ডাচ কুঠির বাংলা
প্রধান কারসেরমবুমের পরের কুঠিয়াল লুই টেইলফার্ট(Louis
Taillefert)ও জগতশেঠেদের হিন্দুস্থানের শ্রেষ্ঠ মহাজন হিসেবে স্বীকার
করে নেন। তিনিও লিখলেন, জগতশেঠ হিন্দুস্থানের শ্রেষ্ঠ মহাজন। তিনি আরও লিখলেন
জগতশেঠের নাম হল্যান্ডে পাঠানো চিঠিতে এতবার লিখিত হয়েছে যে, অনেক সময় তাদের কর্তাদের
মনে হত এই ব্যক্তি আদৌ বাস্তবে আছেন কি না। তিনি লিখলেন জগতশেঠেদের হুগলী কুঠি শেঠ
মানিকচাঁদ এবং শেঠ আনন্দচাঁদের নামে চলত, ঢাকার কুঠি শেঠ শেঠ মাণিকচাঁদ এবং জগতশেঠ
ফতেহচাঁদের নামে, পাটনার কুঠি শেঠ মাণিকচাঁদ এবং শেঠ দয়াচাঁদজীর নামে ব্যবসা করত।
এই তথ্যটা খুবই গুরুত্বপূর্ন যে জগতশেঠের কুঠি কিছুটা বিহার আর বাংলার সামগ্রিক
মহাজন এবং টাকা নিয়ে ব্যবসা করা স্রফেদের কুঠিকে তাদের কুঠির প্রায় অধীনস্থ কুঠি
বানিয়ে ফেলেছিল। যারা শেঠেদের কুঠির ব্যবসা নীতি মানত না তারা সরকারের সহায়তায় সেই
সব শেঠ স্রফ ইত্যাদিদের ব্যবসায় লালবাতি জ্বালিয়ে দিয়ে ব্যবসা থেকে দূর করে দিত।
বিনিময় হারের বাটা এবং বিল অব এক্সচেঞ্জের হার সরাসরি জগতশেঠের কুঠি নির্ণয় করত
সরকারকে বিপুল অঙ্কের অর্থ উপঢৌকন দিয়ে(Louis Taillefert's
'Memorie', voe, 2849, f. 24 7vo-248vo, 27 Oct. 1755)।
অষ্টাদশ শতকের প্রথম
পাদের শেষ তিন দশকে আরেক বিপুল বড় ব্যবসায়ী উমিচাঁদ বাংলার ব্যবসা/আর্থিক জগতে
বিপুল ভূমিকা পালন করেছিলেন। আগরার ব্যবসায়ী(১৭৪৭সালের এক নথিতে উমিচাঁদ এবং
দীপচাঁদকে আজিমাবাদের বাসিন্দা আগরওয়ালা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে Fact. Records, Patna, vol. 2, 3 April 1742 আরেক নথিতে বলা হচ্ছে উমিচাঁদ আগরার প্রাক্তন অধিবাসী see BPe, vol. 17, f. 276vo) অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় শতক থেকে বাংলায় এসে ব্যবসা
করতে গিয়ে থানা গেড়ে বাংলাতেই থেকে যান। তিনি কলকাতায় ব্যবসা চালাতেন দাদনি বণিক
বিষ্ণুদাস শেঠের সহযোগিতায়, যিনি একদা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যস্থ
ছিলেন(Sinha, Economic History of Bengal, vol. l, p.6)। ১৭৩০ সালেই তিনি বাংলার শ্রেষ্ঠতম ব্যবসায়ীদের অন্যতম
হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেফেলেন। দুটি ভৌগোলিক এলাকায় তার কাজ সীমাবদ্ধ ছিল
বিহারে যার অর্থনীতি মূলত পাটনা ভিত্তিক ছিল; আর ছিল কলকাতার আশেপাশের এলাকা জুড়ে
আর্থিক নানান ব্যবসা এবং পণ্য আদান প্রদান। ১৭৩১ সালে তিনি এবং কোম্পানির মধ্যস্থ
বিষ্ণুদাস শেঠের জোটের বিরুদ্ধে দাদনি নিয়ে দুর্ণীতির অভিযোগ ওঠে। কিন্তু কলকাতা
কাউন্সিল উমিচাঁদের দাদনি দুর্ণীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে ভয় পায় কারণ তার
সহযোগিতা না পেলে বাংলায় ব্যবসার সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং তাকে আবারও দাদনির ছোটমোট
অংশ দিয়ে কোম্পানির ব্যবসায় জুড়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় for fear he should leave us to go to the French or
other European nations(BPC, vol. 8, f.
419, 21 July 1731; vol. 9, ff. 17vo-18, 23 March 1732)। ১৭৩৫ সালে আবারও উমিচাঁদের বিরুদ্ধে পুঁজি নিয়ে নানান দুর্ণীতির অভিযোগ তোলে
কলকাতা কাউন্সিল, এবং কলকাতা কাউন্সিল আবারও সিদ্ধান্ত ন্যায় যে let him have any more Dadne:y ... and to record him disqualified ever
to serve! the Company as a merchant again(C & B. Abst, vol,,4, f. 82, para. 14.4, 24 Jan. 1731)। তাঁকে আবার দাদনি বণিক হিসেবে কোম্পানিতে নেওয়া হয় ১৭৩৯ সালে এবং ১৭৫৩
পর্যন্ত যতদিন না দাদনি ব্যবস্থা গোমস্তা ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হচ্ছে, কোম্পানিকে
তাদের ঘাটতি পড়া পুঁজি সরবরাহ করত। ১৭৪৭ সালে তিনি কোম্পানির মোত বিনিয়োগের
একতৃতীয়াংশ যা in·equal proportion for ready money। কাউন্সিলের অধিকাংশ উমিচাঁদের প্রস্তাবে রাজি হলেও জন জ্যাকসন এই প্রস্তাবের
বিরোধিতা করে বলে, he thinks it imprudent to lift
up any pah,icular'one too high above the rest (BPC, vol. 19, f. 277vo, 8 J u~e 17 4 7;
Beng. Letters Recd,, vol. 21, ff. 2.19-20; FWIHC,
vol. 1, pp. 193-94)। জ্যাকসনের উত্তরে কাউন্সিলের আরেক সদস্য জন
ফস্টার লেখেন যে উমিচাঁদ, not raised above them by this contract with us but was before their superiority, his natural and acquired'car,acity for business, his extraordniary knowledge of the Inland trade and his greater command of money all which qualities I think render him a proper person to deal with for ready money (BPC, vol. 20, f.109-9vo, 15 Aug. 1747)। উমিচাঁদকে শেষ পর্যন্ত ঐ একতৃতীয়াংশ অর্থাত ৯ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়(Ibid., vol. 19, f. 298, 25.June 1747)।
No comments:
Post a Comment