কিন্তু এতে যে
কোন কাজ হল না, সেটা পরের ঘটনায় প্রমান হবে। পাঁচ দিন পরে কাউন্সিল আবার বণিকদের
ডেকে লন্ডনের কর্তাদের পক্ষ থেকে পাঠানো নির্দেশনামা দেখাল(For these orders,
see BPC, vof 26, f. 161, 4 June 1753)। কিন্তু এবারেও বণিকেরা সরাসরি কোম্পানির শর্তে কাজ করতে
অস্বীকার করল। বণিকদের হাতে সময় ছিল, এবং এই দরকষাকষিতে তারা অনেকটা কোম্পানির
থেকে এগিয়েছিল। দরকষাকষি চলছে জুন মাসের শুরুর সময়ে। সে বছরের পুঁজিকে যদি খাটাতে হয় তাহলে কাউন্সিলকে যত
তাড়াতাড়ি সম্ভব চুক্তিতে অবতীর্ণ হতে হবে। কাউন্সিল সনির্বন্ধভাবে ব্যবসাদারদের
অনুরোধ করল, যদি তারা তাদের চুক্তির শর্ততে যদি নমনীয় হয়, বিশেষ করে তারা ৮৫%র কমে
অগ্রিম দাদনি নিলে কোম্পানি মহোদয়ের সুবিধে হয়। ব্যবসায়ীরা নিজেদের দেয় শর্ত থেকে
সরতে অনিচ্ছুক। কোম্পানির হাতে আর অন্য কোন উপায় নেই, তাকে যে কোন উপায়ে পুঁজি
জোগাড় করতেই হবে। আবার তারা ব্যবসায়ীদের ডাকিয়ে কুঠিতে আনল, এবং বলল, they were no more Hon'ble Company's Dadney merchants। এইভাবে শেষ হয়ে গ্যাল একশ বছর ধরে রমরমিয়ে চলা দাদনি
ব্যবস্থা, বাংলায় শুরু হল গোমস্তা(সুশীলবাবুর ভাষায় paid agents or servants) ব্যবস্থা, যারা কোম্পানির হয়ে বিভিন্ন আড়ং থেকে পণ্য
কিনবে(Ibid., f. 161vo, 4June 1753; C&B. Abstr., vol. 5, ff 4~5-26; Beng. Letters Recd., vol 22, ff. 417-19,_para._32-35; FWIHC, pp. 682-83, para. 33-35, 3 Sept. 1753)।
সাম্প্রতিক
প্রখ্যাত এক গবেষকের গবেষণায় বলা হচ্ছে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাংলা ব্যবসা
দাদনি থেকে গোমস্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তিত হল নাকি বাংলার দাদনি বণিকদের অবস্থার
পতনের জন্যে। আধুনিক কালের অন্যতম প্রখ্যাত এই গবেষক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন
কোম্পানির রপ্তানি গুদামের ব্যবস্থাপক চার্লস ম্যানিংহ্যাম এবং উইলিয়াম
ফ্রাঙ্কল্যান্ডের(১৭৫৩) সমীক্ষা আর ডাচ প্রধান জাঁ কারসেবুমএর memorieর প্রেক্ষিতে। তিনি সারাংশ পর্বে লিখছেন, ... the textile trade of Bengal and the merchants connected with it were' already
approaching the end of the road. That end came in 17 53 (K.N.
Chaudhuri, Trading World, pp. 311-12)।
কিন্তু প্রখ্যাত ঐ গবেষক যে দুটি উপাত্ত ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন,
সেই দুটি তথ্যভাণ্ডার অতি সাবধানে এবং সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গীতে আলোচনা করলে
দেখব, যে তিনি যে পদ্ধতি মেনে দাদনি বণিকদের পতনমুখ অবস্থার সিদ্ধান্তে উপনীত
হচ্ছেন এবং তার জন্যেই কোম্পানি দাদনি ব্যবস্থা থেকে গোমস্তা ব্যবস্থায় নিজেদের
ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাচ্ছে, সেটি কত ভঙ্গুর এবং অসমর্থনযোগ্য। এটা সত্য, ১৭৫৫ সালে
মেমরিতে কারসেবুম নদিয়ার রাজার কাছাকাছি থাকা চার শান্তিপুরী ব্যবসায়ীর অবস্থার
পতন ঘটায় কোন মহাজন বা ব্যাঙ্কার/স্রফ(wisselaars of
banquier) তাদের ধার দিতে সাহায্য করতে চায় নি। স্রফদের ছুতো ছিল
বর্তমানের ব্যবসা খুব দুর্গতির এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে(Dutch Director Jan Kerseboom's 'Memorie', VOC, 2849, ff.
93vo-94vo, 14 Feb. 1755)। ডাচ কোম্পানিও
তাদের পুঁজি, আড়ং থেকে পণ্য গোমস্তা মার্ফত কেনার মাধ্যমে বাংলায় বিনিয়োগ করার
সিদ্ধান্ত ন্যায়(Ibid., f.95vo, 14 Feb. 1755)।
No comments:
Post a Comment