কাশিমবাজারের
থেকে নজর ফিরিয়ে কলকাতার ব্যবসা পরিমণ্ডলে আসি। ১৭৪১ সালে দালাল পদটি বিলুপ্ত করে
দেওয়ার পর দাদনি অগ্রিমের চুক্তির প্রেক্ষিতে সঠিক জামিনের দাবি করা হয় কোময়ানির
পক্ষ থেকে। ব্যবসায়ীরা এই শর্তে খুব বেশি খুশি ছিল না। ১৭৪৪ সালের এক যৌথ
আবেদনপত্রে তারা কাউন্সিলকে জানায় যে তারা cannot agree to this method
again when we contract for next year's investment(Ibid., vol. 17,
f.119, Annex. to Consult., 28 May 1_74)। আবেদনের উত্তরে ৮ মার্চ ১৭৪৫ সালে
কাউন্সিল জানায় তারা এই ব্যবস্থা পরিবর্তনে খুব একটা ইচ্ছুক নয়। ১৪ মার্চে
কাউন্সিল ব্যবসায়ীদের চিরাচরিত তিনটে গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে চুক্তি করতে বলে, কিন্তু
ব্যবসায়ীরা রাজি হয় না, বরং তারা বলে কোম্পানির দাদনি সুরক্ষার জন্যে তাদের সাত-আটটা
গোষ্ঠীতে ভাগ হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত – শেষ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কোম্পানি মেনে নিতে
বাধ্য হয় (Ibid.,
f.482vo, 8 March 1745i f. 488vo, i4 March 1745; C&B Abstr.
vol.5, f. 57, para. 4 &
5,
11 Aug. 1745.)।
কলকাতার ব্যবসা
জগতে শেঠ আর বসাকেরা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী পরিবার ছিল; এরাই মূলত কোম্পানির
পুঁজির ঘাটতি মেটাতে সাহ্যায্য করত। আমরা যে সময় ধরে আমাদের আলোচনাকে নিবদ্ধ
করেছি, সে সময়ে কলকাতা কুঠির দালাল পদটি বংশ পরম্পরায় দখল রাখত শেঠ পরিবারের সদস্যরা।
কোম্পানির কাগজপত্র থেকে জানা যাচ্ছে কলকাতার ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে এবং ব্রিটিশ
কোম্পানিতে শেঠ পরিবারের প্রভাবের দরুন কোম্পানির অন্যান্য বণিকেরা closed Corporation পরিণত হয়েছিল। এমন কি লন্ডনের কর্তারাও শেঠ পরিবারের প্রভাব
এবং গুরুত্ব আর কোম্পানিকে দেয় তাদের সেবাকে গুরুত্ব দিয়েও বিবেচনা করত(Ibid., vol. 19, (.
147vo, 16 March 1747)। কিন্তু শেঠেরা চতুর বানিয়া ছিল, তারা কোম্পানির মিষ্টি
কথায় ভোলে নি, বরং সময় এলে তারা কোম্পানির সঙ্গে কঠিন শর্তে দরকষাকষি করেছে। তারা কলকাতা
ব্যবসা পরিমন্ডলের সত্যকারের নেতৃস্থানীয় ছিল এবং ১৭৪৭ সালে কোম্পানিতে পুঁজি বিনিয়োগ
এবং দাদনি অগ্রিমের জামিন রাখা নিয়ে কোম্পানির সঙ্গে বিপুল বিতর্কে অবতীর্ণ হয়।
বাংলার উপদ্রুত রাজনৈতিক অবস্থা এবং মারাঠা হ্যাঙ্গামএর প্রেক্ষিতে লন্ডনের
কর্তারা ১৭৪৬এ কলকাতাকে জানাল দাদনি অগ্রিম কমানো দরকার, সম্ভব হলে দাদন না দিয়ে নগদে
পণ্য কিনতে উদ্যমী হতে(DB,
vol. 109, f.
465,
para. 33-39, 6-12 June 1746)। ১৯ মার্চ কলকাতা কাউন্সিল, লন্ডনের কর্তাদের এই প্রস্তাব
বণিকদের জানালে তারা সক্কলে সর্বসম্মতিক্রমে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং
বিকল্প প্রস্তাব জমা দিয়ে যুক্তি দিয়ে বোঝায় কেন দাদনি ব্যবস্থা জরুরি(For the
merchants' arguments, see BPC, vob 19, ff.15lvo-152;C& B.
Abstr., vol. 5, para. 32, f.
108;".Beng.
Letters Recd., vol. 21, ff.
213- 14,
para. 32; FWIHC, vol. 1, pp. 190-91)।
No comments:
Post a Comment