বাংলায় চালু
সুদের হার ছিল ১২%। জগতশেঠ ইওরোপিয়দেরও এই হারেই টাকা ধার দিত। বারবার ব্রিটিশদের অনুরোধে তারা এই
হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনে ১৭৪০ সালে(BPC, vol. 14, ff. 317, 3l7vo, 11 Dec.
1740; f. 337, 26 Dec. 1740)। তারা সুদের হার
কমানোর পর অন্যান্য সংগঠন, পরিবার, ব্যক্তি, স্রফ ইত্যাদিরাও সুদের হার কমিয়ে ৯%তে
বাঁধতে বাধ্য হয়(Ibid.,
vol. 14, f. 338, 26 Dec. 1740)। কিন্তু কোম্পানি শেঠেদের গদি থেকেই টাকা ধার করতে থাকে। ১৭৪১ সালে কাশিমবাজার
কাউন্সিলের খাতায় পাচ্ছি – Futtychund having favoured
us jn lowering the; Interest and as we are apprehensive he
may be displeased, should we take up money of other people also
raise the interest again bn· us, agreed that we give him preference(Fact. Records, Kasimbazar, vol. 6,
Consult. 5 Feb. 1741)।
ইওরোপিয় কোম্পানিগুলোর
ধার করার কর্মপদ্ধতি হল তাদের মুল কুঠি যেমন ব্রিটিশদের কলকাতা আর কাশিমবাজার
সাধারণত ব্যবসায়ী বা স্রফদের থেকে টাকা ধার করে অধীনস্থ কুঠিদের পাঠিয়ে দিত(বিশদের
জন্যে পঞ্চম অধ্যায় দেখুন)। কোম্পানির সব থেকে বড় উত্তমর্ণ যেহেতু জগতশেঠ স্বয়ং এবং বাংলা/দেশ জোড়া
বাণিজ্যকেন্দ্রগুলোয় ছড়ানো ছিল তার হাজারো কুঠি(সুশীলবাবু ইংরেজি করছেন Agency house,
subordinate office), কোম্পানি জগতশেঠের শাখা কুঠিগুলি থেকেও ধার তুলত। আগেও
বলেছি, জগতশেঠের গদি ছাড়াও কোম্পানি অন্যান্য স্রফ আর ব্যবসায়ীর গদি থেকেও ধার
করত। আরেকটা কৌতুহলদ্দীপক ঘটনা হল কোম্পানির কলকাতা কুঠি তাদের তালিকায় থাকা দাদনি
বণিকদের থেকে টাকা ধার করত।
এই তথ্যটাও গুরুত্বপূর্ণ,
শুধুই সওদাগর, ব্যাঙ্কার এবং স্রফেরাই ইওরোপিয় কোম্পানিগুলিকে ধার দিত তাই নয়, বহু
সময় শাসক পরিবারের লোকজনও এই সব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করত/ধার দিত। কোম্পানির নথিপত্রে উল্লিখিত এই ধরণের একটা স্পষ্টতম উদাহরণ হল হাকিম বেগের
দেওয়ান, পাচোত্রা দারোগা(চুঙ্গি করের দারোগা। বাংলার ডাচ প্রধান জাঁ কার্সেবুম
১৭৫৫ সালে হাকিম বেগ সম্বন্ধে লিখছেন Daroga van de Pansjoutra of tholplaatsen' (Daroga of Pachotra or Toll places [custom houses]), and 'een grote favoriet van den Nawab'
(a great favourite of the Nawab), VOC, .2892, ff., 125vo, 127vo) কিশনদেব পোদ্দার যিনি সেই সময়ের বাংলা সুবা
প্রশাসনের গুরুত্বপুর্ন সদস্য ছিলেন(১৭৫০ সালে আলিবর্দি কিশনদেব পোদ্দারকে ব্রিটিশ
কোম্পানির সঙ্গে প্রশাসনের যোগাযোগ রাখতে নির্দেশ দিলে, কোম্পানির কাছে তার
গুরুত্ব খুবই বেড়ে যায় BPC, vol. 23, f ..
306vo, 25 Aμg. 1750)। শোনা যায় নবাব এবং হাকিম বেগের ওপরে কিশনদেবের খুব
ভাল পকড় ছিল person of very great interest
·and authority in the
government (Fact. Records,
Kasimbazar, vol. 10, 10 Oct. 1751; vol. 11, 2 Dec. 1751)। কিশনদেব ২ জানুয়ারি ১৭৫০ থেকে ১৬ আগস্ট ১৭৫৩ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কাশিমবাজার
কুঠিকে মোট ৩৩৫০০০ টাকা ধার দিয়েছিলেন(Computed from Fact. Records, Kasimbazar, vols. 9, 10, 12)। মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে যে টাকা কিশনদেব পোদ্দার
ব্রিটিশ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন, তার উৎস হল হাকিম বেগ, তার নিয়োগকর্তা। এবং এই
জন্যেই হয়ত কিশনদেব পোদ্দারএর মৃত্যুর পর হাকিম বেগ কাশিমবাজার কুঠিকে তার কর্মচারীর
দেওয়া ১ লক্ষ টাকার(মুল) বকেয়ার হিসেবের ওপর সুদের হাতচিটা (interest note) শোধ করতে নির্দেশ দ্যান। কাশিমবাজার কাউন্সিল হাকম
বেগকে ১৭৫৪ সালের ৩১ মে সেই অর্থ শোধ করে দ্যায়(Fact. Records, Ka.simbazar, vol. -12, Consults.
4 May 17 53; 31 May 1754)।
No comments:
Post a Comment