বিভিন্ন বিদেশি
মুদ্রা এবং উপমহাদেশের নানান এলাকার নানান রকমের মুদ্রার(সেগুলোকে বাংলার মুদ্রা
হিসেবে পরিবর্তন করার জন্য নেওয়া) বাটা থেকে বিপুল সম্পপদ উপার্জন করত জগতশেঠের
মহাজনী গদি। এই কম্মটা শুধু বাংলায় নয়, উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তেও ঘটত। এছাড়াও
বাংলা সুবার জমিদারদের বকেয়া রাজস্ব আর আমিলেরা সারা সুবা জুড়ে অন্যান্য কিছু
সরকারি দাবি আদায় করতেন সে সব নবাবের সিন্দুকে যাওয়ার আগে জমা হত জগতশেঠের গদিতে। দেনাদারদের
জামিন থাকতে শুরু করেন জগতশেঠেরা।
তারা ইওরোপিয়
কোম্পানিগুলিকে যে ধার দিতেন সেগুলি থেকে বার্ষিক ১২% সুদ ধার্য করতেন। ১৭৪০ সালের
১১ ডিসেম্বর কলকাতা কাউন্সিল কাশিমবাজারকে জানাল শেঠেরা কোম্পানির সনির্বন্ধ
অনুরোধ মান্য করে বার্ষিক সুদের হার ১২ থেকে ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে রাজি হয়েছেন(BPC, vol. 14, ff. 317-17vo, 11 Dec. 1740)। এই দিনই
আরেকটি চিঠিতে কলকাতা কাউন্সিল জগতশেঠ ফতেহচাঁদকে চিঠি লিখে সুদ হ্রাসের অনুরোধ
জানাল। এর ঠিক ১০ দিন পরে কাশিমবাজার কাউন্সিল নতুন ৯ শতাংশ হারে ৬০ হাজার টাকা
জগতশেঠের মহাজনী গদি থেকে ধার করে(Ibid., vol. 14, f.
337, 26 Dec. 1740)। ১৭৪২ সালে এক দিনে কোম্পানি ধার করে ২ লক্ষ টাকা নতুন
হারে কলকাতা গদি থেকে(Ibid., vol. 15, f. 84vo, 29 March I 742)। ডাচ আর ফরাসীরাও হাত খুলে জগতশেঠেদের থেকে ধার করত।
জগতশেঠের হার কমানোর দৃষ্টান্ত তাদের বাংলা পুঁজির বাজারের ওপর সামগ্রিক একচ্ছত্র
নিয়ন্ত্রণের ছবি তুলে ধরে।
অষ্টাদশ শতকের
চারের দশক থেকে কার্যত বাংলার পুঁজির বাজারে একচেটিয়া ব্যবস্থা কায়েম করে জগতশেঠেদের
গদি। বাংলার অন্যান্য স্রফ, মহজন এবং ব্যাঙ্কারেরা একাগ্র নজরে তাকিয়ে থাকত
জগতশেঠেদের গদি পুঁজির বাজার নানান চলক বিষয়ে কি নীতি গ্রহণ সেই দিকে। ১৭৪২ সালের ৭
জুন মারাঠা আক্রমনে জগতশেঠ মুর্শিদাবাদের বাসস্থান ত্যাগ করার খবরে মুর্শিদাবাদ
কাউন্সিল লিখল, no merchant or shroff of any consequence will think
themselves safe in the city tillJuggutseat comes to reside there এবং নবাব
জগতশেঠকে শহরে ফিরে আসতে বললেন কেননা his presence being as necessary to the Nabob as to the merchants আর his conduct being the general guide to all of them (Fact. Records, Kasimbazar, vol. 6, 7 June 1742; BPC, vol. I 5, f. 188, IO June 1742)। ১৪
জুন থেকে জগতশেঠের পরিবার পরিজনদের মুর্শিদাবাদে ফিরে আসার খবরের সঙ্গে সঙ্গে সে
শহরের বাকি গুরুত্বপূর্ণ স্রফ, ব্যবসায়ী, ব্যাঙ্কার, মহাজনদেরও পুরোনো বাসস্থানে
দ্যাখা গ্যাল(Ibid., 'vol. 6, 14 June 1942; BPC, vol. 15, f. 194vo, 21
June 1742)। আবার ১৭৪৩ সালে নতুন করে মারাঠা হ্যাঙ্গামে যখন ফতেহচাঁদ
মুর্শিদাবাদ ছাড়লেন ৬ জুন কাশিমবাজার ফ্যাক্টরেরা কলকাতাকে লিখল, It is wholly impracticable to raisermoney there for never was known
so·great · a scarcity occasioned by the tetreat·of Futtichund(Ibid., vol. 6, 6June 1743; BPC, vol. 16, f. 18lvo, IO June 1743)। ২ জুলাই তারা মন্তব্য করল Futtichund is returned and money is more plenty here(Ibid., vol. 6, 2 July 1743)।
No comments:
Post a Comment