পাটনায় উমিচাঁদের
সোরা উৎপাদন এবং টাঁকশালে নিয়ন্ত্রণ এবং আফিম ব্যবসায় একচেটিয়া পকড় সম্ভব হয়েছিল
দেশের শাসকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ফলেই। আলিবর্দিকে নানান মন মাতানো উপহার
দিয়ে তিনি দরবারে তার ঘনিষ্ঠ প্রভাব তৈরি করতে পেরেছিলেন(Hill, Bengal in
1756-57, vol.
II, pp. 63-64)। আলিবর্দির নাতি সিরাজের ওপরেও তার প্রভূত প্রভাব ছিল। পলাশী
চক্রান্তে তার বিপজ্জনক ভূমিকার জন্যে তিনি বাংলার ইতিহাসে খলনায়ক হয়ে আছেন ঠিকই, কিন্তু
তিনি জ্ঞান, বাজারের ওঠাপড়া এবং ব্যবসায়িক দক্ষতার জোরেই নিজেকে বাংলার প্রতিষ্ঠিত
ব্যবসায়ী হিসেবে তৈরি করেছিলেন। তার ঘনিষ্ঠ ইওরোপিয়, ওরমের বয়ানে বলতে পারি, Among tlre
Gentoo merchants established in Calcutta, was one·named
Omichund, a man of great sagacity and understanding, which
he had employed for forty years with unceasing
diligence to increase his fortune ... he was become the
most opulent inhabitant of the colony. The extent of his habitation,
divided into various departments; the number of his
servants continually employed in various occupations, and
a retinue of armed men in constant pay, resembled more the
state of a prince than the coridition of a merchant(Orme, Military
Transactions, vol.II, Sec. I, pp. p0-51)।
উমিচাঁদ যে
সম্পদশালী ব্যবসায়ী ছিলেন এ বিষয়ে আজ আর কোন বিতর্ক চলতে পারে না। তিনি কোম্পানির
ঘাটতি পড়া পুঁজির এক তৃতীয়াংশ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা কোন রকম অগ্রিম জামানত ছাড়াই
বিনিয়োগ করতে পারতেন। ১৭৫০ সালে তার গদিতে কোম্পানির ধার ছিল ১৬ লক্ষ টাকারও বেশি(BPC, vol. 23, f.
186, 1 July 1750)। ১৭৫৬ সালে সিরাজের কলকাতা আক্রমনের সময় তার তিজোরিতে পাওয়া
যায় ৪ লক্ষ টাকা নগদ এবং অন্যান্য দামি রত্ন্রারাজি(Orme, Military
Transactions, vol. II, Sec. I, p.78)। তার ভাই পাটনাস্থিত দীপচাঁদের
বাতসরিক রোজগার যদি সে যুগের ১ লক্ষ টাকা হয়, তাহলে উমিচাঁদের বাৎসরিক রোজগারের
পরিমান আন্দাজও করা যায় না(BPC,
vol. 17, f. 372vo, 1 Dec. 1744)। সে সপময়ের কলকাতার সব থেকে বড় এবং সুন্দর হর্ম্যের
অধিকাংশের এবং অন্যান্য বিষয় সম্পত্তির মালিক ছিলেন উমিচাঁদ। উমিচাঁদের চাপরাশি আর
সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা ছিল ৩০০(Orme, Military Transactions,, vol.
II, Sec. I, pp. 60, 128)। ইচ্ছাপত্রে তিনি পারিবারিক সদস্যদের ১ লক্ষ ৬০ হাজার
টাকা বিতরণ করে বাকি অংশ নানকজীর উদ্দেশ্যে দেবোত্তর করে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে
ইংলন্ডে ম্যাগডালেন হাউস এবং ফন্ডলিং হাসপাতালে সে যুগে ৩০ হাজার টাকা দান করার
পরেও তার এস্টেটের মূল্যমান দাঁড়ায় ৪২ লক্ষ টাকা!
No comments:
Post a Comment