(এই পোস্ট প্রসঙ্গে অনুবাদকের পক্ষে
কটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাগ করে নেওয়া যাক – ১) সুশীল চৌধুরীর সঙ্গে সমান্তরালভাবে
বাংলায় ডাচেদের নিয়ে অসামান্য কাজ করা ওম প্রকাশের দাবি, এবং এই বইতে সুশীলবাবু
সেটাও কোথাও পরোক্ষে সমর্থনও করেছেন, উপমহাদেশের মোট উৎপাদনের মাত্র ১০% ইওরোপে
রপ্তানির জন্যে যেত। ফলে পলাশীর আগে উপমহাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে ইওরোপ কোন তুলনাতেই
আসত না। অথচ আমাদের ইওরোপমুখী শিক্ষিতরা ইওরোপ ছাড়া ভারত, এশিয়া আফ্রইকা বা অন্য
দেশ বা মহাদেশের সঙ্গে উপমহাদেশের বাণিজ্য প্রচেষ্টা নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করেন
নি। ২) পলাশীপূর্ব সময়ে বাংলার অর্থনৈতিক ‘দুর্গতি’র জন্যে ব্রিটিশ রপ্তানির
পরিমান কমেছিল, এবং সেই জন্যে পলাশী ঘটেছিল এই সিদ্ধান্তে আসা বাতুলতা মাত্র)
অষ্টাদশ শতকের প্রথম দুই দশকে ডাচ আর
ব্রিটিশদের রপ্তানির হিসেব নিলে আমরা বুঝতে পারব যদিও ডাচেদের আন্তএশিয় বাণিজ্য
পরিমান বাদ দিলেও তারা রপ্তানি ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের তুলনায় অনেক এগিয়েছিল। কিন্তু
দ্বিতীয় দশকের শেষে তারা ডাচেদের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল, যদিও ডাচেদের আন্তএশিয়
বাণিজ্য ব্রিটিশদের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। এই তালিকায় আমরা অঙ্কটি স্পষ্ট বুঝতে
পারি(এই পোস্টের সঙ্গে ছবিটি দ্রষ্টব্য)।
১৭৪০এর প্রথম পাঁচবছরে বাংলা থেকে
ইওরোপে রপ্তানি সর্বকালের সর্বোচ্চ পরিমানে পৌঁছয়। বাস্তবিক ১৭৩০ থেকে ব্রিটিশদের
বাংলা সুবা থেকে রপ্তানি ক্রমশ বাড়ছিল। ১৭৫০এর দশকের প্রথম পাঁচ বছরে গড় রপ্তানি
কিছুটা হলেও পড়ে যায়, কিন্তু উল্লিখিত দ্বিতীয় তালিকায় উল্লিখিত ১৭৩০-১৭৫৫ পর্যন্ত
সময়ে থেকে আমরা বুঝতে পারি বাংলা থেকে গড় পণ্য রপ্তানি খুব বেশি কিছু কমে নি। এটাও
এ প্রসঙ্গে বলা দরকার ১৭৫০এর দশকের প্রথম পর্বে যদিও ব্রিটিশ গড় রপ্তানির পরিমান
কমে যায়, কিন্তু বাংলা থেকে ডাচেদের বিপুল রপ্তানি সামগ্রিক ইওরোপিয় ব্রিটিশ রপ্তানির
এই পতনকে বুঝতে দেয় নি, বাংলা থেকে গড় রপ্তানির পরিমান একই থেকে যায়। ফলে বাংলার
অর্থনৈতিক ‘দুর্গতি’র জন্যে ব্রিটিশ রপ্তানির পরিমান কমেছিল, এই সিদ্ধান্তে আসা
বাতুলতা মাত্র।
তালিকা ৩.১, তালিকা ৩.২
No comments:
Post a Comment