চুল্লিতে হাওয়া দেওয়া(সাপ্লাই অব দ্য ব্লাস্ট)
চুল্লিতে হাওয়া দেওয়ার জন্য পা দিয়ে চালানো একটি যন্ত্র তৈরি
করেছেন আদিবাসীরা। এটির মান ভাট্টি। ডায়ামিটারে ২৮০ মিমি এবং উচ্চতা ১০০ মিমি।
হাওয়া দেওয়ায় যন্ত্রটি(বেলো বা ভাট্টি) কাঠের দুটি বাঁখারি গোল করে তাতে হরিন বা
বুনো মহিষের শুকনো চামড়া দিয়ে ঘেরা। এই হাওয়া দেওয়ার যন্ত্রটির মাথায় একটি ১০০
মিমির ফুটো রয়েছে, যার ভেতরটি চামড়ার চাদরে মোড়া। এই চাদরটির কাজ হল মাত্র এক দিকে
হাওয়া চালানোর প্রবেশ পথ তৈরি করে দেওয়া। এই দুটি বেলোর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে
আগের বর্ণিত ৫ থেকে ১০ মিলিমিটারের অন্তর্বর্তী ব্যসওয়ালা এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ
দুটি বাঁশের টুয়ার(ফার্নেসে হাওয়া দেওয়ার যন্ত্র)। এই বেলোগুলি স্তরীভুত মোটা
পাথরের ওপরে দৃঢ়ভাবে বসানো, যাতে এগুলিকে সহজে সরানো না যায়। স্কিম্যাটিক ডায়াগ্রাম
৩(প্রবন্ধে ৬য়ে)য়ে দেখানো হয়েছে একজন যন্ত্রবিদ কিভাবে বেলোগুলি চালনা করছেন। মাত্র
একজন মানুষ সেই দুটি বেলোর ওপরে দাঁড়িয়ে একের পর একটিকে নীচের দিকে চাপ দিয়ে
সেগুলি দিয়ে চুল্লিয়ে হাওয়া প্রবেশ করাচ্ছেন। বেলোর ওপরের অংশটি ওপরের দিকে ওঠার
প্রযুক্তিটি হল, ওপরের অংশটিকে ওপরের দিকে লাগানো একটি সবুজ বাঁশের সঙ্গে চামড়ার
সুতো দিয়ে বেঁধে রাখা। বেলোর নীচের দিকে যাওয়ার প্রযুতিটি হল, সেই বাঁশের অন্য
প্রান্তটি একটু দূরে, ভূমির সঙ্গে দৃঢ় ভাবে গেঁথে রাখা, যাতে এটি বেলোয় পায়ের
চাপের চলনের সঙ্গে সঙ্গে বাঁশের স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতার ধর্ম মেনে বেঁকে যায়
আবার পায়ের চাপ ছেড়ে দিলে আগের অবস্থানে ফিরে আসে। স্কিম্যাটিক ডায়াগ্রাম ৪(প্রবন্ধে
৭য়ে)এ পুরো কর্মকাণ্ডটি দেখানো হয়েছে। যে মানুষটি বেলোয় কাজ করেন তিনি একটি বাঁশ
ধরে নিজের ভারসাম্য রক্ষা করেন। সাধারণতঃ ভাট্টি চালনা করেন লোহার পরিবারের
মহিলারা।
চুল্লির লোহার আকরিক স্থানীয় লোহা ডিপজ়িট লোহার গানো(Lohar Gano) থেকে সংগৃহীত হয়। খুবই নরম(সফট), টুকটুকে লাল রঙএর(চেরি
রেড)আকরিকগুলিবেছে বেছে হাতে করে বাঁশের টুকরির মধ্যে সংগৃহীত হয়। লোহা আকরিকের চুর
সংগ্রহ করতে যাওয়া, সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে একটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ ঘটনা। মেয়েরা
নানান ধরণের আচার পালন করেন, গান করেন যাতে লোহাচুর যারা সংগ্রহ যারা করতে যাচ্ছেন,
তাঁরা যেন সফল হন। স ড যোশী, হিস্ট্রি অব মেটাল ফউন্ডিং অন দ্য সাবকনটিনেন্ট সিন্স
এন্সিয়েন্ট টাইম পুস্তকে(রাঁচি, ১৯৭০) এই আচারগুলির বিশদ বিবরণ দিয়েছেন।
কাঠকয়লা সংররিত হয় স্থানীয় গাছের ডালকে খোলা যায়গায় জড়ো
করে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে। গাছগুলি পুড়ে ঝামা হয়ে গেলে, কয়লাগুলি বেছে নিয়ে ধুয়ে
নিয়ে কাঠকয়লা তৈরি হয়। তবে বর্জ্যের ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য কোনও অনুঘটকের(ফ্লাক্স)
ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায় নি। নিচে চারকোল আর বর্জ্যের গবেষনাগারের পরীক্ষার সমীক্ষা(শতাংশে)
কাঠকয়লা
জলীয়
পদার্থ ৯.০
ছাই ২৯.৯
ভি
এম ১৩.৭
ফিক্সড
কার্বন ৪৭.৮
বর্জ্য বিশ্লেষণ
SiO2 ১৫.৪
Fe2O3 ৩৩.০
Fe ৬৪.৪
C ৫.৫
No comments:
Post a Comment