্পোন্নত দেশ থেকে অধমর্ণ বাঙলাকে, ইওরোপের সংস্কৃতি-অর্থনীতির ওপর সরাসরি নির্ভরশীল দেশে পরিণত করার জন্য বাঙলার চিরাচরিত শিল্পী-কারিগরেরা শহুরে নবজাগরণের গুরুঠাকুরদের উত্তরাধিকার যাঁরা বহন করছেন সেই উজ্জ্বল ইংরেজি শিক্ষিত বাঙালিদের কাছে।
জবাব চায় ভারতীয় সমাজের হাজার হাজার ধর্ম নির্বিশেষে কৃষক-শিল্পী-উৎপাদক, যারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঝান্ডা তুলে তোপের মুখে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন, রাইফেলের বেয়নেটের আঘাত খেয়েও লুঠ হয়ে যাওয়া সমাজমাতৃকার সম্মান রক্ষায় ব্যক্তিগত লাভ লোকসানের সমঝোতার হিসেবের কড়ির কথা বিন্দুমাত্র চিন্তা করেননি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সেনা-পুলিশের অত্যাচারে খুন হয়েছেন, অথচ মাথা বিকিয়ে দেননি বিদেশি লুঠেরা সাম্রাজ্যের শক্তির পায়ে। তারা সাম্রাজ্যের বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে চায়, কী তাদের দোষ, কার দোষে তিল তিল করে গড়ে তোলা দেশটির হাঁড়ির হাল হল।
শহুরে বাঙালিরা চিনকে আফিম মাদকে মত্ত করার ইংরেজ প্রকল্পে সামিল হয়েছিলেন কেন সেই স্পর্ধিত প্রশ্ন তারা করতে চাইছে আজ। শহুরে বাঙালিদের পূর্বজরা, নিজেদের এবং পরিবারে সম্পদ বাড়াবার জন্য, সমাজে আরও একটু প্রতিপত্তি বৃদ্ধির জন্য, ব্রিটিশদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন, সেই কর্মকে প্রত্যেক বাঙালির প্রশ্ন করা প্রয়োজন। আজও বাঙলার খ্যাতিমানেরা ব্রিটিশ প্রণোদিত বাঙলা ধংস প্রকল্পের সফল কৃতকর্মের জন্য বাঙলা তথা ভারতে পুজ্য, প্রণম্য এবং আদরনীয়, অথচ বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গিয়েছেন বাঙলার স্বাধীনতাকামী পরম্পরার আর গ্রামীন সমাজ।
স্বাধীণতা সংগ্রামী বাঙলা আজ জবাব চায়।
সব হারানোর হিসেব নিকেষ করতে চায়।
সব হারানোর হিসেব নিকেষ করতে চায়।
No comments:
Post a Comment