১৭৫৩ সালেও কোম্পানি টাঁকশালের অধিকার পাওয়ার ইচ্ছে ছাড়ে নি। সে বছর কাশিমবাজার থেকে উইলিয়াম ওয়াটস লিখলেন, কলকাতায় একটা টাঁকশাল could not be effected with the Nabob as it would be overset by Jagatseat ... as he is a great gafoer by being the sole purchaser of all Bullion imported(Ibid., vol. 5, f. 399, 12 Feb. 1753; Beng. Letters Recd., vol. 22, ff. 384-85, 8 Feb. 1753)। কোম্পানি ১৭৫৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার আলিনগর চুক্তিতে কলকাতায় টাঁকশাল তৈরির অধিকার অর্জন করে। কিন্তু ১৭৫৭র জুনে পলাশীতে জয়ের পরে সে বাংলাতেই প্রভুত্ব স্থাপন করে ফেললেও শেঠেরা কোম্পানির মুদ্রা ছাপানোর উদ্দেশ্য পূরণের মুল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ১৭৫৯ সালের ডিসেম্বরে কোর্ট অব ডায়রেক্টর্সকে লেখা বেঙ্গল জেনারেলের চিঠিতে উল্লিখত হয়েছে কলকাতায় সিক্কা ছাপানোর বিরুদ্ধে শেঠেদের কুঠি আড় হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, they will not fail of thro:wing every obstacle in our way to deprecate the value of our money in the country, notwithstanding its weight and standard is in every respect as good as the siccas of Murshidabad so that a loss of Batta will always arise on our money, let our influence• at the Durbar be ever so great(NAI, Public Letters to Court , s. no. 6, f. 25•, para. 60, Bengal General Letter to the Court of Directors, 29• Dec. 1759)। যদিও এর পরে পরেই ঘটনাক্রমের রং রূপ দ্রুত বদলাতে থাকে শেঠেরা ভাগ্য হত হয়ে ঢালের দিকে গড়িয়ে যেতে থাকে আর ততদ্রুতই কোম্পানি বাংলার মসনদে ক্ষমতা দখল করতে থাকে।
দামি ধাতু বিক্রি
ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি বাংলার বাণিজ্যের জন্যে যে সম্পদ নিয়ে আসত, সেই সব দামি ধাতু যদি কোম্পানিগুলি বাংলার খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারত, তাহলে তাদের সম্পদের অভাব দেখা যেত না। কিন্তু টাঁকশাল ব্যবসায় জগতশেঠের পরিবারের প্রায় একচেটিয়া পকড় থাকায় কোম্পানিগুলির আমদানি করা দামি ধাতু আর মশলা জগতশেঠকেই অর্পণ করতে হত। দাদনি বণিকেরাও তাদের পণ্যের বিনিময়ে কোম্পানির আমদানিকৃত দামি ধাতু নিতে অস্বীকার করত এবং ব্যতিক্রম না হলে তারা দামি ধাতুতে পণ্য বিনিময় করোট না(C & B. Abstr., vol. 5, f. 6. 9, para. 14, 4 Feb. 1746; f. 80, para. 66, 30 Nov. 1746; BPC, vol. 24, f. 49, 31 Jan. 1751.। তবে কোম্পানির কাগজপত্র থেকে পরিষ্কার, মাঝে মধ্যেই দাদনি বণিক এবং শেঠেদের গদি দামি ধাতু গ্রহণ করত)। ১৭৪৬ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দাদনই বণিকদের বকেয়া অর্থ দামি ধাতুতে শোধের প্রস্তাব দিলেও দাদনি বণিকদের যুক্তি ছিল, Rupees would pass at the aurungs [and] that they could no ways turn the Bullion into Rupees but by selling it to Juggutseat's House who they were well assured would not buy it of them (Beng. Letters Recd., vol. 21, ff. 49-50, para. 66, 30 Nov. 1746)। ফলে কোম্পানি আনীত দামি ধাতু আর মশলা জগতশেঠের তাদের তৈরি করা বাটার বিনিময়ে, তাদের গদিতে জমা দেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল না।
সে সময়ে বাংলা প্রধান, হেজেস আর ফিকের হিসেবে ১৭১৮ সালে ২০ সিক্কা ওজনের ইংলিশ স্ট্যান্ডার্ড রূপোর বিনিময়ে ২১৮.৭৫ সিক্কা রুপি পাওয়া যেত, এবং ২৪০ সিক্কা ওজনের প্রেক্ষিতে স্রফ এবং ব্যবসায়ীদের থেকে ২১০ঃ৭ঃ৯ সিক্কা টাকা পেত ৫% অতিরিক্ত আবগারি শুল্কের বিনিময়ে, সাধারণত ২৪০ ওজনের সিক্কার বিনিময়ে জগতশেঠ কোম্পানিকে দিত ২০৩ টাকা(C & B. Abstr., vol. 2, f. 175, para. 62, 6 Dec. 1718; vol. 4, f. 454, para. 46, 13 Feb. 1744)। ১৭৪৩ সালের সেপ্টেম্বরে কাশিমবাজার কুঠি পরিদর্শনে এসে ফতেহচাঁদ শেঠ ব্রিটিশদের বলে যান, তার উপস্থিতিতেই নবাব ২৪০ সিক্কা ওজনের ফরাসী রূপোর দাম নির্ধারণ করেন ২০৫ সিক্কা, এবং তিনি ফতেহচাঁদকে নির্দেশ দিয়ে বলেন ব্রিটিশ রূপোরও যদি এই ধরণের পরীক্ষা পাও করার যোগ্যতা থাকে তারাও একই ধরণের বিনিময় মূল্য পেতে পারে। কলকাতা কাউন্সিল কাশিমবাজার কুঠিকে এই বিনিময় হারই স্বীকার করতে নির্দেশ দ্যায় কারণ তাদেরে কাছে যেসব দামি ধাতু অলস অবস্থায়(১২৫ চেস্ট) পড়ে আছে এবং সেগুলিকে ব্যবহার করা গেলে তার শুধু যে ঋণ থেকে মুক্তি পাবেন তাই নয়, তারা বিপুল সুদ দেওয়ার চাপ থেকেও ছাড়ান পাবে(BPC, vol. 16, ff. 272vo-273vo, 19 Sept. 1743)।
No comments:
Post a Comment