(State
and Finance in the Eurasian Continuum in the Early Modern Times: INDIAN
MERCHANT/BANKERS TO THE RESCUE OF THE EUROPEAN COMPANIES,
EASTERN INDIA, C. 1650 – 1757: SUSHIL CHAUDHURY)
স্থানীয় ঋণ বাজার থেকে ধার নেওয়া
স্বাভাবিকভাবেই পুঁজির অভাব মেটাতে
কোম্পানিগুলোর কাছে স্থানীয় ঋণ বাজারে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকত না। কোম্পানির
আমলারা বাজারে গিয়ে দেখল বাংলার ঋণ বাজারের ব্যবস্থা অসাধারণ নিয়ন্ত্রিত এবং
অসম্ভব কার্যকর। সপ্তদশ শতের শেষে এবং অষ্টাদশ শতের শুরুতে বাংলার ঋণের নানান ব্যবস্থা এবং আর্থিক machinery খুবই বিকশিত
হয়েছে। বাজারে বিপুল সংখ্যক বৃহৎ সওদাগর, বিশেষ করে স্রফেদের(ব্যাঙ্কার, অর্থ
বিনিময়ী) উপস্থিতি আমাদের তত্ত্ব প্রমান করে, যে সময়টা আমরা আলোচনা করছি, সে সময়ে
সওদাগরি পুঁজি(merchant
capital), এবং ব্যবসায়ী
সংগঠন(commercial
organization) অসম্ভব বিকশিত
হয়েছে। ফলে ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি স্থানীয় ঋণ বাজার থেকে তাদের বিনিয়োগের জন্য
ঘাটতি পুঁজি ধার করার সিদ্ধান্ত নিল। যদিও বাৎসরিক ভাবে আলাদা আলাদা কোম্পানি
আলাদা আলাদা করে কত পরিমান অর্থ স্থানীয় বাজার থেকে ধার নিয়েছে সে তথ্য পরিষ্কার
না হলেও যে সব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলি আপনাদের সামনে আমি সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
করছি।
অষ্টাদশ শতকের শুরুতে কলকাতা এবং কাশিমবাজারের
স্রফ/সওদাগরেদের গদিতে নির্দিষ্ট তারিখে ব্রিটিশ কোম্পানির ধার ছিল ০.৭ মিলিয়ন এবং ০.২৫ মিলিয়ন।
১৭২০/২১ সালে বাংলায় কোম্পানির মোট দেনা ছিল ২.৪ মিলিয়ন এবং এটা
১৭৪৭/৪৮এ বেড়ে দাঁড়ায় সুদ ছাড়া ৫.৫ মিলিয়ন। ডাচ কোম্পানিও স্থানীয় বাজার থেকে
নিয়মিত ধার নিত। ১৭২৪ সালে সুদ সহ কাশিমবাজারে ডাচেদের ধারের পরিমান ছিল ১.৫
মিলিয়ন। প্রথম দিকে জগতশেঠেরা ডাচেদের উত্তমর্ণ ছিল। ১৭৩৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর জগতশেঠেদের
গদিতে কোম্পানির মোট ধারের পরিমান ছিল ০.২৬ মিলিয়ন। কাশিমবাজারের কাটমারাও পিছনে
ছিল না। কাটমা পরিবারের আটজন ধার দিত, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের থেকে ধার
করেছিল ১০৬৭৯৪ টাকা। এমন কি বেলজিয়ান(Ostend) আর ফরাসী কোম্পানিও স্থানীয় ঋণ বাজার থেকে
ধার নিত। বেলজিয়ানদের স্থানীয় ব্যাঙ্কার আর স্রফেরা ধার দিত। তাদের বাংলা প্রধান
আলেকজান্ডার হিউম লেখেন যে ১৭৩০ সালে ফতেচাঁদদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, নয়নসুখবাবু (Nainsook Babu) কোম্পানিকে বিপুল পরিমান অর্থ ধার দিয়েছে। একইভাবে
ফরাসীরা তাদের পুঁজি জোগাড়ে স্থানীয় বাজারের ওপর নির্ভর করেছে। ফতেচাঁদ ছিলেন
ফরাসীদের সব থেকে বড় উত্তমর্ণ। সে সময়ের ফরাসি নির্দেশক ডুপ্লে ফতেচাঁদকে ইহুদিরও
ইহুদি আর আমাদের খুনি বলে অভিহিত করেছেন, কিন্তু তাঁকেও সময়ে সময়ে শেঠেদের কুঠির
শরণাপন্ন হতে হয়েছে ৩ লক্ষ টাকার জন্যে। ডুপ্লে ধার করার জন্য কোন আলাদা গদিতে
আস্থা রাখতেন না, ধনী থেকে গরীব কাটমা, সক্কলের গদিতে তিনি ধারের জন্য আস্থা
রেখেছিলেন।
তবে ইওরোপিয় কোম্পানিগুলোকে সব থেকে বেশি ধার
দিয়েছে জগতশেঠের পরিবার। ১৭১৮ থেকে ১৭৩০ পর্যন্ত ব্রিটিশ কোম্পানি শেঠেদের গদি
থেকে বছরে গড়ে ধার করেছে ০.৪ মিলিয়ন ডলার। ১৭৫৫-৫৭, এই তিন বছরে জগতশেঠেদের গদিতে
তাদের ধারের পরিমান দাঁড়ায় ২.৪ মিলিয়ন। ১৭৫৭য় ডাচেরা শেঠেদের থেকে ০.৪ মিলিয়ন ধার
করে আর মার্চে চন্দনগরের পতনের সময় ফরাসীদের ধার ছিল ১.৫ মিলিয়ন টাকা। সে সময়ে
বাংলায় আসা ব্রিটিশ ব্যক্তিগত ব্যবসায়ী ক্যাপ্টেন ফেনউইক বলছেন ১৭৪৭-৪৮ সালে
ফরাসীদের মোট ধার ছিল ১৭ লক্ষ টাকারও বেশি, অন্য দিকে বাংলার ব্রিটিশ আমলা উইলিয়াম
ওয়াটস ক্লাইভকে ১৭৫৭র ১৮ ফেব্রুয়ারি লিখছেন, শেঠেদের কাছে ফরাসিদের ধার ছিল ১৩
লক্ষ।
No comments:
Post a Comment